পোস্টটি পড়া হয়েছে 37,960 বার
শবে মেরাজের আমল। শবে মেরাজের নামাজ, শবে মেরাজের রোজা, শবে মেরাজ পালন করা বিদআত

শবে মেরাজ উদযাপনঃ সুন্নাহ নাকি বিদআত?

ইসরা বা মেরাজ নবীজির (সা) জীবনে ঘটা এক অবিষ্মরণীয় ও ঐতিহাসিক ঘটনা। এ রাতে নবীজি (সা) উর্ধ্বজগতে পরিভ্রমণ করেছিলেন। আমরা এই ঘটনাটিকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। পাশাপাশি এই রাতের বিভিন্ন ঘটনাবলী থেকে শিক্ষা গ্রহন করে নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি। একজন মুমিনের জীবনের শবে মেরাজের দাবী এগুলোই।

কিন্তু বর্তমান সময়ের বাস্তবতা বেশ ভিন্ন। শবে মেরাজ উপলক্ষে এখন অনেক মানুষ বিশেষ রাত ও দিন উদযাপন করেন। মনগড়া বিভিন্ন আমল ও রেওয়াজ রসম আবিষ্কার করেছেন অনেকেই। বই-পুস্তক, পত্রিকা-সাময়িকী, ইউটিউবের ভিডিও সর্বত্রই মনগড়া ও ভিত্তিহীন নানা বক্তব্যে সয়লাব। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এইসব প্রচলিত রেওয়াজ-রসমের বিপরীতে কিছু বললেই এক শ্রেণীর মানুষ তেড়ে আসেন। চিরচেনা সেই সংলাপ তাদের কন্ঠে শোনা যায়ঃ “বাপ দাদার আমল থেকে যা জাইনা আইছি তা কি সব ভুল? আজকালকার হুজুররা সব কিছুরেই খালি কয় বিদআত-বিদআত!”

পোস্টের সারমর্ম

আলেমদের বক্তব্য থেকে সংকলিত এই পোস্টের মূল বক্তব্য হলোঃ

ইসরা বা মেরাজের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ফরজ। মেরাজের শিক্ষার উপর জীবন পরিচালিত করা অতিব জরুরি। হাদীস শরীফ থেকে বছরের কোনো একটি রাতকে নিশ্চিত ভাবে শবে মেরাজ হিসাবে চিহ্নিত করা হয় নি। শবে মেরাজ কবে হয়েছিল এ ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের নিকট থেকে ১৬টিরও অধিক মত পাওয়া যায়। তন্মধ্যে ২৭ রজবও রয়েছে। কোনো সহীহ হাদীসে ২৭ রজবকে মেরাজের রাত হিসাবে উল্লেখ করা হয় নি। রাসূলের (সা) জিন্দেগীতে প্রতি বছর এই রাতকে মেরাজের রাত হিসাবে বিশেষ ইবাদতের মাধ্যমে উদযাপনের প্রমাণ নাই। একে কেন্দ্র করে রোজা রাখারও ভিত্তি নাই।

পোস্টে আলেমদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছেঃ বছর বছর একটি রাতকে “শবে মেরাজ” হিসাবে উদযাপন করা বিদআত। মেরাজের ঘটনাকে কিন্তু বিদআত বলা হচ্ছে না। বরং মেরাজের ঘটনাকে বিশ্বাস করা ফরজ, এতে সন্দেহ পোষণ করলে ঈমান থাকবে না। বিদআত বলা হচ্ছে বর্তমানে প্রচলিত এর উদযাপনকে। যার কোনো ভিত্তি কুরআন-হাদীসে নাই।

প্রেরণা

শবে মেরাজ সম্পর্কে প্রচলিত ভুলগুলো সম্পর্কে আমাদের পরিচালিত মুসলিমস ডে অ্যাপে পোস্ট করার পর অনেকেই নিজ নিজ ভুল শুধরে নিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আর কিছু মানুষ অ্যাপের রিভিউতে 1 star দিয়ে বলেছেন আমাদের আক্বীদা সঠিক নয়, আমরা মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করছি। তাদেরকে বিনয়ের সাথে আমাদের ভুল ধরিয়ে দেয়ার আবেদন করলেও তাদের থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি। তারা কোন বিশুদ্ধ হাদীসের থেকে শবে মেরাজের আমলগুলো পেয়েছেন সেগুলো জানতে চেয়েও কোনো উত্তর পাই নি। কতটা কনফিডেন্টলি মানুষ ভুলের উপর অটল থাকতে পারেন তাদেরকে না দেখলে বিশ্বাস করা সম্ভব না। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে হেদায়েত দান করুন। আমীন।

অ্যাপের লেখাগুলোকে আরেকটু বিস্তারিত এখানে বলার চেষ্টা করেছি। যেন সত্য সন্ধানী ভাই-বোনেরা এখান থেকে সত্যের দিশা পান। বিনা দ্বিধায় আমার লেখাগুলো বিশ্বাস করতে বলছি না। লেখার শেষে থাকা রেফারেন্সগুলো দেখুন। আলেমদের সাথে কথা বলুন। তাদের থেকে রেফারেন্স জানুন। কনভিন্সড হয়ে এরপর আমল করুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহজ ভাবে সুন্নাহ অনুসরণের তাওফিক দান করুন। আমীন।

ডিসক্লেইমার

ডিসক্লেইমারঃ আমি ইসলামের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোনো আলেম নই। বছর দশেক সময় মাদরাসায় পড়ার সুযোগ হয়েছিল মাত্র। শবে মেরাজ সম্পর্কিত এই পোস্টের বক্তব্যগুলো আমার নয়। বরং বাংলাদেশের হক্কানী আলেমদের থেকে প্রাপ্ত। আমি কেবল কথাগুলোকে একত্রে সংকলন করেছি। পোস্টের শেষে রেফারেন্সের লিংকগুলো যুক্ত করেছি। যার বড় একটা অংশ জুড়ে রয়েছে উচ্চতর ইসলামিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্দাওয়া আল ইসলামিয়া’র বহুল প্রচারিত মাসিক আলকাউসার পত্রিকার লিংক। যা মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব হুজুরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত।

দেশের জেনারেল শিক্ষিতদের বড় একটা অংশের মাঝে এই বিষয় খুব কমন। তা হলোঃ সমাজে ইসলামের নামে প্রচলিত কোনো ভুল ধারনা বা বিদআতের বিরুদ্ধে বললেই তারা এই ট্যাগগুলো সেঁটে দেন। যথাঃ “ওহাবী”, “লা মাযহাবী”, “সালাফী”, “আহলে হাদীস”, “ইহুদী নাসারাদের দালাল”, “নবীর শত্রু” ইত্যাদি। আমার এই পোস্টের কমেন্টেও এই কথাগুলো বলা হবে সেটাও জানি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে হানাফী মাজহাব অনুসরণ করি। মারকাযুদ্দাওয়া আল ইসলামিয়া এই প্রতিষ্ঠানটি হানাফী মাজহাবের আলেমদের দ্বারা পরিচালিত একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। আমি তাদেরই বক্তব্য তুলে ধরেছি। তাই পোস্টের কমেন্টে গালাগালি করার আগে একটু পড়াশোনা করে আসার অনুরোধ রইলো।

শবে মেরাজ কবে? শবে মেরাজ কত তারিখে?

হাদীসের বিশুদ্ধ বর্ণনা থেকে মেরাজ সংঘটিত হওয়ার সময়কাল সম্পর্কে এরকম ধারনা পাওয়া যায় যে, এটি নবীজির (সা) হিজরতের এক থেকে দেড় বছর পূর্বে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু কোন মাসের কোন তারিখে মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল তা সহীহ কোনো হাদীস দ্বারা নিশ্চিত ভাবে জানা যায় না। তাই এক কথায় জিজ্ঞাসা করলে বলতে হবেঃ মেরাজ হিজরতের এক-দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল এবং এটির মাস ও তারিখ আমাদের কাছে অজানা। মেরাজ কোন তারিখে সংঘটিত হয়েছিল সেটা জানা আমাদের জন্য জরুরি নয়। তাই সাহাবীগণ সেই তারিখটি সংরক্ষণ করেন নি।

শবে বরাতের তারিখ যেমন আমাদের সবার জানা। সহীহ হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত। সহীহ হাদীস থেকে শবে বরাতের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে জানতে পারি। রমজান মাসের শেষ দশকের যে কোনো বিজোড় রাত্রিতে শবে ক্বদর। এই তথ্যগুলো বিশুদ্ধ হাদীস থেকে প্রমাণিত। পক্ষান্তরে শবে মেরাজের তারিখ সন্দেহাতীত ভাবে হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

শবে মেরাজ কবে সংঘটিত হয়েছিল এটা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে নানা মত পাওয়া যায়। এ সংক্রান্ত মতের সংখ্যা ১৬টিরও অধিক। কেউ বলেছেন রজব মাসে, কেউ বলেছেন রমজান মাসে, কেউ বলেছেন জিলহজ্জ মাসে। কোনো মসের পক্ষেই গ্রহনযোগ্য ও সুনিশ্চিত প্রমাণ নাই। এগুলোর সবই ঐতিহাসিকদের গবেষণা মাত্র।

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) তাঁর লিখিত বুখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ “ফাতহুল বারী” কিতাবের মেরাজ অধ্যায়ে বলেছেনঃ

মেরাজ কবে সংঘটিত হয়েছিল এটা নিয়ে দশটিরও অধিক মত রয়েছে।

হাফেজ ইবনে কাসীর (রহ) তাঁর বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থ “আল বিদয়া ওয়ান নিহায়া”তে বলেছেনঃ

২৭ রজব রাত্রিকে শবে মেরাজ বলার কোনো গ্রহনযোগ্য ভিত্তি হাদীসে নেই।

তাই মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল এটি আমরা বিশ্বাস করব। মেরাজের শিক্ষা আমাদের জীবনে পালন করব। কিন্তু মেরাজ কবে সংঘটিত হয়েছিল সেই তারিখ নিয়ে নিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্ত বা বিশ্বাসে স্থির হব না। নিশ্চিত ভাবে বলব না যে অমুক তারিখই শবে মেরাজ।

শবে মেরাজের নামাজ কত রাকাত?

নবীজি (সা) বা সাহাবীগণ প্রতি বছর নির্দিষ্ট একটি রাতে শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোনো নামাজ পড়েছেন এমন কোনো বর্ণনা হাদীসে পাওয়া যায় না। সাহাবীদের পরবর্তী যুগে তাবেয়ীগণ, তাবে-তাবেয়ীন, চার মাযহাবের ইমামগণ কেউই বছরের একটি নির্দিষ্ট রাতে শবে মেরাজের নিয়তে নামাজ পড়েছেন বলে কোনো বিশুদ্ধ সূত্রে জানা যায় না। তাই শবে মেরাজ হিসাবে কোনো বিশেষ নামাজ পড়া হলে তাকে সুন্নাহসম্মত বলার সুযোগ নাই।

তাই স্পষ্ট ভাষায় বলবো, রাসূলের (সা) সুন্নাহ হিসাবে শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে কোনো বিশেষ নামাজ নাই।

শবে মেরাজের রোজা কবে রাখব?

নামাজের মত রোজার ক্ষেত্রেও একই কথা। নবীজি (সা) ও সাহাবীগণ জীবনে কখনো “শবে মেরাজ” উপলক্ষে বিশেষ রোজা রেখেছেন এমন বর্ণনা বিশুদ্ধ সূত্রে হাদীসে পাওয়া যায় না।

অর্থাৎ শবে মেরাজের উদ্দেশ্যে কোনো বিশেষ রোজা নাই।

রজব ও শা’বান মাসে নবীজি (সা) বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন। সে নিয়তে সারা রজব মাসের যে কোনো দিনই আপনি রোজা রাখতে পারেন। প্রতি হিজরি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বীজের রোজা রাখতে পারেন। প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতে পারেন। এগুলো সুন্নাহ সম্মত আমল। নবীজি (সা) জীবনভর এই আমলগুলো করেছেন। এগুলোর সপক্ষে অসংখ্য সহীহ হাদীস আছে। তাই আসুন এই আমলগুলো সাধ্যমত নিয়মিত করার চেষ্টা করি।

যারা শবে মেরাজের রোজা রাখার জন্য এতটা উদগ্রীব তারা নিজেকে প্রশ্ন করুন। সারা জীবনে নবীজির (সা) এই সুন্নাহগুলো অনুসরণ করে কতদিন রোজা রেখেছেন? আইয়ামে বীজ ও সোম-বৃহস্পতিবারের রোজা কয়টি রেখেছেন? কত কষ্ট করে শবে মেরাজের রোজা রাখার জন্য নানান মনগড়া যুক্তি ও গবেষণা দাঁড় করাচ্ছেন। কিন্তু আইয়ামে বীজ ও সোম-বৃহস্পতিবারের রোজার সুন্নাহসম্মত আমলগুলো করছেন তো? আইয়ামে বীজের চেয়েও শবে মেরাজের রোজা কী কারণে আপনার কাছে অধিক প্রিয়?

নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহকে অধিক ভয় করেন। নিশ্চয়ই আপনি নামাজ-রোজা করার ব্যাপারে অন্যদের চেয়ে অধিক অগ্রগামী। তাই তো শবে মেরাজ উপলক্ষে নামাজ রোজা আদায় করতে চাচ্ছেন। নামাজ-রোজা আদায় করার কাজটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার ও আপনার তাকওয়ার পরিচায়ক। তবে ভাই, সেটা আল্লাহর নবীর (সা) তরিকায় হওয়া জরুরি। নবীজি (সা) যেভাবে করতে বলেছেন সেভাবে করা জরুরি। তাই একই রোজা আপনি শবে মেরাজের কথা চিন্তা না করে রজব মাসের নফল রোজা হিসাবে রাখুন। নবীজি (সা) রজব মাসে বেশি বেশি রোজা রাখতেন সেই নিয়তে রাখুন। তাহলে একটি সুন্নাহ আদায় হলো। সেই একই দিনের রোজা যদি “শবে মেরাজ” উপলক্ষে রাখেন তাহলে সেটা যে বিদআত হবে এটা বলাই বাহুল্য। একই দিনের আমল, শুধু নিয়তের গলদের কারণে গুনাহে পরিণত হতে পারে।

শবে মেরাজের আমল কী কী?

উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছে শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোনো আমল বা যিকির-আযকার নাই। শবে মেরাজের তারিখটিই যেখানে নিশ্চিত ভাবে জানা যায় না। সেখানে বিশেষ কোনো আমলের সুযোগ থাকে না সেটা এমনিতেই বুঝা যায়।

নবীজি (সা), সাহাবীগণ, খোলাফায়ে রাশেদীন, তাবেয়ী-তাবে তাবেয়ীগণ কেউই কোনো বিশেষ রাতকে শবে মেরাজ হিসাবে নির্দিষ্ট করেন নি। শবে মেরাজকে উদ্দেশ্য করে কোনো বিশেষ ফজিলতের আশায় কোনো বিশেষ আমল বা যিকির আযকারও করেন নি।

শবে মেরাজের আমল বিষয়ে কিছু কুযুক্তি (একান্ত ব্যক্তিগত মত। চাইলে স্কিপ করতে পারেন)

আমাদের সমাজে শবে মেরাজের রাতকে বিশেষ ভাবে উদযাপন করার ক্ষেত্রে মনগড়া বেশ কিছু যুক্তি (!) দাঁড় করানো হয়। বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার মাধ্যমে ২৭ রজবের রাতে বিশেষ আমল করার নানাবিধ কল্পিত ফজিলত কিছু লোক পেশ করে থাকেন। ব্যাপারটা যেন এমন যে, সুন্নাহসম্মত আমলগুলো সব করা শেষ। এখন যেই আমলগুলো নবীজি (সা) করেন নি, সাহাবীগণের জীবনেও যেই আমলগুলো ছিল না। আমরা গবেষণা করে যুক্তি দিয়ে আমাদের উর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত এই আমলগুলো করব। সারা বছর নবীজি (সা) তাহাজ্জুদ পড়তেন। প্রায় সারা বছর সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। প্রতি হিজরি ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ তিনি রোজা রাখতেন। এগুলোর জন্য আমাদের যতটা না আবেগ। তার চেয়ে বেশি আবেগ হলো বিদআতের অনুসরণে। সমাজে প্রচলিত এরকম কুযুক্তিগুলোর কয়েকটি নিচে তুলে ধরছি।

  1. যেই মেরাজের রাতে নামাজ ফরজ হলো। সেই মেরাজের রাতে নামাজ পড়বো না? এই মেরাজের রাতে নামাজ পড়ার জন্য আমার দলিল দরকার নাই। (২৭ রজব রাতেই যে মেরাজ হয়েছে এবং নামাজ ফরজ হয়েছে সেটি নিশ্চিত হলেন কিভাবে?)
  2. আল্লাহর রাসূল (সা) শবে মেরাজ পালন করেন নাই বুঝলাম। পালন করতে তো নিষেধও করেন নাই। তাহলে পালন করলে সমস্যা কী? (কোন রাতে শবে মেরাজ হয়েছে সেটা তো ভাই আপনি নিশ্চিত ভাবে জানেন না। পালন করবেন কিভাবে?)
  3. শবে মেরাজে নবীজি (সা) রোজা রাখেন নাই। রোজা রাখতে তো নিষেধও করেন নাই। (শবে মেরাজ কবে তাই তো ভাই নিশ্চিত না, রোজা কবে রাখবেন? ইসলাম সম্পর্কে নবীজি (সা) এর চেয়ে বেশি আবেগ দেখাতে যাওয়া কি ঠিক হবে?)
  4. অমুক আলেম, অমুক বুজুর্গ অমুক কিতাবে বলেছেন এই আমল করতে। তারা কি না জেনে বলেছেন? (কোনো আলেম বা বুজুর্গ ব্যক্তি ভুলের উর্ধ্বে নন। মানবিক ভুলের স্বীকার হওয়া অসম্ভব নয়। আপনি ঐ কিতাবগুলোর বর্ণনা বর্তমান আলেমদের মাধ্যমে বা নিজেই ঘাটাঘাটি করে হাদীস থেকে বের করার চেষ্টা করেন। কোনো আলেম তো নিজে হাদীস রচনা করেন না। ঐ কিতাবে কোন হাদীস গ্রন্থ থেকে হাদীস নেয়া হয়েছে সেটি খুঁজে বের করে দেখুন ঐ হাদীসটি সহীহ কিনা। এই কাজটি পূর্ববর্তী মুহাদ্দীসগণ করে গিয়েছেন। তারাই এই রায় দিয়েছেন যে, শবে মেরাজ সম্পর্কিত কোনো বিশুদ্ধ হাদীস নাই।)
  5. বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসতেছি শবে মেরাজ পালন হচ্ছে। আর এখন আসছে এটাকে বিদআত বলতে! (ভাই, বাপ-দাদার আমল থেকে প্রচলিত সকল কিছুই সঠিক হওয়ার দলিল নয়। “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করো”, “জ্ঞান অর্জনের জন্য চীন দেশে যাও”, “খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নত”, “স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত”, “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ” ইত্যাদি কথাগুলোর কোনোটিই হাদীস নয়। কিন্তু এগুলো বাপদাদার আমল থেকে হাদীস হিসাবে প্রচলিত)
  6. আহলে হাদীস, সালাফি, ওহাবিরা সব কিছুকেই বিদআত বলে! (ভাই, রেফারেন্স অংশে প্রায় সকল লিংকই হানাফী আলেমদের বক্তব্যের। সকল বিদআতকেই জোর করে হানাফী মাজহাবের অংশ বানিয়ে আমাদের অপদস্ত করবেন না। কোনো একটা বিদআতকে বিদআত বলার জন্য আহলে হাদীস হওয়া জরুরি না।)
  7. নামাজ-রোজা তো ভাল কাজ। শবে মেরাজ উপলক্ষে না হয় করলামই। এতে গুনাহ হবে কেন? (কারণ শবে মেরাজ উপলক্ষে নামাজ পড়াকে আপনি বিশেষ ফজিলত ও সওয়াবের মনে করছেন। কোন বিষয়টা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ এটা ওহির জ্ঞানের উপর নির্ভর করে। নবীজির (সা) উপর ওহি নাজিল হত। তার ভিত্তিতে তিনি সাহাবীদেরকে জানাতেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি এমন একটি আমলকে বিশেষ ফজিলতের বলছেন, যেটা আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহির মাধ্যমে আসে নি। বরং আপনি বা পূর্ববর্তী কোনো ব্যক্তির বক্তব্য। তাই নিয়তের কারণে আপনার আমলটি গুনাহে পরিণত হতে পারে।)

মেরাজ বিষয়ে আমাদের করণীয়

  1. নবীজি (সা) মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাসে গিয়েছিলেন। কুরআনের ভাষায় একে ইসরা বলা হয়। এই ঘটনার উপর বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুমিনের উপর ফরজ। এটি অস্বীকার করলে বা এ ব্যাপারে সন্দেহ করা কুফর। কারণ এটি কুরআন মাজীদ দ্বারা প্রমাণিত। তাই ইসরা’র ঘটনার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতেই হবে, কোনো সন্দেহ-সংশয় পোষণ করা যাবে না।
  2. নবীজি (সা) ইসরার ঘটনার পর বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে সশরীরে উর্ধ্বজগতে পরিভ্রমণ করেছিলেন। এই অংশটিকে মিরাজ বলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা জরুরি। এই ঘটনাকে অস্বীকার করা ইলহাদ ও যিন্দীকী তথা ধর্মদ্রোহীতা।
  3. কুরআন ও হাদীসের বিশুদ্ধ বর্ণনাগুলো থেকে মেরাজের ঘটনাগুলো জানা। মেরাজ সম্পর্কে অনেক অসতর্ক বক্তা বিভিন্ন অপ্রমাণিত বিষয়ে আলোচনা করে থাকেন। সেসকল আলোচনা বর্জন করা। হক্কানী আলেমদের থেকে মেরাজ বিষয়ে জানার চেষ্টা করা।
  4. মেরাজের রাতে নবীজি (সা) জান্নাত-জাহান্নাম দেখেছেন। অনেক পাপের শাস্তি সম্পর্কে তিনি এই রাত্রিতে অবগত হয়েছেন এবং আমাদের জানিয়ে গিয়েছেন। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে সেই সকল পাপগুলো চিহ্নিত করে আমাদের জীবন থেকে সেগুলোকে ঝেড়ে ফেলা।
  5. হক্কানী আলেমদের থেকে প্রাপ্ত মেরাজের বিভিন্ন শিক্ষাগুলোকে নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করা।
  6. মেরাজ সম্পর্কে সমাজে প্রচলিত ভুল ধারনা ও বিভিন্ন বিদআত থেকে নিজে বেঁচে থাকা। পরিবার-পরিজন ও অপর মুমিন ভাইদেরকেও এ ব্যাপারে সচেতন করা।

শবে মেরাজের আমল হিসাবে সমাজে প্রচলিত কিছু ভিত্তিহীন কাজ

  1. প্র‌তিবছর এ‌টিকে একবার করে উদযাপন বা স্মরণ করা।
  2. এ রাতের আমলকে শবে কদর বা শবে বরাতের মতো ম‌হিমা‌ন্বিত ও ফযীলতপূর্ণ মনে করা।
  3. এ তা‌রিখে দিনের বেলা রোযা রাখা।
  4. এ রাতে ইবাদত বন্দেগী অন্য রাতের চেয়ে বে‌শি করা।
  5. এ রাতে বিশেষ নিয়মে, বিশেষ নামায আছে মনে করা।
  6. এ রাতে মস‌জিদে জমায়েত হওয়া।
  7. এ রাতে মসজিদে আলোক-সজ্জা করা।
  8. এ দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা।
  9. এ রা‌ত উপলক্ষে মস‌জিদে ওয়াজ-মাহ‌ফিল, মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা।
  10. মি‌ষ্টি জিলাপী বিতরণের আয়োজন করা।
  11. ভালো খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করা, ইত্যাদি।

নবী‌জির (সা) কোনো সবল কিংবা দুর্বল হাদীস দ্বারা এর কোনো‌ একটি প্রমা‌ণিত নয়।

ফযীলতের কয়েক‌টি রাত বাদ দিলে বছরের অন্য সব রা‌ত্রির মতোই এক‌টি রাত এ‌টি। শবে মেরাজ এক‌টি ঐ‌তিহা‌সিক রজনী, শরঈ রজনী নয়। শরঈ রজনী সেসব রাত, যেগুলোকে ইসলাম ম‌হিমান্বিত ও বিশেষ ফযীলতের রা‌ত্রি বলে ঘোষণা করেছে। যেমনঃ কদরের রা‌ত্রি। আর ঐ‌তিহা‌সিক রা‌ত্রি হলো, যাতে ঐ‌তিহা‌সিক কোনো ঘটনা ঘটেছে। যেমনঃ বদর যুদ্ধের দিন, মক্কা বিজয়ের দিন। ২৭ রজব রা ইবাদত আর অন্য রাতের ইবাদতের সওয়াব সমান।

শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকী উসসানী সাহেব বলেছেনঃ

বিশেষ পদ্ধ‌তিতে এ‌ রাত উদযাপনের কোনো ভি‌ত্তি নেই। এ রা‌ত ইবাদতের ইহতেমাম করা বিদআত। এ‌টি য‌দি ফযীলতের রাত হতো, তা হলে নবী‌জি আমাদের সেটা অব‌হিত করতেন। অথচ পঞ্চম নববী সনে তি‌নি মেরাজ গমন করেছেন। এরপর তি‌নি আরও ১৮ বছর বেঁচে ছিলেন। কিন্তু তি‌নি এক‌টি বারের জন্য তা পালন করেন‌ নি।

এরপর সাহাবায়ে কেরাম আরও একশ’ বছর বেঁচে ছিলেন। তাঁদের মধ্যেও এমন কিছু পালন করতে দেখা যায়‌নি। বরং কোনো কোনো অ‌তি উৎসাহী লোক এ তা‌রিখে রোযা রেখেছে বলে সংবাদ পেয়ে হযরত উমর (রা‌ঃ) খ‌ুব ক্রোধা‌ন্বিত হয়েছেন। এবং ‌লোকদেরকে প্রকাশ্যে পানাহার করতে বাধ্য করেছেন। (ইসলাহী খুতুবাত, প্রথম খন্ড)

কাজেই এ রাতে স্বাভা‌বিক জীবনযাপন ক‌রি। অ‌তি উৎসাহে গুনাহ কামাই না-ক‌রি। আল্লাহ আমাদেরকে সুন্নত আঁকড়ে ধরার এবং বিদআত প‌রিহার করার তাওফীক দিন। আমীন।

রেফারেন্স

শবে মেরাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকগুলো থেকে ভিডিওগুলো দেখতে পারেন। এছাড়াও বেশ কিছু প্রবন্ধের লিংক রয়েছে। সেগুলো অধ্যয়ন করলেও মেরাজ সম্পর্কে ভাল ধারনা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। নিচের লিংকগুলোর মধ্যে শায়খ আহমাদুল্লাহ ব্যতীত বাকি সকল লিংকের আলেমগণই হানাফী ফিকহ অনুসরণ করেন এবং বাংলাদেশে হানাফী আলেমদের মাঝে তারা সুপরিচিত। শায়খ আহমাদুল্লাহ সাহেব হানাফী ফিকহ অনুসরণ করেন কিনা সে ব্যাপারে আমার নিশ্চিত জ্ঞান নাই।

  1. শবে মেরাজ ও তার আমল : ইসলামে এর কোন ভিত্তি আছে কি? : মাওলানা তাহমীদুল মাওলা (ভিডিও)
  2. মেরাজ প্রসঙ্গ : যে ভিত্তিহীন বর্ণনাগুলো আপনি শুনেছেন : মাওলানা আবু হাসসান রাইয়ান (ভিডিও)
  3. রাসুলুল্লাহর (সা.) মিরাজ ও মক্কার কাফেরদের তিনটি প্রশ্ন : মাওলানা মারুফ হোসাইন (ভিডিও)
  4. শবে মেরাজে বিশেষ কোনো নামাজ রোজা আছে কিনা? – শায়খ আহমাদুল্লাহ (ভিডিও)
  5. শবে মেরাজ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা – শায়খ আহমাদুল্লাহ (ভিডিও)
  6. ২৭ রজব কি শবে মেরাজ? – মাওলানা তাহমীদুল মাওলা (শর্ট ভিডিও)
  7. কুরআন-হাদীসে ইসরা ও মিরাজ : বর্ণনা ও শিক্ষা  (মাসিক আলকাউসার)
  8. সহীহ হাদীসের আলোকে শবে মেরাজের ঘটনা (মাসিক আলকাউসার)
  9. শবে মেরাজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকিদা  (মাসিক আলকাউসার)
  10. শবে মেরাজের রজনী উদযাপন একটি কুসংস্কার ও বিদআত (মাসিক আলকাউসার)
  11. মিরাজ বিষয়ক আলোচনা : কিছু অসতর্কতা (মাসিক আলকাউসার)
  12. শবে মেরাজ সম্পর্কে ভিত্তিহীন একটি কথা (মাসিক আলকাউসার)
  13. শবে মেরাজ একটি ঐতিহাসিক রজনীঃ শরঈ রজনী নয় – মাওলানা সাইফুদ্দীন গাজী

পুনশ্চ

এটি আমার কোনো মৌলিক লেখা নয়। লেখার কোনো তথ্যে কোনো ভুল পরিলক্ষিত হলে অনুগ্রহ করে সঠিক তথ্য ও তার দলিল সহ শেয়ার করুন। আমি ইনশাআল্লাহ শুধরে নেয়ার চেষ্টা করব। অনেকেই হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ) এর লিখা গুনিয়াতুত তলেবীনের রেফারেন্স দিবেন হয়ত। কাইন্ডলি উক্ত কিতাবে উল্লেখিত হাদীসটি কোন হাদীসের কিতাবে আছে সেটির সূত্র উল্লেখ করুন। গুনিয়াতুত তলেবীনে উল্লেখিত হাদীস ও তার সনদের ব্যাপারে আলেমদের অবজারভেশন রয়েছে। উপরের লেখার কোনো বিষয়ে আপনার ভিন্নমত থাকলে সেটিকে শালীন ভাবে শেয়ার করার অনুরোধ করছি।

15 thoughts on “শবে মেরাজ উদযাপনঃ সুন্নাহ নাকি বিদআত?

  1. তাফসীরে রুহুল বাইয়ান ৫ম জিলদ পৃষ্ঠা ১০৩।
    মা ছাবাতা বিস সুন্নাহ ৭৩ পৃষ্ঠা
    আরও অনেক কিতাবে ২৭ শে রজবকে মেরাজুন্নবী(সা.)হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
    কোনো বিষয়ে একাদিক হাদিস থাকলে সহীহ হাদিস গ্রহন যোগ্য হয়।
    যে বিষয়ে আপনাদের কোনো ধারণা নাই তা কিভাবে বিদাত হিসেবে উপস্থাপন করবেন।
    আগে শিখুন তারপর ফতোয়া দিবেন।
    অযথা ইবনে তাইমিয়ার ডাইরি উপস্থাপন করবেন না।
    পাড়লে কোরআন হাদিস থেকে কিছু বলেন।

    1. রুহুল বাইয়ান সহ যে সকল কিতাবে ২৭ রজবকে শবে মেরাজ বলা হয়েছে সেখানে এই কথার ভিত্তি হিসাবে কী উল্লেখ করা হয়েছে? কুরআনের তাফসীর হয় কুরআনের অপর কোনো আয়াত দ্বারা। অথবা নবীজির (সা) কোনো হাদীস দ্বারা। এছাড়াও সাহাবী-একরামের আমল দ্বারাও হতে পারে। ২৭ রজবকে যেখানে মেরাজুন্নবী বলা হয়েছে সেখানে এই কথার ভিত্তি কি কুরআন নাকি হাদীস নাকি সাহাবীদের বক্তব্য?
      আপনি বলেছেন কোনো বিষয়ে একাধিক হাদীস থাকলে সহীহ হাদীস গ্রহনযোগ্য হয়। আচ্ছা, তাহলে কাইন্ডলি ২৭ রজব শবে মেরাজের সমর্থনে সহীহ হাদীসটি উল্লেখ করুন। আশা করি “তাফসীরে রুহুল বাইয়ান”কে “সহীহ হাদীস” হিসাবে উপস্থাপন করবেন না। এতটুকু জ্ঞান আছে আশা করি।

      আমি “হাসান” এই বিষয়টিকে বিদআত হিসাবে বলি নি। বাংলাদেশের হানাফী মাজহাবের প্রখ্যাত আলেমগণই বলেছেন প্রতি বছর বছর ২৭ রজবকে শবে মেরাজ উল্লেখ করে বিশেষ ইবাদত করা ও বিশেষ ভাবে উদযাপন করা বিদআত।

      হযরত, আমাকে যে আহলে হাদীস-ওহাবী-লা মাযহাবী ট্যাগ দেয়া হবে সেটা পোস্টের শুরুতেই বলেছি। আপনি সরাসরি ট্যাগগুলো ব্যবহার না করে ঘুরিয়ে ইবনে তাইমিয়া (রহ) এর ডায়রীর কথা বললেন। ভাই, বাংলা ভাষায়ই তো পোস্টটা লিখিত। পোস্টের শেষের লিংকগুলোর সবগুলোই পাক্কা হানাফী আলেমদের (একজন ব্যতীত)। এখানে ইবনে তাইমিয়ার (রহ) বক্তব্য কোথায় পেলেন? পোস্টে ২জন হাফেজে হাদীসের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। একজন ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) অপর জন ইবনে কাসীর (রহ)। আশা করি তাদেরকে আপনি চিনেন। না চিনে থাকলে একটু পড়াশোনা করে দেখতে পারেন।

      শেষের কথাটি সুন্দর বলেছেন। পারলে কুরআন হাদীস থেকে কিছু বলেন। এই একই আহ্বান আপনার প্রতিও। ভাই, পারলে কুরআন হাদীস থেকে ২৭ রজব হওয়ার ব্যাপারে দলিল দিন। আমার পোস্ট আপডেট করে সেটি উল্লেখ করে দিব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদেরকে সহজ জিনিস সহজে বুঝার তাওফিক দান করুন। আমীন।

  2. একদম সঠিক কথা বলেছেন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত ভাবে। সত্যকে তুলে ধরে যদি খারাপ বলে কেউ তাতে কিছুই যায় আসে না। এটা সবাই বলতে বা করতে পারে না।

  3. আমার জানামতে “গুনিয়াতুত তলিবীন” কিতাবটি আব্দুল কাদির জিলানীর (রহ.)। অথচ আপনি ইমাম গাজালির(রহ.) দিকে সম্পৃক্ত করেছেন। এটা অতি দ্রুত সংশোধন করে নেওয়ার অনুরোধ করছি। অন্যথায় বাতিল পন্থিরা এটাকে আপনার ইলমি দুর্বলতা মনে করে আপনার সম্পূর্ণ উত্তম লেখাটিকে ভিত্তিহীন করার সুযোগ খুঁজতে পারে। পরিশেষে আপনার মূল্যবান হেদায়েতের জন্য জাযাকাল্লাহু খাইরান। বারাকাল্লাহু ফি ইলমিক।

  4. আলহামদুলিল্লাহ, খুব ভালো লাগলো প্রিয় ভাই। সবসময় চেষ্টা করি “মুসলিমস ডে” ফলো করার জন্য। এমনকি অনেক উপকৃতও হয়েছি। আল্লাহ অবশ্যই আপনাদের উত্তম প্রতিদান দিবেন।

    1. জ্বি ভাই, খুবই সুন্দর কথা বলেছেন। আমার পোস্টটি ফালতু, আর আপনার কমেন্টটি খুব সুন্দর। কোনো তথ্য-উপাত্ত ও অগ্র-পশ্চাত বিবেচনা ব্যতিরেকে যা মনে চাইলো বলে দিলেন। এজন্য কোনো পড়াশোনাও দরকার নাই, বিবেক-বুদ্ধিরও প্রয়োজন নাই। ধন্যবাদ।

  5. এতসব রেফারেন্স দিয়েও কোন ফায়দা নেই। এক শ্রেনীর মানুষেরা উল্টোটাই বুজে যাবে ,তাহারা সমাজে বিদাআত প্রতিষ্ঠিত করবেই,এই ভবিষৎবাণী তো ছিল।এজন্যই আল্লাহ বলছিল ,উহারা অন্দ,বোবা,বধির।ছুম্মুন, বুকমুন উমিয়্যুন ফাহুম লা ইউরজিউন।

  6. অসাধারণ, অনেক দুয়া অন্তর থেকে আপনাদের জন্য ভাই, বারাকাল্লাহু ফি ইলমিকা। জাযাকাল্লাহ খাইরান ইসলামি এপস গুলা আমাদের দেয়ার জন্য, দেশের আমজনতার মাযহাবকে সম্মান করে ঐক্য বজায় রাখার জন্য।

  7. তিন পাতা লেখা পড়া করে বলো যে, মিরাজ রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে হয়নি, কয়টা হাদিস তুমি জানো যে বলে দিলা কোন হাদিসে নাই, কয়টা দলিল লাগবে তোমার দলিল দিয়ে কবর দেয়া হবে তোমাদের।

    1. জ্বি জনাব, দারুন কথা বলেছেন। দারুন আপনার ব্যবহার ও ভদ্রতা।
      সম্ভবত লেখাটা কষ্ট করে পড়ার সময় পাননি। বা পড়লেও লেখার মর্ম আপনাকে বুঝাতে পারি নি।

      লেখাটির মাঝে স্পষ্ট করেই উল্লেখ করেছি আমি ইসলাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই। লেখাটি মূলত সংকলন করা হয়েছে। কোথা থেকে সংকলন করা হয়েছে সেগুলোর লিংকও দেয়া আছে। আপনি তো অনেক বড় তালেবর বুঝা যাচ্ছে। মারকাযুদদাওয়া আল ইসলামিয়াতে গিয়ে তাদের ভুলগুলো ভেঙে দিয়ে আসেন।

  8. সুমন ভাইকে ধন্যবাদ পোস্ট পড়ার কারনে। কিন্তু তিনি যে কোরআন হাদিস থেকে পোস্ট চাচ্ছে এতে বোঝা যাচ্ছে তিনি কুরআনের আয়াত নাম্বার ও সহি হাদিসের নাম্বার চাচ্ছে। ভাইয়ের চাওয়াটা সঠিক মনে করি তার উদ্দেশ্য আমি জানিনা । তবে (নেই, করেননি, বলেননি, বুঝাননি, দেননি, হয়নি, ইত্যাদি) এগুলোর দলিল দুই ভাবে হয়, প্রথমত হাদিসেই উল্লেখ থাকবে (নেই, দেননি, ইত্যাদি) যেমন কখনো ঈদের সালাতে আযান দেননি হাদিসেই উল্লেখ আছে। দ্বিতীয়তঃ কোনো হাদিসেই বর্ণনা না পাওয়ার অর্থই হচ্ছে তিনি (করেননি,বলেননি, বুঝাননি ইত্যাদি) যেমন জানাযা নামাজের আযান কোন হাদিসেই বর্ণনা পাওয়া যায় না এতেই আলিমগণ বলেন যে জানাজার নামাজে আযান দেননি ।আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আমাকে আপনাকে এবং সকলকে সঠিক বোঝার তৌফিক দান করুন । আমিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *