Post updated on 26th July, 2023 at 07:19 am
শীয়া সম্প্রদায় নিয়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা করার সময় একদল লোক পাওয়া যায়। যারা কিনা বুঝে বা না বুঝে বলে থাকেনঃ “আমি শীয়া-সুন্নী বুঝি না। আমি বুঝি ইসলাম। শীয়া-সুন্নীর পার্থক্যের কথা কুরআন হাদীসের কোথায় লিখা আছে? ইসলামে শীয়া-সুন্নী বলে কিছু নাই। সব মুসলিম ভাই ভাই। মুসলিমদের উচিত নিজেদের মধ্যকার ঐক্য বজায় রাখা… … …”। এই কথাগুলো যে কত বড় ভুল, অবান্তর, বাস্তবতা বিবর্জিত এবং একই সাথে ইসলামী আক্বিদার সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক; তার প্রমাণ “শীয়া মতবাদঃ বিবাদ বনাম ভ্রষ্টতা” নামক বইয়ের লাইনে লাইনে পাওয়া যাবে।
বইটি লিখেছেন মিশরের বিশিষ্ট ইসলাম প্রচারক, ইতিহাসবিদ ও চিকিৎসক ড. রাগেব আস-সারজানী। ১৯৬৪ সালে জন্মগ্রহণ করা এই দাঈ ১৯৮৮ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদ থেকে ইউরোসার্জারি বিষয়ে অনার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি কুরআন হিফজ করেন। মাস্টার্স ও ডক্টরেট করেন যথাক্রমে ১৯৯২ ও ১৯৯৮ সালে। লেখকের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫০ এর উপরে।
আরবি ভাষায় লিখিত “আশশীয়া নিদাল আল দালাল” নামক কিতাবটির বাংলা অনুবাদই হচ্ছে “শীয়া মতবাদঃ বিবাদ বনাম ভ্রষ্টতা”। বইটি অনুবাদ করেছেন মতিঝিলের জামিয়া দীনিয়া শামসুল উলুম মাদরাসা (পীরজঙ্গি মাদরাসা) এর সিনিয়র উস্তাদ মাওলানা ওমর ফারুক।
মোটা দাগে পুরো বইটিকে আমরা কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে পারি। বইয়ের বিষয়বস্তুগুলো হচ্ছেঃ
- শীয়া ধর্মের আক্বিদা ও বিশ্বাদ
- শীয়া ধর্মের উৎপত্তির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
- শীয়া সম্প্রদায় কর্তৃক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের ইতিহাস
- ইহুদীদের সাথে শীয়াদের সখ্যতা এবং ষড়যন্ত্র
- বর্তমান সময়ে শীয়াদের কর্মকান্ড
- শীয়া ধর্মের অনুসারীদের ব্যাপারে মুসলিম তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অবস্থান
আজকের বই রিভিউতে আমরা শুধুমাত্র শীয়া ধর্মের আক্বিদা ও বিশ্বাসগুলোর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করার চেষ্টা করব। যেন মুসলিম সমাজ তাদের আক্বিদাগুলোকে চিনতে পারেন। পাশাপাশি নিজে এবং পরিবারকে সচেতন করতে পারেন।
শীয়া ধর্মের বিভিন্ন দলের ভ্রান্ত আক্বিদা ও বিশ্বাস
যারা শীয়া-সুন্নীর বিভেদকে অস্বীকার করেন। যারা বলতে চান যে কুরআন-হাদীসের কোথাও শীয়াদের কথা উল্লেখ নাই। তাই সবাই ভাই ভাই হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকুক। তাদের প্রতি অনুবাদক প্রথমেই প্রশ্ন করেছেন হিন্দুধর্ম, জৈনধর্ম বা পরবর্তীতে সৃষ্টি হওয়া নতুন কোনো ধর্মের উল্লেখ যদি কুরআন হাদীসে না থেকে থাকে তাহলে কি সেগুলো সত্য হয়ে যাবে? কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করার পর তাদের বিশ্বাস ও আক্বিদা যদি কুরআন-হাদীসের বিপরীত হয়। তাহলে তারা যতই নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করুক না কেন, তারা মুসলিম থাকবে না।
পুরো বইয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শীয়া সম্প্রদায়ের ভ্রান্ত আক্বিদা ও বিশ্বাসগুলো। এমন কতগুলো বিশ্বাসের বিষে তারা নিমজ্জিত যা কোনো মুসলিমের বিশ্বাস হতে পারে না। যে বিশ্বাসগুলো সরাসরি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। শীয়াদের যত বিশ্বাস আছে তার মধ্যে কিছু আছে সব শীয়া দলের কমন বিশ্বাস। আবার কিছু বিশ্বাস আছে নির্দিষ্ট দলের বিশ্বাস। লেখক ও অনুবাদক শীয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দলের বিভিন্ন বিশ্বাস সম্পর্কে যা লিখেছেন তার থেকে কয়েকটি নিচে তুলে ধরা হলো।
-
- শীয়াদের কালিমা মুসলিমদের শাহাদাত থেকে ভিন্ন। তাদের কালিমা হলোঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ আলীউন ওয়ালিউল্লাহি ওয়াসিয়্যু রাসূলুল্লাহি ওয়া খালিফাতুহু বিলা ফাসলিন
- শীয়াগণ তাদের আযানে ‘আশহাদু আন্না আলীউন ওয়ালিউল্লাহ ও হুজ্জাতুল্লাহ এবং হাইয়া আলা খাইরিল আমাল’ যুক্ত করেছে
- শীয়াদের প্রত্যেক সালাতের শেষে বলতে হয়ঃ হে আল্লাহ! আবু বকর, ওমর, উসমান, মুআবিয়া, আয়েশা, হাফসা, হিন্দ এবং উম্মুল হাকামের উপর অভিশম্পাত করুন (নাউযুবিল্লাহ)
- নিজেদের বিশ্বাস গোপন রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের বিশ্বাসকে ছড়িয়ে দেয়া ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মিথ্যা বলা, প্রতারণা বা প্রবঞ্চনা ইত্যাদি মতৎ কাজ বলে বিবেচিত হবে
- তাকিয়া (ভান ধরা) শীয়া ধর্মের নয় দশমাংশ। তাকিয়া হচ্ছে এমন একটি আক্বিদা যার দ্বারা তারা বুঝিয়ে থাকে যে, শীয়াদের জন্য প্রতিকুল পরিবেশে তারা এমন কথা বলতে থাকবে যা তাদের আক্বিদা বিরোধী। অর্থাৎ তারা তাদের প্রকৃত ধর্ম বিশ্বাসকে গোপন রেখে বিপরীত বিশ্বাসের অনুরূপ বক্তব্য দিতে পারবে। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে পরিস্থিতি তাদের অনুকুলে চলে আসলে তখন তারা আবার তাদের আক্বিদা বিশ্বাস নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলবে। এই দ্বিমুখী নীতি বা ভান ধরে থাকার আক্বিদার নাম তাকিয়া। যাকে শীয়া ধর্মের দশ ভাগের নয় ভাগ হিসাবে তাদের ধর্মগুরুরা বলে থাকেন বা বইপুস্তকে লিখে থাকেন। তাদের এই ভান ধরে থাকার আমলের জন্য অসংখ্য মুসলিম শীয়াদের বিষবাষ্প দ্বারা প্রভাবিত
- কোনো সাক্ষী ছাড়াই শীয়া ধর্মে বিয়ে পড়ানো বৈধ
- শীয়াদের মতে মুতা বিয়ে বৈধ। এটি হলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাময়িক বিয়ে। যেখানে বিয়ের শর্তেই তার মেয়াদ উল্লেখ থাকে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর বিয়ে কোনো ঘোষণা ছাড়াই তালাক হয়ে যায়। এটি ছিল মূলত জাহেলী যুগের একটি রেওয়াজ। যা ইসলামের প্রাথমিক যুগেও বৈধ ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সহীহ মুসলিমের হাদীসের বক্তব্য অনুযায়ী মক্কা বিজয়ের সময় নবীজি (সা) এর স্পষ্ট হাদীস দ্বারা এটি হারাম করা হয়। কিন্তু শীয়া ধর্মের বিশ্বাস হচ্ছে উক্ত মুতার বিয়ের সওয়াব সালাত ও সাওম থেকেও বেশি। তারা আরো বিশ্বাস করে একবার মুতায় অংশ নিলে সে ব্যক্তি হযরত হুসাইনের (রা) সমান মর্যাদা লাভ করবে। দুইবার মুতায় অংশ নিলে হযরত হাসান (রা) এর সমান মর্যাদা লাভ করবে। তিনবার হলে আলী (রা) এবং চারবার হলে স্বয়ং রাসূল (সা) এর সমান মর্যাদা লাভ করবে। (নাউযুবিল্লাহ)
- হযরত আলী (রা) খলিফা হওয়ার অধিক উপযুক্ত ছিলেন। প্রথম তিন খলিফা আবু বকর, ওমর ও উসমান (রা) হযরত আলীর (রা) থেকে খিলাফত ছিনিয়ে নিয়েছেন।
- ইরানে কোনো সুন্নীদের সন্তানের নাম আবু বকর, ওমর, উসমান বা আয়েশা রাখতে দেয়া হয় না
- শীয়ারা বিশ্বাস করে নবী (সা) গোপনে আলী (রা) কে ৭০ ফুট লম্বা একটি পান্ডুলিপি হস্তান্তর করেছেন। যাতে প্রত্যেকটি হালাল-হারাম এমন কি আঁচড় দেয়ার শাস্তির কথাও বর্ণিত আছে। একে আলীর সহিফা বলা হয়।
- শীয়া ধর্মের অনুসারিরা বিশ্বাস করে যে, মুসলিমদের কাছে যে কুরআন আছে তা অসম্পম্পূর্ণ এবং তাতে বিকৃতি সাধন করা হয়েছে। শীয়াদের কুরআন, মুসলিমদের কুরআনের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বড়। তাদের বিকৃত কুরআনের আয়াতের সংখ্যা ১৭০০০ এর বেশি।
- অযুতে পা ধোয়ার পরিবর্তে মাসেহ করতে হয়
- তিলাওয়াতে সিজদা এবং জানাযার সালাত জন্য অযু কিংবা গোসল ছাড়াই আদায় করা যায়
- শীয়া ইমামদের কবরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় বৈধ
- শীয়াগণ সাহরি খান ভোর পর্যন্ত আর ইফতার করে সূর্যাস্তের অনেক পরে। যখন রাত পুরোপুরি কালো হয়। কুরআনের অপব্যাখ্যা আর হাদীস অস্বীকারের মাধ্যমে তারা এই বিশ্বাস আবিষ্কার করেছে
- আলী (রা) এর কাছে “ইয়া আলী মাদাদ” বলে সাহায্য চাওয়া শিরক নয়।
- শীয়াদের বিশ্বাস হলোঃ নবীজির (সা) মৃত্যুর পরে সর্বোচ্চ ১৩ জন সাহাবী ছাড়া বাকি সবাই মুরতাদ হয়ে ইসলাম থেকে বের হয়ে গিয়েছে। এই কয়েকজন সাহাবী ছাড়া বাকি সকল সাহাবীগণকে শীয়ারা কাফের মনে করে
- আমরা যারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা পোষণ করি। তারা নবী-রাসূলের নাম বলার পর বলে থাকি “আলাইহিস সালাম” সংক্ষেপে (আঃ)। আর সাহাবিগণের নামের শেষে আমরা “রাদিয়াল্লাহু আনহু” সংক্ষেপে (রাঃ) লিখে থাকি। অপর দিকে শীয়া ধর্মের অনুসারীরা পারতপক্ষে সাহাবিদের নামের শেষে (রাঃ) লিখে না, কারণ তারা সাহাবীগণকে কাফের বলে অপবাদ দেয়। আর হযরত আলী, হাসান, হুসাইন (রা) প্রমুখ সাহাবীগণের নামের শেষে “আলাইহিস সালাম” সংক্ষেপে (আঃ) লিখে থাকে। যা আমরা শুধু নবী-রাসূলগণের নামের শেষে লিখে থাকি।
- তাদের জঘন্যতম একটি বিশ্বাস হচ্ছেঃ নবীজির (সা) প্রাণপ্রিয় স্ত্রী হযরত আয়েশা (রা) ও হযরত হাফসা (রা) নবীজিকে (সা) বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছে
- শীয়ারা হযরত আয়েশাকে (রা) বিশ্বাসঘাতক, মুনাফিক মনে করে
- শীয়ারা ১২ জন ইমামের ধারনায় বিশ্বাসে। কুরআনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তারা এই ধারনার প্রবর্তন করেছে। তারা মনে করে ইমামগণ নবীদের মতই আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত। তাদের ১২ জন ইমামকেই তারা নবীজির (সা) সমমর্যাদার অধিকারী মনে করে। তাদের মতে ইমামগণের নিকট নবীদের মত ওহি আসে। ইমামগণের জ্ঞান ও মর্যাদা তাদের কাছে নবীদের চেয়েও বেশি। ইমামগণের ইমামত মেনে নেয়ার জন্যেই নবীদের নবুয়ত দান করা হয়েছে। তারা আরো মনে করে নবীগণের জন্মলাভ হয়েছে ইমামগণের নূর থেকে। ইমামগণ পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষের ঈমান এবং নিফাক সম্পর্কে অবগত। তাদের কাছে কারা জান্নাতে যাবে আর কারা জাহান্নামে যাবে তাদের একটি লিস্ট রয়েছে
- শীয়াদের মধ্যে অনেকগুলো দল উপদল রয়েছে। তাদের একেক দলের বিশ্বাস ও কর্মকান্ডে বৈচিত্রময় শিরক ও বিদআতের ছড়াছড়ি। তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী দল হচ্ছে ইছনা আশারিয়া বা ‘বার ইমামপন্থি’ দল। যারা ১২ জন ইমামের ইমামত বা নেতৃত্বে বিশ্বাস করে। তাদের তালিকার সর্বশেষ ইমাম হলেন মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আসকারী। তার ইমামত বর্তমান সময় পর্যন্ত জারি রাখার জন্য তারা অদ্ভুত এক পদ্ধতি বা বিশ্বাসের আবিষ্কার করেছে। তিনি ছোট শিশু অবস্থাতেই ইরাকের কোনো এক পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করেছেন। সময় হলে তিনি আত্মপ্রকাশ করবেন। ইনার বয়স বর্তমানে ১২০০ বছর। তার আধ্যাত্মিক দিক নির্দেশনায় শীয়াদের বর্তমান নেতারা পরিচালিত। শীয়াদের ইমামরা যেহেতু নিষ্পাপ এবং ওহীপ্রাপ্ত। তাই তাদের অনুসরণ শীয়াদের কাছে ফরজ। আর শীয়া নেতারা যেহেতু ইমামদের নির্দেশনায় পরিচালিত। তাই এই নেতাদের নির্দেশও তাদের কাছে পালন করা ফরজ। তাদের নেতারাও নিষ্পাপ এবং পবিত্র। এভাবেই চলছে ইরানের শীয়া নেতৃত্ব।
সংক্ষিপ্ত পয়েন্ট আকারে শীয়াদের অসংখ্য বিশ্বাসের মধ্য থেকে কিছু বিশ্বাস তুলে ধরা হলো। এই বিশ্বাসগুলো মোটেই ইসলামের বিশ্বাসের সাথে মিলে না। এজন্য শীয়াদেরকে ইসলামের একটি শাখাগত দল বা মাজহাব না বলে স্বতন্ত্র একটি ধর্ম বলা ভাল। যেই ধর্মের মূলে ছিল ইসলাম। কিন্তু সেখান থেকে তারা এমন এমন সব আবিষ্কার এর মধ্যে প্রবেশ করিয়েছে যে এগুলোকে এখন আর ইসলাম বলার সুযোগ নাই। কাদিয়ানিরা যেমন ইসলামের বাহিরের একটি আলাদা ধর্ম। শীয়া সম্প্রদায়ও আলাদা একটি মতবাদ বা ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই কাদিয়ানী ও শিয়া কোনো দলকেই ইসলামের একটি ভিন্ন মাজহাব বা মত বলা যাবে না। বরং তারা ইসলামের বিশ্বাস থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে।
মুহাররম ও আশুরার ফজিলত। করণীয় এবং বর্জনীয় কুসংস্কার সম্পর্কে জানা যাবে এখানে
শীয়াদের মধ্যে অনেক অনেক দল ও উপদল রয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আলেমদের মতে, তাদের মধ্যে শুধু যাইদিয়া দলটিই মুসলিম। সামগ্রিক ভাবে শীয়া যায়দিয়্যার আক্বিদা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদার নিকটবর্তী। অল্প কিছু মতপার্থক্য ছাড়া তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদা বিশ্বাসলই তাদের মধ্যে লালন করেন। তাই যায়দিয়া দলটিকে মুসলিম হিসাবে আখ্যা দিয়ে থাকেন আলেমগণ। এছাড়া শীয়াদের প্রভাবশালী দল ইছনা আশারিয়া বা বারো ইমামপন্থী দল এবং ইসমাঈলিয়্যা নামক উগ্র ভয়ংকর একটি দল সহ অন্যান্য সকল দলের আক্বিদা ইসলাম পরিপন্থি হওয়ায় তারা মুসলিম নয়।
শীয়া মতবাদের উৎপত্তিঃ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
লেখক ড. রাগেব আস-সারজানী আল-হানাফি উক্ত বইয়ে শীয়া মতবাদের উৎপত্তি সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও একদম গোড়া থেকে আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন শীয়াদের উত্থান হয়েছে ইসলামের আবির্ভাবের অন্তত দেড় থেকে দুইশো বছর পরে। ২০০ হিজরির আগে পরে তাদের উর্বর (!) মস্তিষ্কপ্রসূত বিভিন্ন কাল্পনিক ও মনগড়া বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে প্রচার ও প্রসার লাভ করে শীয়া ধর্ম। হিজরি তৃতীয় শতাব্দীর শেষে ও চতুর্থ শতাব্দীর শুরুতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক যুগে শীয়াদের কাছে যারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বা ইমাম। তাদের আক্বিদা ছিল আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আক্বিদার সাথে পুরোপুরি এক। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তারা তাদের বিশ্বাসের মধ্যে মনগড়া বিষয়গুলো প্রবেশ করাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে এই বিশ্বাসগুলো পরিণত হয় ইসলামের আক্বিদার বিপরীতে। শীয়াদের কথিত ১২ জন ইমামের শুরুর দিকে যারা আছেন তারা প্রত্যেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদা পোষণ করতেন। তারা সাহাবীগণকে শ্রদ্ধা করতেন, ভালবাসতেন। তাদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত ভাবে মনে করতেন খলিফা হওয়ার ক্ষেত্রে আলী (রা) ছিলেন অধিক যোগ্য। কিন্তু তারা হযরত আবু বকর, ওমর, উসমানের (রা) খিলাফত অস্বীকার করতেন না। বা তাদের খিলাফতকে অবৈধ মনে করতেন না। অন্যান্য সাহাবীদের মত চার খলিফার প্রত্যেই তারা সম্মান করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে শীয়াগণ তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস লালন করা শুরু করে যে সর্বোচ্চ ১৩ জন সাহাবী ব্যতীত সকল সাহাবীই কাফের। (নাউজুবিল্লাহ)
শীয়াদের কথিত ১২ ইমামদের মধ্যে প্রথম ইমাম হলেন হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা)। তাদের ২য় ও ৩য় ইমাম হচ্ছেন তাঁর দুই পুত্র হযরত হাসান ইবনে আলী ও হুসাইন ইবনে আলী (রা)। ৪র্থ ইমাম হযরত হুসাইনের ছেলে আলী যাইনুল আবেদীন ইবনে হুসাইন। হযরত যাইনুল আবেদীনের দুইজন পুত্রের নাম হচ্ছে মুহাম্মদ আল বাকের ইবনে আলী যাইনুল আবেদীন (৫ম ইমাম) এবং যায়েদ ইবনে আলী যাইনুল আবেদীন।
হযরত যায়েদ ইবনে আলী যাইনুল আবেদীন তাঁর দাদা হযরত হুসাইন (রাঃ) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে উমাইয়া খেলাফতের সময় বিদ্রোহ করেন। ১২২ হিজরিতে তাকে শহীদ করা হয়। তাঁর অনুসারীগণ তাঁর মতবাদের উপর ভিত্তি করে একটি মাযহাবের গোড়াপত্তন করেন। ইতিহাসে এটি “যায়দিয়া” নামে পরিচিত। এ মাযহাবটি শীয়া মতবাদের সাথে সম্পৃক্ত করা হলেও তাঁর অনুসারীরা একটি মাত্র বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদার সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন। তা হলো তারা হযরত আলীকে (রা) তিন খলিফার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিত। এই একটি বিষয় ছাড়া তারা পুরোপুরি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সাথে পুরোপুরি একমত ছিল। শীয়াদের এই একটি দলকেই আলেমগণ মুসলিম হিসাবে ঘোষণা দিয়ে থাকেন। কারণ তাদের মধ্যে ইমান বিধ্বংসী কোনো আক্বিদা-বিশ্বাস পাওয়া যায় না।
হযরত যায়েদ ইবনে আলী যাইনুল আবেদীনের (রহ) কাছে তার ভক্তদের একটি দল এসে হযরত আবু বকর ও ওমর (রা) এর ব্যাপারে জানতে চাইলো। তিনি তাঁদের উপর আল্লাহর রহমত কামনা করে দুআ করেন। কিন্তু উগ্র দলটি হযরত যায়েদের করা উক্ত দুআ ও রহমত কামনাকে প্রত্যাখান করে তাঁর দল থেকে বেরিয়ে যায়। ইতিহাসে তাদেরকে ‘রাফেজাহ’ (রাফেজী অর্থ প্রত্যাখ্যানকারী) বলা হয়েছে। এই রাফেজীদের দল থেকে পরবর্তীতে জন্ম হয় শীয়া ধর্মের সর্ববৃহৎ “ইছনা আশারিয়া” বা “১২ ইমামপন্থী” দলের।
হযরত যায়েদের ভাই হযরত মুহাম্মাদ আল বাকের (রহ) ১১৪ হিজরিতে মারা যান। তাঁর ছেলে ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ও ফকীহ হযরত জাফর সাদেক (রহ) (শীয়াদের ৬ষ্ঠ ইমাম)। তিনি সর্বদাই সহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন ও তৎকালীন আলেমদের আকীদা-বিশ্বাস প্রচার করতেন।
১৩২ হিজরিতে উমাইয়া খিলাফতের পতন ঘটিয়ে আব্বাসী খেলাফতের গোড়াপত্তন ঘটে। এই অভ্যুত্থানের হযরত যায়েদ বিন আলীর দলছুট কিছু গোষ্ঠী সহযোগিতা করে। আব্বাসী খিলাফতের দায়িত্ব নেন আবু জাফর আল মানছুর। কিন্তু আব্বাসী আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্টরা চাচ্ছিল খিলাফতের নেতৃত্বে থাকবে ইসলামের চতুর্থ খলিফা ও রাসূলের (সা) চাচাত ভাই হযরত আলী ইবনে আবু তালেবের (রা) কোনো একজন দৌহিত্র। এই দাবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা পুণরায় আব্বাসী খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে। তখন তারা “তালিবীন” নামে পরিচিত হয়। তালিবীন শব্দটি হযরত আলী ইবনে আবু তালেবের (রা) দিকে সম্পৃক্ত।
শায়খাইনের (হযরত আবু বকর ও ওমর (রা)) খিলাফতের ব্যাপারটি ছাড়া তখন পর্যন্ত তাদের মধ্যে কোনো রকম আক্বিদাগত বা ফিকহী মতবিদোধ তৈরি হয় নি। তারা যায়েদ ইবনে আলী যাইনুল আবেদীনের (রহ) জামায়াত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। শায়খাইনের খিলাফতকে তারা অস্বীকার করত এবং প্রকাশ্যেই তাঁদের উপর অভিসম্পাত করত।
১৪৮ হিজরিতে হযরত জাফর সাদেক ইবনে মুহাম্মদ আল বাকের ইন্তেকাল করেন। তাঁর পুত্র মূসা আল কাযিম (৭ম ইমাম) ইন্তিকাল করেন ১৮৩ হিজরিতে।
আব্বাসী খেলাফত চলতে থাকলো। প্রসিদ্ধ খলিফা মামূন তালিবীনদের বিদ্রোহ বা আন্দোলন দমন করার প্রতিজ্ঞা করলেন। এসময় মূসা আল কাযিমের পুত্র আলী ইবনে মূসা রেজা (৮ম ইমাম) আব্বাসী খিলাফতের বিপরীত নেতৃত্বে আসেন। ফলে আন্দোলন আরো তীব্র হয়। হঠাৎ করেই আলী ইবনে মূসা রেজা ২০৩ হিজরিতে মারা যান। তালিবীনরা এ মৃত্যুর জন্য খলিফা মামূনকে দায়ী করে আরো ব্যাপক বিদ্রোহ শুরু করে।
এরপর বহু বছর অতিক্রম হলো। বিদ্রোহের আগুন নিস্তেজ হয়ে আসলো। তখন পর্যন্তও শীয়া মাযহাব বা শীয়া মতবাদ নামক কোনো স্বতন্ত্র ধর্মীয় মতবাদ ছিল না। তবে ক্ষমতা পেতে ইচ্ছুক কিছু রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল। সে সময় পর্যন্ত তাদের আক্বিদাতে বর্তমান সময়ের মত কুফরি আক্বিদাগুলো ছিল না।
আব্বাসী খেলাফতের বিরুদ্ধে যে বিরোধিতা ছিল তার আওয়াজ সবচেয়ে বেশি ছিল পারস্যের (বর্তমানে ইরান) শহরগুলোতে। সেখানকার মানুষ পারস্য সাম্রাজ্য হারিয়ে ইসলামী শাসনের অন্তর্ভুক্তির কারণে বহুকাল ধরে হতাশায় ভুগছিল। তাই তারা মনেপ্রাণে চাইত ইসলামী শাসন থেকে বের হয়ে গিয়ে নিজেদের হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে। তারা নিজেদেরকে মুসলিমদের চেয়ে উচ্চ বংশীয়, উত্তম জাতি ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের অধিকারী মনে করত। ফলশ্রুতিতে তাদের মাঝে “শাঊবিয়া” নামক একটি দলের সৃষ্টি হলো। এর সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তারা তাদের অতীত শিকড় পারস্যের প্রতি আবেগ, ভালবাসা প্রদর্শন করত। এমন কি অতীতকালে পারসিকদের পূজনীয় আগুনেরও। তারা খেলাফতের বিরোধিতা করলেও একাকী এ আন্দোলনে সফল হওয়ার ক্ষমতা তাদের ছিল না। তাই তারা ঘৃণ্য এক পন্থার আশ্রয় নিল। তারা আব্বাসী খেলাফতের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী “তালিবীন”দের সাথে একত্রিত হয়ে গেল। যে তালিবীনদের দাবী ছিল খিলাফতের নেতৃত্বে থাকবে হযরত আবু তালেব (রা) ও আলী (রা) এর বংশধরদের হাতে। “শাঊবিয়া”দের উদ্দেশ্য ছিল তালিবীনদের সাথে মিশে তাদের মধ্যে বিভিন্ন কুফরি মতবাদ, শিরক, বিদআত ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে নষ্ট করবে। এরপর ইসলামী খিলাফতের পতন ঘটাবে। ফলশ্রুতিতে তালিবীন ও শাঊবিয়াদের একত্রিত আন্দোলনটি যথেষ্ট বেগবান হলো। তাদের সম্মিলিত সংগঠন তালিবীন শুধু রাজনৈতিক নয়, ধর্মীয় সংগঠন হিসাবেও বেশ শক্তিশালী হলো।
শাঊবিয়াদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা তালিবীনদের মাঝে যাবতীয় বিদআত ও ঈমান বিধ্বংসী আকিদা প্রচার-প্রসার করতে লাগলো। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে যা শীয়াদের ইমামতের আক্বিদার সাথে সংশ্লিষ্ট। ১২ জন ইমামের দ্বারা তাদের ইমামতের দাবী সম্পন্ন হয়। কিন্তু ১২ তম ইমামের পরে কী হবে? সেই সমস্যা সমাধানে তারা উদ্ভট এক গল্প প্রচার করা শুরু করে। তা হলো ১২তম ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আসকারী শিশু বয়সে ইরাকের কোনো এক পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করে আছেন। “সময় হলে” তখন তিনি বের হয়ে আসবেন। বর্তমান সময়ের হিসাবে তাদের সেই কথিত ইমামের বয়স ১২০০ বছর। শীয়াদের নিকট তিনিই হবেন শেষ জামানার ইমাম মাহদি। শীয়াদের কেউ কেউ দাবী করে তিনি ১৫ শাবান তথা শবে বরাতের দিন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এজন্য ১৫ শাবান বা শবে বরাতের দিন তাদের কাছে অতি আনন্দের দিন। এই দিনে তাই তারা হালুয়া-রুটি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। (শবে বরাতে ও হালুয়া-রুটির কথাটি বইতে উল্লেখ নাই। এটা আমার পরিচিত একজন মুসলিম থেকে শিয়াতে কনভার্ট হয়ে যাওয়া ব্যক্তির থেকে শোনা)।
তালিবিনদের মাঝে তখন সাহাবীদেরকে কাফের বলে মনে করার বিশ্বাস স্থাপিত হয়। তারা বলে যে নবী (সা) ১২ জন ইমামের অনুসরন করার জন্য অসিয়ত করে গেছেন। কিন্তু সাহাবাগণ উক্ত অসিয়ত জনসাধারনের কাছে প্রচার না করে গোপন রেখেছেন। এজন্য তারা সাহাবীদেরকে কাফের মনে করে।
শাঊবিয়াগণ এরপর পারসিক অগ্নিপূজক শাসনব্যবস্থার আকীদা থেকে ইমামদের মাঝে ‘অবশ্য উত্তরাধিকার বিধান’কে ইসলামী বিধান বলে অন্তর্ভুক্ত করে প্রচার করতে লাগল। তারা বলতে লাগলো হযরত আলী (রা) থেকে নিয়ে পরবর্তী সমস্ত ইমামদের বড় ছেলেই একমাত্র ইমাম হওয়ার উত্তরাধীকার পাবে। তারা পারসিক অগ্নিপূজক শাসনব্যবস্থার আরো একটি বিধান শীয়া ধর্মের মাঝে আকিদা হিসাবে প্রবিষ্ট করালো। তা হচ্ছে শাসকগোষ্ঠীকে তাকদীস বা পবিত্র মনে করার বিধান। অর্থাৎ ইমামগণ নিষ্পাপ ও পবিত্র। তারা ইমামদের বক্তব্য দ্বারা কুরআন হাদীসের হুকুমকে গ্রহন বা বর্জন করা শুরু করল। তাকদীসের ব্যাপারে ইরানী বিপ্লবী নেতা খোমেনী তার আল হুকুমাতুল ইসলামিয়াতে লিখেছেনঃ “আমাদের আকীদাসমূহের মধ্যে অন্যতম আকীদা হচ্ছেঃ ইমামগণের এমন মর্যাদা ও অবস্থানের বিশ্বাস পোষণ করা, যে মর্যাদা ও অবস্থান-পর্যন্ত আল্লাহর আস্থাভাজন কোনো ফেরেশতা কিংবা প্রেরিত নবীও পৌঁছতে পারেন নি”
এ সময়ে তারা অধিকাংশ মুসলিম শহরগুলোকে দারুল কুফর বা কাফেরদের ভূমি বলে নতুন আকিদার আবিষ্কার করে। এতে করে মক্কা, মদিনা, মিশর ও শামের অধিবাসীদেরকে কাফের হিসাবে ঘোষনা করে। আর এগুলো করতে গিয়ে তারা অসংখ্য নিজেদের কথাবার্তাকে রাসূলের (সা) কথা হিসাবে জাল করা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কোনো আলেমকেই তারা গ্রহনযোগ্য মনে করে না। তারা অস্বীকার করে বুখারী, মুসলিম সহ সিহাহ সিত্তার ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীসের কিতাব। তাদের অগ্রহনযোগ্য তালিকায় আছেন ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযি, ইমাম নাসায়ি, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমাদ (রহ) প্রমুখ। হাদীস সংকলনের ইতিহাস বইয়ে শীয়া সম্প্রদায়ের হাদীস জালিয়াতি বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে।
ক্রমে ক্রমে শীয়াদের কর্মকান্ড ও আকিদায় প্রকাশ পেতে থাকলো সীমাহীন শিরক ও বিদআত। হযরত হুসাইনের (রা) শাহাদাতের দিন মুহাররমের ১০ তারিখে তারা যেসকল কার্যকলাপ করে। তা সচেতন মানুষ মাত্রই বুঝবে যে তারা কতটা গোমরাহীর মধ্যে আছে। তৃতীয় শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তাদের একাদশ ইমামের মৃত্যু হয়। সে সময়ে বিদআতী ও ভ্রান্ত আকিদার বৈচিত্রের কারণে সৃষ্টি হয় আরো কিছু শীয়া দল-উপদল। সে সময় থেকেই তাদের আকিদা-বিশ্বাসকে সংকলিত করে বই আকারে প্রকাশ করা হতে থাকে। পারস্য বা ইরানে তাদের মতবাদগুলো ব্যাপক হারে প্রচার-প্রসার হতে থাকে। আর আসেপাশের ইসলামী বিশ্বেও তাদের সেই বিষ বাষ্প ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
হিজরি তৃতীয় শতাব্দীর শেষে এবং চতুর্থ শতাব্দীর শুরুতে শীয়া সম্প্রদায় বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতা লাভ করে।
শীয়াদের একাদশ ইমাম হাসান আল-আসকারীর মৃত্যুর পর শীয়ারা এক পেরেশানীর যুগে প্রবেশ করে। এসময় বিভিন্ন শীয়া দলের সৃষ্টি হতে থাকে। যার মধ্যে ভয়ংকর একটি ভ্রষ্ট দল হচ্ছে ইসলামঈলিয়া সম্প্রদায়। এই দলের গোড়াপত্তন করে মায়মূন আল কাদ্দাহ নামক এক ইহুদী। যে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিত, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে ছিল একজন কট্টর ইহুদী। সে মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ইবনে জাফর সাদেকের ঘনিষ্ট হয়ে তার সাহচর্যও গ্রহন করে। মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ছিলেন নবীজির (সা) আহলে বাইতের সদস্য শীয়াদের ৬ষ্ঠ ইমাম হযরত জাফর সাদেকের নাতি। আর জাফর সাদেক ছিলেন হযরত হুসাইনের (রা) নাতি মুহাম্মদ আল বাকেরের ছেলে।
ইহুদী মায়মূন আল কাদ্দাহ এক অদ্ভুত ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করলো। সে তার ছেলের নাম রাখলো আব্দুলল্লাহ। যা মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈলের ছেলের নামে। মায়মূন মৃত্যুর পূর্বে অসিয়ত করে গিয়েছিল যেন, তার ছেলে আবদুল্লাহ এর সন্তানাদি ও নাতিদের নাম যেন নবীজির (সা) আহলে বাইতের সদস্য মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈলের সন্তানাদি ও নাতিদের নামে হুবহু রাখা হয়। এর পিছনে উদ্দেশ্য ছিল যে, ভবিষ্যতে এক পর্যায়ে গিয়ে এসমস্ত ইহুদীরা দাবী করবে যে তারা আহলে বাইতের সদস্য বা তাদের বংশধারা নবীজির (সা) বংশের সাথে সম্পৃক্ত। আর তারাই তখন নেতৃত্বের দাবী করবে।
মায়মূনের সে আশা পূর্ণ হয়েছিল। সৃষ্টি হয়েছিল ফিরকায়ে ইসমাঈলিয়া। তাদের জঘন্য আকিদাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছেঃ যে ইমাম একসময় শাসক হবে, সে ইমামের মাঝে আল্লাহর সত্ত্বার অন্তর্ভুক্তি ঘটবে। এজন্য তারা তাদের ইমামের খোদা হওয়ার ব্যাপারে আকিদা পোষণ করে থাকে। (নাউযুবিল্লাহ)
তৃতীয় শতাব্দর মাঝামাঝি সময়ে শীয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি বড় দল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। (১) শীয়া ইছনা আশারিয়া (১২ ইমামপন্থি), (২) শীয়া ইসমাঈলিয়া, (৩) শীয়া কারামিতা।
রুস্তম ইবনুল হুসাইন নামক কারামিতা শীয়া ধর্মপ্রচারক ইয়েমেনে গিয়ে সেখানে কারামিতা রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে। এরপর তারা অভ্যুত্থান ঘটায় জাজিরাতুল আরবে। তারা ৩১৭ হিজরিতে হজ্জের সময় মসজিদে হারামে আক্রমন চালায় এবং অবস্থানরত সকল হাজীকে হত্যা করে। কাবা ঘর থেকে হাজরে আসওয়াদ বের করে চূর্ণবিচূর্ণ করার পর তা চুরি করে নিয়ে যায় তাদের রাজ্যে। ৩৩৯ হিজরিতে হাজরে আসওয়াদকে পূণরায় কাবা ঘরে ফিরিয়ে আনা হয়। চতুর্থ শতাব্দীর শেষে কারামিতা সাম্রাজ্যের পতন হয়।
৩১৭ থেকে ৩৬৯ হিজরি পর্যন্ত ইরাকের মসূল নগরী শাসন করে শীয়া ইছনা আশারিয়া সম্প্রদায়। ৩৩৩ হিজরি থেকে ৩৯২ হিজরি পর্যন্ত তাদের ক্ষমতা শামের আলেপ্পো এলাকায় বিস্তৃত হয়। ৩৩৪ হিজরিতে তারা আব্বাসী খিলাফতের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে। যা ৪৪৭ হিজরি পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
৫৬৭ হিজরি পর্যন্ত শীয়া ইসমাঈলিয়া সাম্রাজ্য টিকে থাকে। এরপর আবার আস্তে আস্তে ইসলামী জগতে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের শাসন ফিরে আসতে থাকে। ৯২০ হিজরিতে জালদীরান নামক স্থানে সুলতান প্রথম সলীম শীয়া ইছনা আশারিয়াদের সাথে মুখোমুখী হয় এবং তাদেরকে ইরাকের ভূমি থেকে বিতাড়িত করেন। ৯০৭ হিজরি থেকে ১১৪৮ হিজরি এই সময়কালে শীয়া ছাফাবী সাম্রাজ্য ইরানে তাদের শাসন ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে। ১৮৩৫ খৃষ্টাব্দে ইরানে শীয়া ছাফাবীদের পতন হয়।
১৭৭৯ খৃষ্টাব্দ মোতাবেক ১১৯৩ হিজরিতে আগা মুহাম্মাদ কাজার ইরানের সিংহাসনে আরোহন করে। সে ছিল পারস্য বংশদ্ভূত এক শীয়া। ১৯২৯ খৃষ্টাব্দে ১৩৪৩ হিজরিতে ইংরেজদের সহায়তায় রেজা পাহলভি বিদ্রোহ করে নিজেকে ইরানের শাহ বা বাদশাহ ঘোষণা করে। ১৯৪১ খৃষ্টাব্দে ইংরেজদের সাথে তার মতবিরোধের জের ধরে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ও তারই ছেলে মুহাম্মাদ রেজা পাহলভিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে। ১৯৭৯ খৃষ্টাব্দে খোমেনি শীয়া ইছনা আশারিয়া বিপ্লব সংঘটিত করে। খোমেনির নেতৃত্বে শীয়া ইছনা আশারিয়া বিপ্লব ছিল পারস্য অঞ্চলে (ইরানে) নতুন ভাবে এবং নতুন উদ্যমে শীয়া শাসনের পুনরাবৃত্তি।
বইয়ের অন্যান্য আলোচ্য বিষয়
শীয়া মতবাদঃ বিবাদ বনাম ভ্রষ্টতা বইতে লেখক চেষ্টা করেছেন শীয়াদের আকিদাগুলো সংক্ষিপ্ত পরিসরে তুলে ধরতে। পাশাপাশি তাদের জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পদস্খলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও তুলে ধরেছেন। এত বড় রিভিউ লিখার পেছনে আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষরা যেন বইটি না পড়তে পারলেও, রিভিউ থেকে কিছু হলেও তাদের সম্পর্কে ধারনা নিতে পারে। তাদের এই আকিদা ও ইতিহাস থেকে সচেতন পাঠক মাত্রই উপলব্ধি করতে পারবেন তাদের ভয়াবহতা সম্পর্কে। রিভিউ লিখার শুরু করেছিলাম যেই কথা দিয়েঃ শীয়া সুন্নীর ঐক্য গড়ে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব কিনা? আশা করি পাঠক বুঝে নিয়েছেন এটা আসলে সম্ভব নয়। কারণ তাদের সাথে ঐক্য মানে হচ্ছে তাদের মতবাদগুলোকে মেনে নেয়া। তারা সাহাবীদেরকে কাফের বলবে, কুরআনকে বলবে বিকৃত ও অসম্পূর্ণ। কোনো মুসলিম এগুলো মেনে নিতে পারে না। তাই আমাদের সমাজ ও পরিবারকে তাদের বিষবাষ্প থেকে রক্ষা করা জরুরি। বাংলাদেশে কাদিয়ানী এবং শীয়া ধর্মের প্রচার ও প্রসার হচ্ছে দীর্ঘ দিন থেকে। প্রচুর সাধারন শিক্ষিত ও অর্ধ শিক্ষিত লোকদেরকে ভুল বুঝিয়ে তাদের দলে ভিড়াচ্ছে। বহু লোক ইসলামের জ্ঞান না থাকার কারণে তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছে।
লেখক শীয়াদের ইতিহাসের পাশাপাশি বর্তমানে তাদের চলমান কর্মকান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আমাদের দেশের কিছু লোক ইরানকে একটি আদর্শ মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে কল্পনা করে। ইরানের শাসন ব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থা তাদেরকে মুগ্ধ করে। ইরান আর আমেরিকার মেকী দ্বন্দ্বকে তারা ইসলামের পক্ষে একটা বিজয় বিজয় ভাব হিসাবে স্বপ্ন দেখে। বর্তমান শীয়াদের রাজনৈতিক কৌশল, তাদের দখলদারিত্ব এবং সুন্নী মুসলিমদের প্রতি অত্যাচার নির্যাতনের বিস্তর বর্ণনা বইটিতে রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে এ বিষয়ক আন্তর্জাতিক রাজনীতির মারপ্যাচের নানা দিক।
সর্বপরি খুব ছোট একটি বইয়ের মধ্যে চিন্তার অনেক খোরাক রয়েছে। যারা ইসলামকে ভালবাসেন, নিজের জীবনে এর প্র্যাক্টিস করেন এবং নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয় দিয়ে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের বইটি পড়া উচিত। এতে ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারনা পাওয়া যাবে।
বইটি সম্পর্কে কিছু তথ্য
নামঃ শীয়া মতবাদঃ বিবাদ বনাম ভ্রষ্টতা
লেখকঃ ড. রাগেব সারজানী
অনুবাদকঃ মাওলানা ওমর ফারুক
প্রকাশনায়ঃ রাহনুমা প্রকাশনী
প্রথম প্রকাশঃ একুশে বইমেলা ২০২০
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৫৯
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৪০ টাকা
বর্তমানে “শিয়া মতবাদ : ধারণা ও বাস্তবতা” নামে বইটির নতুন অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে রাহনুমা থেকেই। পূর্বের নামের বইটি বাজারে নাই। তাই কিনতে হলে নতুনটি কিনতে হবে।
পুনশ্চ
রিভিউয়ের তথ্যগুলো উক্ত বই থেকে সংগ্রহ করা। এখানে উল্লেখিত তথ্যগুলো ক্রসচেক করে দেখার সুযোগ হয় নি। আমার নিজের থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়া হয় নি। দেয়া হলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে যে ঐ তথ্যটি আমার ব্যক্তিগত। বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন।
পক্ষে-
সরোয়ার হোসেন, প্রভাষক, রাস্ট্রবিজ্ঞান, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজঃ (তার বক্তব্য হুবহু -যখন আপনার পোস্টে আপত্তি তার, জানতে চেয়েছিলাম কোন ডকুমেন্টস)
সরি, এই ধরনের কোন ডকুমেন্টস আমার কাছে নেই। আমি মনের খোরাক মেটাতে যখন যা পায় তাই পড়ি। ইন্টারনেটের সাহায্য নিই। নিজের বিবেক খাটাই। ইতিহাস আর ধর্মীয় কিতাবাদি পাশাপাশি নিয়ে পড়লে বুঝতে একটু সুবিধা হয়। তাকিয়া, আযানের বিকৃতি, রাদি: এর পরিবর্তে আ: এর ব্যবহার এই পয়েন্টগুলো আমি ওদের মধ্যে খুজে পেয়েছি। বাদবাকি অনেকগুলোই শিয়ার সব সেক্ট মানেনা। তাছাড়া শিয়াদের জায়েদি সেক্ট আর সুন্নিদের মধ্যে তেমন কোন তফাৎ ই নেই
স্যারের কথার সাথে আমি প্রায়ই একমত। স্যারের বক্তব্যের সাথে আমার বই রিভিউয়ের সামঞ্জস্য রয়েছে। যেমনঃ আমার পোস্টেই বলা আছে শীয়াদের যেই আকিদাগুলো এখানে উল্লেখ আছে এগুলো বিভিন্ন দলের বিশ্বাসকে একত্রিত করা হয়েছে। সবগুলো বিশ্বাসই সবগুলো দলের মধ্যে নেই। তাদের বিশ্বাসের বৈচিত্রের ফলে ভিন্ন ভিন্ন দলের উদ্ভব। স্যারের উল্লেখিত শীয়া যায়দিয়্যার আক্বিদা যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদার সবচেয়ে নিকটবর্তী সে কথাও আমার লেখায় রয়েছে। এটাও বলা হয়েছে যে শীয়াদের মধ্যে একমাত্র যায়দিয়া শীয়াদেরকেই আলেমগণ মুসলিম বলে থাকেন। এছাড়া অন্যান্য যে আক্বিদাগুলো স্যারের সামনে আসে নি সেগুলোর অস্তিত্বও তিনি অস্বীকার করেন নি। এটা প্রশংসার দাবীদার। যেমন ১২ ইমামের উপর বিশ্বাসের মত শীয়া ধর্মের একটা মৌলিক বিশ্বাসই হয়ত স্যারের নজর এড়িয়ে গেছে।
ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
আসসালামু আলাইকুম। ভাই, কোরান পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারো আছে? কোরান আল্লাহই হেফাজত করবেন। তাহলে শিয়ারা পরিবর্তন করবে এটা কি সংঘর্ষিক হবে কি না।
ধন্যবাদ।
কুরআন তো আল্লাহ হেফাজত করছেনই। শিয়া ধর্মের অনুসারীরা কুরআনের বিকৃতি করার পর মুসলিম জাহান তো সেটাকে কুরআন হিসাবে গ্রহন করে নি। কিয়ামত পর্যন্ত তাদের বিকৃতিগুলো মুসলিমগণ “বিকৃত” হিসাবেই চিহ্নিত করবে ইনশাআল্লাহ। তাওরাত, ইনজিল দুনিয়াতে হেফাজত হয় নি। ইহুদী ও খৃষ্টানরা সেগুলো বিকৃত করেছে আর বিকৃতগুলোই এখন কেবল পাওয়া যায়। মূল তাওরাত ও মূল ইনজিল দুনিয়াতে লিখিত আকারে অনুপস্থিত। পক্ষান্তরে কুরআন আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য হাফেজদের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছেন, অসংখ্য মুসহাফের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছেন। এমন অনেক আল্লাহর বান্দাদের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছেন যারা ধরতে পারেন কোথাও কোনো ছাপার অক্ষরে কুরআনের বিকৃত বা ভুল উপস্থাপন হলে। শিয়ারা কুরআনকে বিকৃত করে সেটা নিজেদের মধ্যে রাখছে বা ছড়ানোরও চেষ্টা করে থাকতে পারে। সেটা আল্লাহ প্রেরিত কুরআনের জায়গা কোনো দিনও দখল করতে পারবে না। তাহলে আল্লাহর হেফাজতের ঘোষণার সাথে এটা সাংঘর্ষিক হয় কিভাবে?
অপর দিকে, শিয়া ধর্মের অনুসারীরা তো আসলে আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক কুরআনের হেফাজতের ঘোষণার উপরও বিশ্বাস করে না। কারণ তাদের অনেকেরই মতে কুরআনের অনেক অংশই সাহাবীগণ (রা) গোপন করেছেন (নাউযুবিল্লাহ)।
মা শা আল্লাহ
” শিয়া মতবাদ : বিবাদ বনাম ভ্রষ্টতা” বই রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো। শিয়াদের আক্বিদা ও বিশ্বাস সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। শিয়াদের (ইরান) মাধ্যমে ইসলামের যে কোন কল্যাণ হবেনা বরং তারা ইসলামকে বিকৃত করে সমাজে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করছে এই বিষয়টাও আমার কাছে আজ স্পষ্ট হয়ে গেল। হাসান আব্দুল্লাহ্ ভাইয়ের সুস্থতা ও নেক হায়াত কামনা করছি।
আমীন
জাজাকাল্লাহ খাইরান হাসান আব্দুল্লাহ ভাই কে এত সুন্দর করে বুঝিয়ে লিখার জন্য। তেমন কিছুই জানতাম না শিয়াদের সম্পর্কে কিছু হলেও জানলাম।
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই, ইহুদি মায়মূন এর যে চক্রান্ত আহলে বাইত নিয়ে তার বংশের নাম গুলো মিশ্র করা, এই বিষয় টা কি শুধু আপনার মত নাকি কোনো দলিল আছে?
জাযাকুমুল্লাহ।
পোস্টের টাইটেলেই বলা আছে এটি একটি বই রিভিউ। বইটি পড়ে আমার যা বুঝে এসেছে সেটা এখানে লেখা হয়েছে। আপনার প্রশ্নের বক্তব্যের মত সুনির্দিষ্ট বিষয়ে নিজস্ব মত প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নাই। মূল বইয়ের বক্তব্যই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। মূল বইয়ের লেখক বা অনুবাদকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আছসালামু আলাইকুম..
লেখাটা অংশবিশেষ বা লেখাটা কি নিজের ভাষায় সংক্ষিপ্তভাবে শেয়ার করা যাবে?