পোস্টটি পড়া হয়েছে 2 বার

বাচ্চাদেরকে মারামারির শিক্ষা না দেই, সামাজিক বানানোর চেষ্টা করি

কোনো কোনো অভিভাবককে দেখেছি মেহমান আসলে বা পরিচিত কারোর সাথে তাদের বাচ্চার ইন্টারঅ্যাকশনের ক্ষেত্রে বলে থাকেন:

– “বাবা, আংকেলকে একটু পিট্টি দিয়ে দাও তো!”
– “ভাইয়াটাকে একটু ধমক দাও তো!”
– “একটু চোখ রাঙিয়ে দেখাও তো!”

ইনশাআল্লাহ, আমার বাচ্চাকে কখনো মজার ছলেও এই জিনিস শেখাব না। মারামারি ও নেতিবাচক বহু আইটেম চারিপাশে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ আছে। স্বেচ্ছায় চাই না কিছু শেখাতে। অনিচ্ছায় যা কিছু শিখবে সেটাকে চেষ্টা থাকবে শুধরে দেয়ার।

গত সপ্তাহে একটা ইনডোর প্লেগ্রাউন্ডে নিয়ে গিয়েছিলাম আমাদের ১৫ মাস বয়সী ছেলে মুহাম্মাদকে। চাচ্ছিলাম অন্যান্য বাবুদের সাথে ওর ইন্টারঅ্যাকশন হোক। একা একা খেলছিল, পাশে থাকা ওর চেয়ে বয়সে বড় এক বাচ্চা মেয়েকে বললাম “তোমরা একসাথে টাওয়ার বানাও তো!”

কিছু বোঝার আগেই বাচ্চা মেয়েরা এসে বাবুর মুখে একটা খামচি দিল। আল্লাহ বাঁচিয়েছে যে ওর চোখে তেমন কোনো আঘাত লাগে নি। এরকম পরিস্থিতির সাথে ও পরিচিত না। কান্না না করলেও চোখ ছলছল করছিল। ব্যথাও পেয়েছিল। বললাম “আপুটা বুঝতে পারে নি, কিচ্ছু হয় নি!”

বাচ্চা মেয়েটাকে বললাম “ওকে আদর করে দাও!”

আদর করতে আসার আগেই ওর গার্ডিয়ান করে সরিয়ে নিল, যেন আবার আঘাত না করে।

একই দিনে আরেকটা ছেলে বাবুর পাশে গিয়ে তার খেলনার আইটেম নিয়ে খেলতে গিয়েছে। অমনি একটা মার! সাথে সাথে সরিয়ে আনলাম। আরেকটা বাচ্চাও মারতে উদ্যত হয়েছিল।
একই দিনে ৩টা বিষয় কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা? নাকি আস্তে আস্তে আমাদের বাচ্চাদের মনস্তাত্ত্বিক জায়গায় পরিবর্তন এসে গেছে? মোবাইল ফোনের আসক্তি বা অন্য কোনো কারণে বাচ্চারা কি আগের চেয়ে বেশি এগ্রেসিভ হয়ে যাচ্ছে?

বাসায় ফেরার পরেও আর আমরা ওকে মারা বা খামচি দেয়ার কথা সেভাবে মনে করায় দেই নি। ঐদিন পর থেকে খেয়াল করলাম ও নিজেও আমাদেরকে খামচি দিচ্ছে, থাপ্পড়ের মত দিচ্ছে। কিন্তু আমরা এগুলোকে ইগনোর করে যাচ্ছি। ওকে বুঝতে দিচ্ছি না যে এটা আলাদা টাইপ কিছু। কারণ দেখেছি কোনো কিছু করতে নিষেধ করলেই সেটা বাচ্চারা বেশি করে। খেয়াল রাখব যেন আস্তে আস্তে এই খামচি বা মার দেয়া বিষয়টা ভুলে যায়।

ভুলেও আমার দেখা অন্য অভিভাবকের মত আহ্লাদ করে বলব না ইনশাআল্লাহ “বাবা একটু পিট্টি দিয়ে দাও তো!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *