Post updated on 26th March, 2024 at 02:33 pm
প্রতি বছর রমাদানের শেষে আমরা যাকাতুল ফিতর প্রদান করে থাকি। যেহেতু এটি বছরে একবার আদায় করে থাকি তাই এর বিধি-বিধান ও মাসআলাগুলো স্বাভাবিক ভাবেই আমরা ভুলে যাই। প্রতি বছরই নতুন করে ফিতরার মাসয়ালাগুলোর খোঁজ করতে হয়। সাদাকাতুল ফিতরের সাথে বা এর মূল্যমানের সাথে ৫ টি পণ্য জড়িত। প্রতি বছর তাই বাজার মূল্যের উপর ভিত্তি করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ২০২২ সালের ফিতরা সর্বোচ্চ ২৩১০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা নির্ধারন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। সাধ্য অনুযায়ী আপনি এর চেয়ে বেশিও দিতে পারেন।
শুরুতেই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সাল তথা ১৪৪৩ হিজরির রমাদান মাসের ফিতরার পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করা হলো। এরপর ফিতরা বিষয়ক বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ফিতরার পরিমাণ
সদাকায়ে ফিতর সম্পর্কিত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়। এদের নাম ও ফিতরার জন্য পণ্যগুলোর পরিমাণ নিম্নরূপ।
পন্যের নাম | ফিতরার পরিমাণ | |
যব | ১ সা’ | ৩.৩ কেজি |
খেজুর | ১ সা’ | ৩.৩ কেজি |
পনির | ১ সা’ | ৩.৩ কেজি |
কিসমিস | ১ সা’ | ৩.৩ কেজি |
গম বা আটা | ০.৫ সা’ | ১.৬৫ কেজি |
এ পাঁচ প্রকারের মধ্যে যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করতে চাইলে প্রত্যেকের জন্য এক সা’ পরিমান (৩ কেজি ৩০০ গ্রাম) দিতে হবে। আর গম বা আটা দ্বারা আদায় করতে চাইলে আধা ‘সা’ (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) দিতে হবে।
ফিতরা কত টাকা ২০২৪? ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ঘোষিত ফিতরার পরিমাণ
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ফিতরার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এটা একটা ভালো উদ্যোগ। আলেম সমাজ এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। উপরের ৫টা খাদ্যের মধ্যে সবচেয়ে দামী খাবারের দাম আর সবচেয়ে কমদামী খাবারের দামের হিসাব করে তারা এই ফিতরার রেঞ্জ নির্ধারণ করেন। এ বছর (১৪৪৫ হিজরী, ২০২৪ ইং) সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ তারা এভাবে নির্ধারণ করেছেন:
পন্যের নাম | পরিমাণ | মূল্য |
যব | ৩.৩ কেজি | ৪০০ টাকা |
খেজুর | ৩.৩ কেজি | ২৪৭৫ টাকা |
পনির | ৩.৩ কেজি | ২৯৭০ টাকা |
কিসমিস | ৩.৩ কেজি | ২১৪৫ টাকা |
গম বা আটা | ১.৬৫ কেজি | ১১৫ টাকা |
কোন পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করব?
প্রশ্ন হচ্ছে যব, খেজুর, পনির ও কিসমিসের মত দামী খাবার দিয়ে আদায় করতে চাইলে এক ‘সা’ আর আটা বা গমের মত কম দামী জিনিস দিয়ে আদায় করলে অর্ধেক ‘সা’ কেন আদায় করতে হয়? এর উত্তর হচ্ছে আরবে নবী (সা) এর সময়ে গমের উৎপাদন কম হত। গম পাওয়া যেত কম, তাই গমের দাম তখন অনেক বেশি ছিল। যেহেতু গমের দাম তখন অনেক বেশি ছিল সে কারণে গম দিয়ে আদায় করতে চাইলে তার জন্য অর্ধেক ‘সা’ পরিমাণ গম সাদকা করলেই আদায় হয়ে যেত। অপরপক্ষে যব, খেজুর, পনির আর কিসমিসের দাম সে সময় কমদাম আর সহজলভ্য হওয়ায়। এগুলো দিয়ে আদায় করতে চাইলে ১ ‘সা’ পরিমাণ দিতে হত।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কোন খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ফিতরার পরিমাণ হিসাব করি? আমরা সাধারণত আটা বা গমের মূল্য হিসাব করে এ ফিতরা আদায় করি। ধনী-গরীব সকলেই একই পদ্ধতিতে একই মূল্যে তা আদায় করি। অথচ দান করার সময় উত্তম বস্তু দান করা, পছন্দনীয় বস্তু দান করা, ভালো মানের বস্তু দান করা—এসবের প্রতি পবিত্র কুরআন ও হাদীসে বারবার উৎসাহিত করা হয়েছে। তাই আমাদের উচিত, এ দানের ক্ষেত্রেও আমাদের সর্বোচ্চ সাধ্য ব্যয় করা। ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ হিসেবে তা আদায় করে দায়মুক্তি পাওয়ার মানসিকতা পরিহার করা।
আমাদের মনে রাখা উচিত, এ সাদাকাতুল ফিতর একটি ওয়াজিব দান। যাদের নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে তাদের জন্যে এ দান ওয়াজিব। আর রমজান মাসে একটি ওয়াজিব আদায় করলে অন্য সময়ের সত্তরটি ওয়াজিব আদায় করার সওয়াব আমরা পেতে পারি।
আরেকটি বিষয়, আমরা তো আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রেই আমাদের আর্থিক সংগতির বিষয়টি বিবেচনায় রাখি। আর্থিক সামর্থ অনুসারে আমরা জামাকাপড় কিনি। সামর্থ অনুসারে আমরা কুরবানির পশুও কিনে থাকি। তবে সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের সময় কেন এ সামর্থের বিবেচনা নয়?
রমজান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দান করতেন। বলাবাহুল্য, নফল দানের তুলনায় ওয়াজিব দানের সওয়াব অনেক অনেক বেশি। তাই আসুন, আমরা সাধ্যমতো বেশি দামের পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করি।
এমনও হতে পারে, আপনার পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে খেজুরের মূল্য হিসাব করে ফিতরা আদায় করার সামর্থ আপনার নেই। কিন্তু ১-২ জনের ফিতরা এ খেজুরের মূল্য দিয়ে আদায় করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যে কজনের পক্ষ থেকে খেজুর-কিসমিস দিয়ে ফিতরা আদায় করতে পারেন, তা করুন। বাকিদের পক্ষ থেকে আটা দিয়েই আদায় করুন। তবুও আশা করা যায়, আপনি এমন একটি সুন্নতের ওপর আমলকারী হিসেবে বিবেচিত হবেন, যে সুন্নতটি এখন মৃতপ্রায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ফিতরার হার নির্ধারণ ও কিছু কথা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বলা হয়ে থাকে, পণ্যগুলোর স্থানীয় বাজারমূল্যে তারতম্য হতে পারে। সে অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকার বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রদান করলেও আদায় হয়ে যাবে। এছাড়াও এখানে পণ্যগুলোর যে মূল্য দেয়া আছে সেগুলোর ক্ষেত্রে পণ্যের মান অনুযায়ী মূল্যের তারতম্যও হওয়া সম্ভব।
যেমন ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম খেজুরের মূল্য ধরা হয়েছে ২৪৭৫ টাকা। আমরা জানি উন্নত জাতের আজওয়া খেজুরের প্রতি কেজির দামই আছে প্রায় ২০০০ টাকা। সেক্ষেত্রে আমাদের যাদের সামর্থ্য আছে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খেজুরের মূল্যকে আদর্শ না ধরে আজওয়া খেজুরের দাম হিসাব করে ৬৬০০ টাকা ফিতরা প্রদান করতে পারেন। আবার আরেকটু কম দামের খেজুর যেমন ৩২০ টাকা কেজির দাব্বাস খেজুরের দাম হিসাব করে (৩২০ * ৩.৩) = ১০৫৬ টাকা প্রদান করতে পারেন।
অনেকে এমন আছেন, যারা সর্বনিম্ন পরিমাণে ফিতরা আদায় করতে চান না, আবার ৫০০ টাকা কেজির খেজুর হিসেবে ফিতরা আদায় করা তাদের জন্যে কঠিন। তারা চাইলে নিজেদের এলাকার আরও কম মূল্যের কোনো খেজুরের দামে ফিতরা আদায় করতে পারেন। খেজুরের কেজি যদি ২০০ টাকা হয়, তবে ফিতরা হবে ৬৬০ টাকা। ঢাকা শহরের বাজারমূল্য অনুসারে হয়তো আটা ৭০ টাকা কেজি হিসাব করে ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ ধরা হয়েছে ১১৫ টাকা। আপনার এলাকায় আটা বা গমের বাজারমূল্য যদি আরও কম হয়, উদাহরণস্বরূপ ৫০ টাকা হয়, তবে আপনি চাইলে আপনার এলাকার বাজারমূল্য হিসেবে (৫০*১.৬৫=) ৮২.৫ টাকা ফিতরা আদায় করতে পারেন।
আপনি চাইলে এভাবে আপনার সাধ্য অনুযায়ী খেজুর, যব, কিসমিস ও পনিরের দামকে ৩.৩ দিয়ে গুণ দিয়ে ফিতরার পরিমাণ নির্ধারন করতে পারেন। একই ভাবে আটা বা গমের দামকে ১.৬৫ দিয়ে গুণ দিলে ফিতরার পরিমাণ পাওয়া যাবে। পাঠকের বুঝার সুবিধার্থে আমরা কয়েক ধরনের খেজুরের মূল্য দিয়ে একটি ছক বানিয়ে শেয়ার করছি। খেজুরের এই মূল্য সংগ্রহ করা হয়েছে ৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ ঢাকার মিরপুর ১ এর একটি খেজুরের দোকান থেকে। আপনার এলাকার যে কোনো খেজুরের দামের সাথে ৩.৩ গুণ করলেই খেজুদের মাধ্যমে ফিতরার পরিমাণ বের করতে পারবেন। খেজুরের মত করে অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে আপনি নিজেই ফিতরার পরিমাণ বের করতে পারবেন।
খেজুরের নাম | ১ কেজির মূল্য |
ফিতরার পরিমাণ
(৩.৩ কেজির মূল্য)
|
জিহাদী | 160 | 528 |
খালাশ | 240 | 792 |
রেজিজ | 280 | 924 |
দাব্বাস | 320 | 1056 |
দাাব্বাস | 470 | 1551 |
মাশরুম | 600 | 1980 |
আদম মরিয়ম | 800 | 2640 |
ইরানী | 900 | 2970 |
কামরাঙ্গা মরিয়ম | 1000 | 3300 |
আজওয়া | 1250 | 4125 |
উপরের মূল্যতালিকাটি ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের। ২০২৪ এর খেজুরের মূল্য আপনার এলাকার বাজার থেকে জেনে হিসাব করতে পারেন।
এবার সাদাকাতুল ফিতরের বিস্তারিত বিধান, হুকুম ও মাসআলাগুলো দেখে নেয়া যাক।
সাদাকাতুল ফিতর কী?
সাদাকাহ অর্থাৎ দান; ফিতর অর্থ এক মাস রোজা রাখার পর রোজা ভাঙা। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে রোজা ভাঙা উপলক্ষে গরীব-মিসকিনকে যা দান করা হয়, তা-ই সাদাকাতুল ফিতর।
সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা কেন ওয়াজিব?
হাদীস শরীফ থেকে যাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার পিছনে বেশ কিছু হিকমতের উল্লেখ পাওয়া যায়। সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবার পিছনে হিকমতগুলো নিম্নরূপঃ
ফিতরা ওয়াজিব হবার প্রথম কারণ
একজন রোজাদার ব্যক্তির রোজা পালন করতে গিয়ে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে যায়, যার কারণে রোজা তার ভঙ্গ হয়ে যায় না, কিন্তু রোজার ত্রুটি হয়। রোজার এ ত্রুটি মার্জনার জন্যই সাদাকাতুল ফিতর। যেমন একজন রোজাদার ব্যক্তি দিনের বেলায় পানাহার করেনি, স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় নি; যার কারণে তার রোজা নষ্ট হয়নি। কিন্তু পরনিন্দা বা গিবত করেছে, অশ্লীল কথাবার্তা বলেছে, অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলেছে, এতে রোজা ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। এ থেকে রোজাকে পরিচ্ছন্ন ও পরিশুদ্ধ করার জন্যই সাদাকাতুল ফিতর।
ফিতরা ওয়াজিব হবার দ্বিতীয় কারণ
গরীব-দরিদ্র মানুষগুলো এই সমাজেরই মানুষ। তারা সারা বছরই দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে থাকে। তারা কমপক্ষে ঈদের দিনের একদিন যাতে ঈদ আনন্দে সকলের সাথে শরীক হতে পারে। এজন্য তাদের কিছু খাদ্য ও বস্ত্রের ব্যবস্থা করে দেয়া।
ফিতরা ওয়াজিব হবার তৃতীয় কারণ
দীর্ঘ এক মাস উপবাস থাকার পর আল্লাহ মেহেরবাণী করে ঈদের দিনে পানাহারের অনুমতি দিয়েছেন। তারই শুকরিয়া স্বরূপ সাদাকাতুল ফিতর।
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজাকে অপ্রয়োজনীয় ও অশ্লীল কথাবার্তা ও কার্যকলাপ থেকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য এবং মিসকীনদের কিছু খাদ্যের ব্যবস্থা করার জন্য যাকাতুল ফিতর ফরজ করেছেন।
(আবু দাউদ, ইবনে মাজা, বায়হাকী)
অন্য হাদীসে রয়েছেঃ “তাদের আজকের দিনে মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরা থেকে অমুখাপেক্ষী রাখ” (বায়হাকী, দারু কুতনী)
সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা কার উপর ওয়াজিব?
যাকাত, কুরবানী ও সদকায়ে ফিতিরের নিসাবের ক্ষেত্রে মূলনীতি হলঃ যখন কোন ব্যক্তির কাছে একাধিক নিসাবের অংশ বিশেষ থাকে (অর্থাৎ কিছু স্বর্ণ, কিছু রূপা বা কিছু টাকা। অথবা শুধু স্বর্ণ, শুধু রূপা বা শুধু ক্যাশ টাকা)। কিন্তু কোনটি দিয়েই নিসাব পূর্ণ না হয়, এক্ষেত্রে যে কোন একটিকে নিসাব ধরে অন্য নিসাবী পণ্যের মূল্য হিসাবে আনা হয়। তখন যদি কোন একটি নিসাবের সমপরিমাণ মূল্যের নিসাব পূর্ণ হয়ে যায়, তাহলেই তার উপর যাকাত, কুরবানী ও সদকায়ে ফিতির আবশ্যক হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। তাহল, গরীবদের জন্য উপকারী বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হয়। মূলনীতি অনুপাতে যেটি দিয়ে নেসাব পূর্ণ হবে, সেটিকেই গ্রহণ করতে হয়।
উদাহরণঃ কারো কাছে রূপা আছে আবার স্বর্ণও আছে। কিন্তু কোনটি দ্বারাই নিসাব পূর্ণ হচ্ছে না (অর্থাৎ স্বর্ণ সাড়ে সাত ভরি নাই, রূপাও সাড়ে ৫২ ভরি নাই)। এখন রূপার নিসাব সাড়ে বয়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্য কত? তা নির্ধারণ করতে হবে। তারপর সেই মূল্যমান পরিমাণ যদি তার কাছে থাকা স্বর্ণের বাজার মূল্যের সমান বা বেশি হয়, তাহলে বলা হবে রূপা হিসেবে নেসাব পূর্ণ হয়ে গেছে। আর যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ এর মূল্য স্বর্ণ ও রূপা মিলে হয়ে যায়, তাহলে স্বর্ণের মূল্য হিসেবে নেসাব পূর্ণ হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে। যদি কোনটি দ্বারাই তার মূল্যের নেসাব পূর্ণ না হয়, তাহলেই কেবল বলা হবে যে, নেসাবের মালিক হয়নি।
তবে আমাদের কাছে এই পরিমাণ সম্পদ না থাকলেও যদের ফিতরার পরিমাণ টাকা সাদাকা করার তাওফিক আছে তাদের জন্যও উচিত হবে ফিতরা আদায় করা। বর্তমানে জনপ্রতি ফিতরার পরিমাণ ৭০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। ৭০ বা ১০০ টাকা সাদাকা করার তাওফিক যদি অন্তত থাকে তাহলেই আমরা যেন এই দান করার সুযোগ নিই। কারণ এই দান আমরা আল্লাহর কোনো উপকারে আসবে না। আল্লাহ আমাদেরকে সুযোগ দিয়েছেন দান করার, যেন এটি আমাদের উপকারে আসে। তাই আসুন আমরা সকলেই আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি টাকা দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করি।
পরিবারের পক্ষ থেকে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করবেন কে?
পরিবারের কর্তা তার নিজের ও তার অধীনস্থ নাবালেগদের পক্ষ থেকে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করবেন। স্ত্রীর ফিতরা আদায় করা স্বামীর জন্য আবশ্যক নয়। তবে যদি স্বামী আদায় করেন তাহলে স্ত্রীর পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে এবং স্বামীও এজন্য সাওয়াবের অংশীদার হবেন। স্ত্রী ব্যতীত কর্তার অধিনস্থ নাবালেগ ছেলে-মেয়ে বা কাজের লোক তাদের পক্ষ থেকেও তিনি ফিতরা আদায় করবেন। যাদের উপর রোজা ফরজ নয়, অথবা ফরজ হলেও যারা রমজানের রোজা রাখতে পারে নাই তাদের পক্ষ থেকেও ফিতরা আদায় করতে হবে।
ফিতরা কাকে দেয়া যাবে?
ফিতরার হক্বদার হচ্ছে গরীব লোক। আপনার জন্য সবচেয়ে উত্তম হবে যদি আপনার নিকটাত্মীয়দের মধ্যে দরিদ্র কেউ থাকে তাকে দেয়া। এমন কি যদি ভাই-বোনের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকে তাহলে তাদেরকে দেয়াও অনেক ভাল কাজ হবে। অর্থাৎ ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজনকে ফিতরা দেয়া যাবে। এতে ফিতরা আদায় হবে এবং আত্মীয়স্বজনের দেখাশোনা করা বা তাদের হক্ব আদায়ের সওয়াবও ইনশাআল্লাহ হবে।
একজনের ফিতরা একজনকে দেয়াই উত্তম। কিন্তু একজনের ফিতরা একাধিকজনের মধ্যেও ভাগ করে দেয়া যেতে পারে। টাকার পরিমাণের উপর ভিত্তি করে নিজেরা বুঝে বন্টন করতে পারি। যেমন কেউ যদি তার ফিতরা বাবদ ৭০ টাকা কয়েকজনকে ভাগ করে দেন তাহলে আসলে খুব অল্প পরিমাণ টাকা প্রত্যেকে পাবে। কারোরই সেই টাকায় ঈদ উদযাপন হয়ে উঠবে না। আবার যিনি ফিতরা হিসাবে ৩০০০ টাকা দিবেন। তিনি হয়ত মনে করতে পারেন ৩ টি পরিবারকে ১০০০ টাকা করে দিলে তাদের সবার ঈদের দিনটা ভাল কাটবে। সেটাও হতে পারে।
ব্যক্তিগত ভাবে আমাদের পরিবারের সকল সদস্যের ফিতরার টাকা একত্র করে গ্রামে কয়েকটি পরিবারের মাঝে বন্টন করে থাকি। এসমস তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ও তাদের কার কতটা প্রয়োজন সেটা মাথায় রেখে বন্টন করি।
মসজিদ মাদরাসা নির্মানের জন্য ফিতরার টাকা দেয়া যাবে না। এটা শুধু দরিদ্রদেরই হক্ব। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ইত্যাদি নির্মানের জন্য ফিতরার টাকা খরচ করা যাবে না। লাইব্রেরি নির্মান, দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার জন্যও ফিতরার টাকা খরচ বৈধ নয়। এটা দরিদ্রদের অভাব দূর করার জন্য বা দরিদ্রদেরকে ঈদের দিন অন্তত নিশ্চিন্ত থাকার ব্যবস্থা করার জন্য দরিদ্রদেরকেই দিতে হবে।
ফিতরা আদায় করা আমাদের উপর দায়িত্ব। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ফিতরার টাকা বা খাদ্যদ্রব্য সময় মত এর হক্বদারের কাছে পৌঁছে দেয়া। ফিতরার হক্বদারদের যেন আমাদের দ্বারে দ্বারে এসে ঘুরে ঘুরে ফিতরা সংগ্রহ করতে না হয় সে দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত।
ফিতরা খাদ্য দিয়েই আদায় করতে হবে? নাকি টাকা দিয়েও আদায় করা যাবে?
বর্তমান সময়ে যেসকল বিধান নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই টপিক। ফিতরা কি খাদ্য দ্রব্য দিয়েই আদায় করতে হবে নাকি টাকা দিয়ে আদায় করলেও আদায় হবে এ নিয়ে ফকীহ বা ইমামদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক, ইমাম আহমাদ (রহ.) এর মতে নগদ অর্থ দেয়া বৈধ হবে না। কারণ হাদীসে স্পষ্ট ভাবে খাদ্যবস্তু দ্বারা ফিতরা আদায় করার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই সময়ের প্রচলিত মুদ্রা দিয়ে ফিতরা আদায় করার প্রমাণ হাদীস দ্বারা পাওয়া যায় না। তাই তাদের মত হচ্ছে খাদ্যবস্তু দ্বারাই ফিতরা দিতে হবে, টাকা দিয়ে ফিতরা আদায়ই হবে না।
অপরপক্ষে ইমাম আবু হানিফা, সুফিয়ান সাওরী, আতা, হাসান বাসরী, ওমর বিন আব্দুল আজিজ প্রমুখের মতে, নগদ অর্থ দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা বৈধ। কেননা সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের একটি অন্যতম লক্ষ্য হলো দরিদ্র মানুষকে ঈদের আনন্দে শরীক হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। দরিদ্র মানুষের যেমন প্রয়োজন খাদ্যের, তেমনি প্রয়োজন কাপড়-চোপড় ও অন্যান্য সামগ্রীর।
হযরত ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) লিখিত বুখারী শরীফের সুপ্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীর যাকাত অধ্যায়ের বাবে আরযি ফিয যাকাত পরিচ্ছদে এসেছেঃ
সাহাবী হযরত মুয়াজ (রাঃ) ইয়েমেনবাসীদের লক্ষ্য করে বলেছেনঃ
তোমরা যব এবং ভুট্টার পরবর্তে পোশাক সদকা (যাকাত কিংবা ফিতরা) দাও। কেননা তা তোমাদের জন্য সহজ এবং রাসূলুল্লাহ সা. এর সাহবীদের জন্য কল্যানকর।
সকলেই যদি শুধু খাদ্য দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে, তাহলে হয়তো তার ঘরে জমা হয়ে যাবে অঢেল খাদ্য। অথচ তার এত খাবারের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন তার কাপড়-চোপড়, সেমাই, চিনি ও অন্যান্য সামগ্রী। এ অবস্থায় তার প্রয়োজন পূরণের জন্য তাকে অতিরিক্ত খাবার বিক্রি করতে হবে। এতে যেমন রয়েছে বিক্রি করার বিড়ম্বনা, তেমনি বিক্রি করতে হবে তুলনামূলক কম মূল্যে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দরিদ্র মানুষটি। তাই অনেক ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করাই উত্তম।
এছাড়াও টাকা দিয়ে আদায় করার পক্ষে সাহাবী (রা) ও তাবেয়ীদের (রহ.) আমল রয়েছে। ইমাম বুখারীর উস্তাজ ইমাম আবু বকর ইবনে আবী শাইবা রহঃ তার পৃথিবী বিখ্যাত হাদীসের কিতাব “মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা” এর ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৫০৭ নং পৃষ্ঠায় শিরোনাম এনেছেন فِي إِعْطَاءِ الدَّرَاهِمِ فِي زَكَاةِ الْفِطْرِ তথা টাকার বিনিময়ে সদকায়ে ফিতর প্রদান করা। এর অধীনে তিনি একাধিক আছার উল্লেখ করেছেন।
তাই আমরা খাদ্যদ্রব্য ও টাকা উভয়টি দিয়েই ফিতরা আদায় করতে পারি। এটা নিয়ে অহেতুক কুট-তর্কে আমরা না জড়াই। খাদ্যের পরিবর্তে টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা সাহাবীদের (রা) আমল দ্বারা প্রমাণিত। যে বিষয়টি সাহাবীগণ (রা) আমল করে গিয়েছেন সে বিষয়টিকে অবৈধ, নাজায়েজ, হাদীসের বিরোধী ইত্যাদি ট্যাগ না দেই। সাহাবীগণের (রা) চেয়ে নিজেদেরকে বা পছন্দের শায়খদেরকে বেশি ইসলাম বুঝনেওয়ালা মনে না করি। আল্লাহ আমাদেরকে কট্টরপন্থিতা পরিহার করার তাওফিক দান করুন।
ফিতরা কখন অর্থাৎ কোন সময়ে আদায় করতে হবে?
হাদীসের রেওয়ায়েত মতে ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার আগেই ফিতরা গরীবদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এক্ষেত্রে ফিতরা আদায়কারীর দায়িত্ব হচ্ছে গরীবদের কাছে ফিতরা পৌঁছে দেয়া। গরীব বা ফকিররা ফিতরার টাকা নেয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরবে না। ফিতরা আদায়কারীকে গরীবের বাড়ি যেতে হবে তার দায়িত্ব পালন করার জন্য। তাই খেয়াল রাখতে হবে ফিতরা যেন ঈদের নামাজের পর আদায় করতে না হয়। অনেকেই চিন্তা করতে পারেন ঈদগাহে অনেক ফকির আসে। নামাজ শেষ করে সবাইকে ৫-১০ টাকা করে দিব। কিন্তু এটা সুন্নতের খেলাফ।
ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করার বর্ণনা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। একই সাথে এমন কিছু রেওয়ায়েতও পাওয়া যায় যেখানে দেখা যায় সাহাবীরা (রা) ঈদের ২-১ দিন আগেও ফিতরা আদায় করেছেন। তাই আমরা চাইলে ঈদের ২-১ দিন আগে ফিতরা আদায় করে দিতে পারি। যেন যাকে দেয়া হচ্ছে সে ২-১ দিন আগে থেকেই ঈদের প্রস্তুতি নিতে পারেন। যদি টাকা দেয়া হয় তাহলে ঈদের ২-১ দিন আগে দেয়া। বেশি আগে দিলে সে আবার অন্য কাজে খরচ করে ফেলতে পারে। ফলে ঐ ব্যক্তির পরিবারের লোকজন হয়ত ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতে পারে। তাই বেশি আগে টাকা না দেয়াই ভাল। খাদ্যদ্রব্য দিলেও তা ঈদের অনেক দিন আগে না দেয়াই ভাল। এমন একটা টাইমিং করে আমাদের এগুলো আদায় করা উচিত যাতে, যাকে দেয়া হচ্ছে সে সেগুলো ঈদের দিনে কাজে লাগাতে পারে।
ফিতরার পরিমাণ
সদাকায়ে ফিতর সম্পর্কিত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়: যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও গম। এ পাঁচ প্রকারের মধ্যে যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করতে চাইলে প্রত্যেকের জন্য এক সা’ পরিমান (৩ কেজি ৩০০ গ্রাম) দিতে হবে। আর গম দ্বারা আদায় করতে চাইলে আধা ‘সা’ দিতে হবে।
প্রথম চারটি খাদ্যদ্রব্য দিয়ে আদায় করতে চাইলে এক ‘সা’ পরিমাণ আর দ্বিতীয় প্রকার খাদ্য গম দ্বারা আদায় করলে প্রতিজনের জন্য অর্ধেক ‘সা’ পরিমাণ গম আদায় করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে যব, খেজুর, পনির ও কিসমিসের মত দামী খাবার দিয়ে আদায় করতে চাইলে এক ‘সা’ আর গমের মত কম দামী জিনিস দিয়ে আদায় করলে অর্ধেক ‘সা’ কেন আদায় করতে হয়? এর উত্তর হচ্ছে আরবে নবী (সা) এর সময়ে গমের উৎপাদন কম হত। গম পাওয়া যেত কম, তাই গমের দাম তখন অনেক বেশি ছিল। যেহেতু গমের দাম তখন অনেক বেশি ছিল সে কারণে গম দিয়ে আদায় করতে চাইলে তার জন্য অর্ধেক ‘সা’ পরিমাণ গম সাদকা করলেই আদায় হয়ে যেত। অপরপক্ষে যব, খেজুর, পনির আর কিসমিসের দাম সে সময় কম হওয়ায় আর সহজলভ্য হওয়ায় এগুলো দিয়ে আদায় করতে চাইলে ১ ‘সা’ পরিমাণ দিতে হত।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কোন খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ফিতরার পরিমাণ হিসাব করি? আমরা সাধারণত ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করি গমের দাম দিয়ে। কারণ বর্তমান সময়ে গমের ফলন হয় অনেক বেশি। এর দাম কম। এটা যেহেতু অর্ধেক ‘সা’ (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) দিলেই হয় তাই আমরা চালাকী করে গমের দাম দিয়েই ফিতরার হিসাব করি। আল্লাহর রাসূল (সা) গমের হিসাব করে দিয়েছিলেন এটার দাম বেশি ছিল দেখে। আমরা এখনকার মুসলিমরা এটার সুযোগ নিই এটার দাম কম হবার জন্য। সাহাবীগণ (রা) খেজুর দ্বারা ফিতরা দিতে পছন্দ করতেন। নবী (সা) বলেছেন সাধ্যের মধ্যে সবচেয়ে ভাল জিনিস দিয়ে ফিতরা আদায় করতে। আল্লাহ কুরআনেও দান করার সময় উত্তম বস্তুগুলো দিয়ে দান করতে উৎসাহ দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিত উপরে উল্লেখিত ৫ রকমের খাবারের মধ্যে আমাদের সাধ্যে যেটা দিয়ে ফিতরা দেয়া সামর্থ্যে কুলায় সেটা দিয়ে আদায় করা।
ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের থেকে প্রতি বছর ফিতরার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এটা একটা ভাল উদ্যোগ। আলেম সমাজ এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। উপরের ৫টা খাদ্যের মধ্যে সবচেয়ে দামী খাবারের দাম আর সবচেয়ে কমদামী খাবারের দামের হিসাব করে তারা এই ফিতরার রেঞ্জ নির্ধারণ করেন। যেমন গম দিয়ে আদায় করলে হয়ত ৭৫ টাকা আসবে। আর খেজুরের মধ্যে আজওয়া খেজুর দিয়ে আদায় করলে ৩৫০০ টাকার মত আসবে। সমাজে সবার অবস্থান এক না। যেই লোক মাসে ১০ হাজার টাকা ইনকাম করেন তিনি হয়ত ৭৫ টাকা দিয়ে আদায় করবেন। আবার যেই লোকের ইনকাম মাসে ১ লাখ টাকা সে চাইলে আল্লাহর ইচ্ছায় ৩৫০০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে পারেন।
আমরা এখানে ব্যবসা করছি আল্লাহর সাথে। এখন দুনিয়াতে আমরা যত বেশি ইনভেস্ট করে যেতে পারব, আখিরাতে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আমাদেরকে তত বেশি দিবেন। তাই নিজেদেরকে ফাঁকি না দিয়ে সাধ্যে যতটুকু কুলায় সে পরিমাণ ফিতরা আমরা আদায় করি। ধনী-গরীব সবাই গড়ে ৭০ টাকা সর্বনিম্ন ফিতরা আদায় করার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভোগবাদী মানসিকতা থেকে বের হয়ে এসে দান করার মানসিকতা লালন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
তথ্যসূত্র
- সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ : কিছু কথা – মাসিক আলকাউসার
- রামাদানের সওগাত – ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
- টাকা দিয়ে সদকায়ে ফিতির আদায় করলে আদায় হবে না? – আহলে হক্ব মিডিয়া
- যাকাত-ফিতরা হিসাবে জামা-কাপড় দেয়া একজন সাহাবীর বক্তব্য থেকে প্রমাণিত – বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারী
- স্বর্ণ ও রূপা কোনটি হিসেবেই যদি নেসাব পূর্ণ না হয় তাহলে কি কুরবানী আবশ্যক হয় না? – আহলে হক্ব মিডিয়া
- সাহেবে নিসাব বলতে কী বুঝায়? স্ত্রীর কুরবানীর টাকা সংগ্রহ করা কার দায়িত্ব? – আহলে হক্ব মিডিয়া
- সাদাকাতুল ফিতরের পরিচয় গুরুত্ব প্রয়োজনীয়তা ও আদায়ের বিধানাবলী – দৈনিক সংগ্রাম
- টাকা দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় হবে? – শায়খ মামুনুল হক্ব
- টাকা দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় সংক্রান্ত সাহাবা (রা) ও তাবেয়ীদের (রহ) আমল
- মুসলিমস ডে অ্যাপের ফিতরা সংক্রান্ত সকল পোস্ট একত্রে
ভাই আসসালামু আলাইকুম। আপনার নিবন্ধটি তে আপনি যে তথ্যগুলো সংযুক্ত করেছেন সেগুলোর উৎস উল্লেখ করলে ভালো হতো তাহলে আমাদের মধ্যে কোন সন্দেহ থাকত না ধন্যবাদ।
তথ্যসূত্রগুলো জানার জন্য কষ্ট করে লেখার শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে ভাই। ৬ টা রেফারেন্স যুক্ত আছে শেষে।
কেউ কি মাঝামাঝি হিসাব করে দেয় তাহলে কি কোন সম্যসা হবে? যেমন ১০০০ টাকা করে দিলে।
এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। কোনো আলেম এর থেকে কনফার্ম হয়ে নিলে ভাল হবে।
তবে আমি যেটা বুঝি, বাজারে একই পণ্যের কম দাম বা বেশি দাম আছে। খেজুরের দাম ১৩০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা কেজি আছে। আপনি ১০০০ টাকা দিতে চাইলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম খেজুরের মূল্য আসবে কেজি প্রতি ৩০০ টাকার মত। মানে বাজারে যদি খোজ নিয়ে দেখেন ৩০০ টাকা কেজির খেজুর পাওয়া যায় তাহলে আপনি ঐ খেজুরের মূল্য বাবদ ১০০০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে ইনশাআল্লাহ আদায় হয়ে যাবে। কারণ আপনার সাধ্য মত আপনি যতটা উন্নত মানের খেজুরের দাম দিতে চাচ্ছেন সেটা চেষ্টা করেছেন। এটা আমার সাধারণ জ্ঞানের থেকে বললাম। একাডেমিক নলেজ থাকা কোনো ইসলামিক স্কলারের থেকে বিষয়টা ভেরিফাই করে নিবেন।
আমি যদি টাকা বা খাদ্য না দিয়ে নতুন জামা কিনে দেই তাহলে কি ফেতরা আদায় হবে?
টাকা দিয়ে আদায় করলে আদায় হয়ে যাবে বলে আলেমগণ ফতোয়া দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে জামা কিনে দিলেও ইনশাআল্লাহ আদায় হয়ে যাবে। কারণ এটাও তার মৌলিক প্রয়োজন।
হযরত ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) লিখিত বুখারী শরীফের সুপ্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে এসেছেঃ
সাহাবী হযরত মুয়াজ (রাঃ) ইয়েমেনবাসীদের লক্ষ্য করে বলেছেনঃ
রেফারেন্সঃ
فتح الباري شرح صحيح البخاري » كتاب الزكاة » باب العرض في الزكاة
আপনার আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগেছে। তবে উক্ত প্রশ্নের উত্তরটি মতঃ পূত হয়নি। খাবার এর পরিবর্তে মূদ্রা দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা কিছু রেফারেন্স এবং যুক্তির মানদন্ডে উত্তির্ণ হলেও, টাকা থেকে জামা কাপড়ের দিকে যেতে হলে কোন বড় স্কলারের রেফারেন্স ছাড়াই পরামর্শ দেয়াটাকে আমি অনুচিত বলে মনে করি।
জাঝাকাল্লাহু খাইর
হযরত ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) লিখিত বুখারী শরীফের সুপ্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে এসেছেঃ
সাহাবী হযরত মুয়াজ (রাঃ) ইয়েমেনবাসীদের লক্ষ্য করে বলেছেনঃ
রেফারেন্সঃ
فتح الباري شرح صحيح البخاري » كتاب الزكاة » باب العرض في الزكاة
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
যাকাত নিয়ে লিখলে ভালো হতো। যাকাত এর নিসাব পরিমাণ কি ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ? কারো কাছে স্বর্ণ নেই কিন্তু জমানো টাকা আছে। আর এই জমানো টাকা নিসাব পরিমাণ না হলে তো যাকাত দিতে হবে না ?!!
আরেকটা প্রশ্ন। কোনো ব্যাক্তি অনেক বছর তার স্বর্ণের ও রূপার যাকাত আদায় করে নিই। এখন করতে চাচ্ছে। কিন্তু স্বর্ণ এর দাম এই ২০/৩০ বছর এ অনেক উথান পতন হয়েছে। এখন এমতবস্থায় হিসাব কিভাবে করবে? ব্যাক্তি মধ্যবিত্ত পরিবারের।
যাকাত অনেক বেশি ব্যাপক একটি বিষয়। তাই আপাতত সাহস করতে পারছি না কিছু লিখার। যাকাতের জন্য এই লিংকে একটা নমুনা দেয়া আছে। সময় করে দেখতে পারেন।
নিসাব শুধু স্বর্ণ নয়। সাড়ে ৫২ ভরি রূপা বা এর সমমূল্যের জমানো টাকাও নিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে। অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম যদি ৫৫ হাজার টাকা হয়। আর কারো কাছে ৫৫ হাজার টাকা অন্তত এক বছর জমানো থাকে তাহলে সেটা নিসাব হবে।
পোষ্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ন এবং উপকারী। ধন্যবাদ
“স্ত্রী ব্যবহার করেনি” এটা আবার কি ধরনের কথা? স্ত্রী কি সাবান বা টুথপেষ্ট যে “ব্যবহার” করবে? শব্দচয়নের ক্ষেত্রে আরও সাবধান হন। আপনাদের এই ধরনের কথাবার্তা মেয়েদের মনে ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারনা দেয়।
ঐ প্যারা বা ঐ প্যারার কয়েকটি বাক্য অন্য আরেকটি লেখা থেকে নেয়া হয়েছিল। তাই অনিচ্ছাকৃত এটা চলে এসেছে। আমি পোস্ট আপডেট করে দিয়েছি।
ধন্যবাদ বিষয়টি সামনে আনার জন্য।
আমি যদি ১৬৫০/= করে দিতে চাই, পরিবারের সনস্য দুইজন, তাহলে সর্বমোট ৩৩০০/= ফিতরা হয়।চাল কত কেজি দিব? একজনকেই ফিতরা দিব নাকি দুইজনকে? আমি যে চাল কিনি তা ৬০/= কেজি।
একজনের ফিতরা একজনকে দেয়া যায় আবার একাধিক জনকেও দেয়া যায়।
আপনি চাইলে ঈদ উদযাপনে সহায়ক এমন কিছু খাবারের আইটেম দিয়ে একেকটা প্যাকেজের মত করতে পারেন। যেমন ১ কেজি পোলাওয়ের চাল, সেমাই, চিনি, দুধ, গোশত ইত্যাদি। যে পরিবারকে দেয়ার চিন্তা করেছেন তাদের সদস্য সংখ্যার উপর ভিত্তি করে পণ্যগুলোর পরিমাণে কম-বেশি করতে পারেন। এভাবে কয়েকটি পরিবারকে এরকম প্যাকেটগুলো দিতে পারেন।
আবার চাইলে একেক পরিবারকে ৫০০ টাকা করে দিতে পারেন। যেন ঈদ উপলক্ষ্যে তারা তাদের প্রায়োরিটি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারেন। পারসোনাল্যি আমি এভাবে আদায় করি।
লেখাটির বিষয়বস্তু ছিল সাদাকাতুল ফিতর উপলক্ষে কিন্তু লেখার শুরুতে লিখলেন যাকাতুল ফিতর এটা ঠিক বুঝতে পারলাম না।
ফিতরা, সাদাকাতুল ফিতর, যাকাতুল ফিতর সবগুলো একই। ভিন্ন ভিন্ন নাম মাত্র।
রাসুলুল্লাহ সাঃ যা নির্দেশ করলেন, ঐ হাদীস কি পড়ে আমরা বুঝতে অক্ষম। যদি বুঝতে অক্ষম না হই, তবে তা পালনে কি ফিতরা আদায় হবে না? যদি উত্তর হয় হবে, তাহলে ফিকাহ, হাদিসের ব্যাখা বা আলেমদের মতামত নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাঃ নির্দেশ বাদ দিয়ে বা অমান্য করে ফিতরা আদায় করতে হবে কেন?
” আর আপনি বলছেন আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ” – মানে আল্লাহ যদি চান? কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাঃ নির্দেশ পালনে ইনশাআল্লাহ বলতে হবে না। কারণ তা মহান আল্লাহতালার নির্দেশ যা রাসুলুল্লাহ সাঃ আমাদের জানিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেন “এক সা”। আর আপনি বলছেন অর্ধ সা। এটাও রাসুলুল্লাহ সাঃ নির্দেশ অমান্য নয়।
কোথায় রাসুলুল্লাহ সাঃ কথা বাস্তবায়নের পরিপূর্ণ চেষ্টা করব? আপনি তা বাদ দিয়ে ফিকাহ, হাদীসের ব্যাখায় সহাবী রাঃ মত, আলেমের মত বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। এটা ঠিক নয়।
মহান আল্লাহতালা আমাদের কে সঠিক বুঝ দান করুন।
ঠিক আছে, আপনি এক সা পরিমাণ আটা, গম, যব, কিসমিস, খেজুর বা পনির দিয়ে ফিতরা দিয়েন। আশা করি এর বাইরে কিছু আপনি দিবেন না। এর বাইরে যদি চাল, ডাল, সেমাই, চিনি, গোশত ইত্যাদি দেন তাহলে কিন্তু হাদীসের নির্দেশ অমান্য হয়ে যাবে (!)
নাকি এখানে আহলে হাদীস আলেমদের মতামত, ব্যাখ্যা, ফিকহ, ইজতিহাদ গ্রহণযোগ্য?
রাসূল (সা) এর নির্দেশ সরাসরি পেয়েছেন সাহাবীগণ (রা)। তাদের মতামত ও তাদের আমলের গুরুত্ব রয়েছে। তারা আমাদের চেয়ে ইসলাম ভাল বুঝতেন। যে বিষয়গুলোর ইখতেলাফ সাহাবীগণের যুগ থেকে চলে আসছে, আর সাহাবীগণের যুগ খাইরুল কুরুনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তারপরেও সাহাবীদের মত উপেক্ষা করার দুঃসাহস কেউ কিভাবে দেখায় আল্লাহ মালুম!
আমি মাজহাবী-লা মাজহাবী বিতর্কে জড়াতে পছন্দ করি না। আপনার আরো কোনো জ্ঞানগর্ভ আলোচনা থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও রেফারেন্সে উল্লেখ করা আলেমদের সাথে বসতে পারেন।
Very good. Ma Sha Allah.
যাকাত ও ফিতরা কি এক নাকি ভিন্ন বিষয়?
ভিন্ন বিষয়। ফিতরাকে যাকাতুল ফিতর বলেও অভিহিত করা হয়।
আসসালামু আলাইকুম রাহমাতুল্লাহ, ভাই এই মুসলিমদের অ্যাপে পবিত্র কোরআন শরীফ দেখে পড়ার সুযোগ আছে কি?
জ্বি না। এখনো কুরআন দেখে পড়ার সুবিধা মুসলিমস ডে অ্যাপে নাই।
আল-হামদুলিল্লাহ
আসসালামু আলাইকুম
সাদাকাতুল ফিতর সর্বনিম্ন কি সারাদেশেই ৭০ টাকা?
২০২২ সালের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করেছে। আপনার সাধ্যানুযায়ী আরো বেশি টাকা দিয়েও ফিতরা আদায় করতে পারেন। এ বিষয়েই পোস্টে বিস্তারিত লিখা হয়েছে।
ভাইয়া এটা থ ২০২১এর ফিতরা র ২০২২ এর টা ও একসাথে অ্যাড করে দিলে ভালো হতো,
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আটা, খেজুর, কিসমিস, পনির ও যব ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোনো একটি ফিতরা হিসেবে দেওয়া যাবে।
উন্নতমানের আটা বা গম ফিতরা হিসেবে দিলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৭৫ টাকা দিতে হবে। যব দিলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৩০০ টাকা, কিসমিসের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৪২০ টাকা, খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৬৫০ টাকা এবং পনির ফিতরা হিসেবে দিলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৩১০ দিতে হবে।
নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো একটি পণ্য বা এর বাজার মূল্য সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে।
আপডেট করে দিয়েছি। ধন্যবাদ।
বাই আমি আসাম থেকেবলছি আমাৰ কাছে গত তিনবছৰ একই পৰিমাণে টাকা আছে আমি শেই টাকাৰ জাকাত দিয়া আশছি আবাৰউ শেই টাকাৰ জাকাত দিতে হভেকি আমি কথা গোলোজানতেছাই
দুঃখিত, আপনার প্রশ্নটি আমি স্পষ্ট বুঝতে পারি নাই। ভাল হয় আপনি কোনো আলেমের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।
আপনারা প্রতিমাসে যে টাকাটা নেওয়ার কথা বলছেন সেখানে কি যাকাত বা ফিতরার টাকা দেওয়া যাবে?
মুসলিমস ডে অ্যাপে যাকাত বা ফিতরার টাকা দেয়া যাবে না। কেউ দিলেও সেটি আদায় হবে না। তথ্যটি অ্যাপের মাঝে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভাই, গরিবদের টাকার প্রয়োজনে তো যাকাত আছে, সে টাকা দিয়ে তারা পোশাক বা অন্য খাবার কিনতে পারবে,,
এই যুক্তি দেখায়ে টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় কতটুকু উচিত হবে??
যাকাত কি রমজান মাসেই দেয়ার হুকুম? রমজানের সাথে বা ঈদের সাথে কি যাকাতের আদৌ কোনো সরাসরি সম্পর্ক আছে?
টাকা দিয়ে ফিতরা দেয়ার যুক্তিটি আমার দেয়া না। এর উপর সাহাবীগণের আমল রয়েছে। পোস্টে রেফারেন্স সহ উল্লেখ রয়েছে।
আসসালামু আলাইকুম। সা বলতে ১ টা পাত্র বোঝানো হয় যতটুকু জানি। তাই এক সা পরিমান খেজুরের ওজন আর এক সা পরিমান পনিরের বা ১ সা পরিমান কিসমিসের ওজন এ অনেক পার্থক্য থাকবে। তাই সব গুলো ৩ কেজি পরিমাপ করাটা কি ঠিক হবে?
আমার জানা নাই ভাই। আলেমদের সাথে এটা নিয়ে ডিসকাস করতে পারেন।
অসম্ভব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লেখা
খুব সহজেই যে কেউ বুঝতে পারবে
আমার ও বুঝার কমতি ছিলো
আজকে আরো বিস্তারিত জানলাম
ধন্যবাদ ভাই
ভাই আগে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কথা মানতে হবে? নাকি সাহবিদের?রাসুলুল্লাহ সা: কি টাকা দিয়ে ফিতরা দিতে বলেছেন? তখন কি মুদ্রা ছিলো না? তাহলে আপনি কেনো হানাফি বিদাতি নিয়ম মানতে বলছেন?গায়ের জোরে কি জান্নাতে যাওয়া যাবে?
সুন্দর কথা বলেছেন। আশা করি হানাফীদেরকে বিদআতী সহ অন্যান্য বিশেষণে (!) বিশেষায়িত করার মাধ্যমে আপনার জান্নাতে যাওয়া নিশ্চিত করতে পেরেছেন।
আহলে হাদীস আলেমদের মতের বাইরে ভিন্ন মত দেখলেই সেটাকে বিদআতী বলে ট্যাগ দেয়া এখন কমন একটা রোগ। ভাই, জান্নাতটা তো ছোট না। অন্যকে বিদআতী ট্যাগ দিয়ে জাহান্নামের টিকেট দিয়ে আপনার কী লাভ? আপনার কাছে যেটা ভাল মনে হয় সেটা মানুন। পোস্টে তো উভয়টার কথাই উল্লেখ আছে। অহেতুক তর্ক বিতর্কের কী দরকার?
ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্, ভাই। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর ও তথ্যবহুল পোস্ট এর জন্য। জাযাক আল্লাহু খাইরান। ইউটিউব থেকে জেনেছি, ১ সা’ এর ওজন ২.৫ কেজি বা ৩ কেজি। কিন্তু আপনার বক্তব্য অনুযায়ী ৩.৩০০ কেজি। অনুগ্ৰহ করে আপনার পক্ষে রেফারেন্স উল্লেখ করবেন?
সা’ এর পরিমাপ ওজনের ক্ষেত্রে মতপার্থক্য রয়েছে। পোস্টের শেষে থাকা রেফারেন্সের ১ম আর্টিকেলে ফিতরার পরিমাণের ক্যালকুলেশন থেকে পাওয়া যায় ১ সা = ৩.২৫৬ কেজি। অর্থাৎ ৩ কেজি ২৫৬ গ্রাম। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে এটিকে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম হিসাবে ঘোষণা দিয়ে ফিতরার পরিমান নির্ধারন করা হয়েছে। একাডেমিক রেফারেন্সের জন্য সংশ্লিষ্ট আলেমদের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
মাশাআল্লাহ। আল্লাহু আকবার। অনেক উপকারি একটি এপ্স। আপনাদেরকে আল্লাহ তায়ালা বরকত দান করুক।
Assalamualaikum,,, Ami class 12 e pori,,ami income krina,,kintu amr kche (700+)৳ ache,,,amr jnno ki fitra ba jakat deya foroj hyeche?,,jdi hye thake ki porimane tk dite hbe?
কত জনকে ফিতরা দিতে হবে তা কি নির্দিষ্ট?
নাকি আমার সাধ্যে যতটুকু কুলাবে ততটুকু দেব?
আপনার ফিতরা আপনি একজন দরিদ্রকে দিতে পারেন। চাইলে কয়েকজনকে ভাগ করে দিতে পারেন। এর সাথে সামর্থ্যের বিষয়টার সংশ্লিষ্টতা বুঝতে পারছি না।
ভাই আমি নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য চোখ বন্ধ করে নামাজ আদায় করি আমার নামাজ হবে কী?
আপনার প্রশ্নের উত্তর মাসিক আলকাউসার পত্রিকার এই লিংকে পেলাম।
আসসালমু আয়লাইকুম
হানাফি মাজহাব মতে ফিতরা খাদ্যদ্রব্যের মূল্য দিয়েও ফিতরা প্রদান করা যায়। তবে বাকি সব মাজহাব মতে খাদ্য দিয়েই ফিতরা দিতে হবে, অর্থ দিলে হবে না কারণ হাদিসে খাদ্যবস্তুর উল্লেখ আছে, সম পরিমাণ অর্থমূল্য দেয়ার প্রচলন সাহাবাদের মধ্যে ছিল না। হাদিসে উল্লেখিত খাদ্যসামগ্রী অত্রাঞ্চলে সাধারণভাবে অপ্রচলিত থাকায় এই এলাকার আলমগণ তথা ইসলামী ফাউন্ডেশন খাদ্যের পরিবর্তে টাকা প্রদানের বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন বলে প্রতীয়মান।
খাদ্যবস্তুর পরিবর্তে যদি কাপড়চোপড় দিয়েও ফিতরা দেয়া যায়, তবে অত্র এলাকার প্রধান খাদ্য চাল দিয়ে কেন ফিতরা দেয়া যাবে না? এই বিষয়টি আমি কোথাও পাই না, অথচ এটি আমাদের জন্য অতীব জরুরি জিজ্ঞাসা। কোন উত্তর জানা থাকলে দেয়ার অনুরোধ করছি।
জাজাক-আল্লাহ
হাদীসে বর্ণিত ৫টি পণ্য সামগ্রীর যে কোনো একটির মূল্য ধরে সেই মূল্যের চাল আপনি দিতে পারেন। ধরুন ২৫০০ টাকা কেজি দরের আজওয়া আলিয়া খেজুর দিয়ে আপনি ফিতরা দিতে চাচ্ছেন। তাহলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম আজওয়া আলিয়া খেজুরের দাম আসবে ৮২৫০ টাকা। এখন আপনি এই টাকা দিয়ে কোনো পরিবারের জন্য কয়েক মাসের চাল কিনে দিতে পারেন। অথবা ২-১ মাসের চাল-ডাল-তেল-নুন-মাংস কিনে দিতে পারেন। আবার চাইলে নগদ ৮২৫০ টাকাও কোনো দরিদ্র লোককে ক্যাশও দিতে পারেন।
চাল দিয়ে ফিতরা দেয়া যাবে না – এটা বলার অর্থ হলো ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম চালের ওজন দিয়ে সেই টাকা বা ফিতরা হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল দেয়া যাবে না। যেহেতু চাল হাদীসে বর্ণিত ৫টি পণ্যের মধ্যে অনুপস্থিত।
আশা করি বুঝাতে পেরেছি।