পোস্টটি পড়া হয়েছে 1,181 বার

Innovation Boot Camp 2016: Summary

Post updated on 27th November, 2016 at 01:26 am

আজ ২৪ মে ২০১৬ ইং তারিখে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হল Product Innovation Boot Camp. এটি ছিল ন্যাশনাল হ্যাকাথন ২০১৬ এর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজয়ী ও কানেক্টিং স্টার্টাপের সেরা ৫০ টি দলকে নিয়ে একটি বুট ক্যাম্প। আয়োজনে ছিল আইসিটি ডিভিশন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, হাইটেক পার্ক অথোরিটি ও ব্যাসিস।
একটা ডিজিটাল প্রোডাক্টকে কিভাবে মার্কেটে আনা যায় বা একটা সাক্সেসফুল প্রোডাক্ট বা স্টার্টআপ এর কোন কোন গুণাবলী থাকতে হয় সে ব্যাপারে কিছু আলোকপাত করা হয়েছে। যেহেতু প্রোগ্রামটা ছিল হ্যাকাথন বিজয়ী ডেভেলপার ও সেরা ১৫টি স্টার্টআপ কোম্পানী নিয়ে তাই উভয় পক্ষকে লক্ষ্য করেই সেশনগুলো সাজানো হয়। আমি যেহেতু একজন ডেভেলপার তাই এই নোটটি লিখছি একজন ডেভেলপার হিসেবে আমার আজকের প্রাপ্তি এই বিষয়ে। এখান থেকে মূলত ডেভেলপাররাই হয়ত উপকৃত হতে পারবেন।
আমি অংশ নিয়েছিলাম Formigination টিমের মেম্বার হিসেবে। আমরা National Hackathon 2016 এর Road Traffice Accident ক্যাটাগরিতে 1st Runner Up হয়েছিলাম।
 

Asif Mahmud Shuvo, Mehedi Hasan, me and Nahid Ferdous. (from left) – Team Formigination

বুটক্যাম্পে সবচেয়ে বেশি enjoy করেছি কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত Mr. Sarim Aziz এর সেশনটি। যিনি বর্তমানে ফেসবুকের Strategic Product Partnerships Manager হিসেবে সিঙ্গাপুরে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর এই সেশনটি ছিল মূলত কিছু facebok tool, UX ও product এর কিছু best practice নিয়ে। সেগুলো উল্লেখ করছি। চাইলে পোস্টটা শেয়ার করতে পারেন, হয়ত অনেকের কাজে লাগবে। এই নোটটা মূলত Sarim Aziz এর সেশন নিয়েই লিখা।
(দেরি করে উপস্থিত হওয়াতে প্রথম দিকের অনেক কিছু মিস করেছি। সেগুলো কেউ চাইলে কমেন্ট করুন। এড করে দিব।)
Login with Facebook
এই স্লাইডে দেখানো হয় একটি এপের রেজিস্ট্রেশন এর একটা পেজ। যেখানে ই-মেইল ও পাসওয়ার্ডের ফিল্ড রয়েছে। জনাব Sarim Aziz বলেন, মানুষ সাধারণত পাসওয়ার্ড ভুলে যায় বা মনে রাখার কষ্ট করতে চায় না। তাই এপগুলোর রেজিস্ট্রেশন যদি ফেসবুকের মাধ্যমে করা যায় তাহলে ইউজারের জন্য ব্যাপারটা সহজ হয়। তিনি যেহেতু ফেসবুকের কর্মকর্তা তাই ফেসবুকের উপকারিতা বর্ণনা করাটা স্বাভাবিক 😛 কিন্তু ফেসবুক ইউজারের সংখ্যাটা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন অথচ ফেসবুক ব্যবহার করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দূরহ। যাই হোক, facebook account kit ব্যবহার করে এপের মাঝে পাসওয়ার্ডের ঝামেলামুক্ত অথেন্টিকেশন সম্ভব। ইউজাররা ই-মেইলের চেয়ে ফোন নাম্বার দিয়ে ফেসবুকে বা কোন এপে লগিন করতে আগ্রহ বোধ করেন। বিশেষ করে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে। তাই লগিনের সময় ফোন নাম্বারটি SMS এর মাধ্যমে ভেরিফাই করার দরকার হয়। যারা আজই নতুন account kit এর কথা শুনলেন, তাদের মাথায় যেই দুঃশ্চিন্তাটা এই মুহুর্তে শুরু হল “bulk SMS খরচ করে এপে লগিন করানো লাগবে? ফকির হয়ে যাব তো!!!” তো আপনার জন্য সুসংবাদ যদি আপনার এপের ইউজার লগিন মাসে ১ লক্ষ বারের চেয়ে বেশি না হয়। ফেসবুক ২৩০ টি দেশে এই সার্ভিসটি ১ লক্ষ SMS পর্যন্ত সাপোর্ট দিচ্ছে কোন রকম চার্জ ছাড়াই। অর্থাৎ আপনার একটা এপে প্রতি মাসে ১ লক্ষ নতুন ইউজার রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে আপনার গাঁটের পয়সা খরচ করা ছাড়াই! মজা না??? 😀
Save to Facebook
ধরেন, আপনি আমাদের একটা এপে ঢুকলেন। কিছু জিনিসপত্র দেখলেন। এপের কোন একটা কনটেন্ট যদি ফেসবুকে সেভ করে রাখতে পারেন আর কয়েক দিনের মধ্যে যদি সেই বিষয়ে ফেসবুকের থেকে একটা নোটিফিকেশন পান তাহলে ব্যাপারটা ভাল না? আমার এপের কনটেন্ট বা একটা প্রোডাক্ট ইউজার চাইলে তার ফেসবুক একাউন্টে সেভ করে রাখতে পারবে। ঐ প্রোডাক্টের লিংক, ছবি, ডেসক্রিপশন সহ বহুত হাবিজাবি জিনিস ফেসবুক স্টোর করবে। ৭ দিনের মধ্যে এইটা নিয়ে ফেসবুক ঐ ইউজারকে একটা নোটিফিকেশন দিবে। সবাই আমার এপ ইউজ নাও করতে পারে। বা ভুলেই যেতে পারে আমার এপ থেকে কিনতে চাওয়া কোন প্রোডাক্টের কথা। কিন্তু ফেসবুক নোটিফিকেশন দেখার পর কিন্তু আমার এই ইউজারটা আবার আমার এপে কিন্তু ফিরে আসবে। ডেভেলপার ও ইউজারদের জন্য ফেসবুকের এই নতুন সার্ভিসটি প্রোডাক্টে ইউজারের engagement-টা অনেক বেশি বাড়িয়ে দিবে।
Facebook Analytics
Google Analytics এর মাধ্যমে যেমন আমরা কোন সাইট বা এপের ইউজারের সংখ্যা সহ বিবিধ তথ্য জানতে পারি, Facebook Analytics এর সাহায্যে আমরা জানতে পারব কতজন ইউজার ফেসবুকের মাধ্যমে আমার এপে লগিন করেছে। তাদের অবস্থা কী? বক্তা এ পর্যায়ে বললেন দেখা গেছে ৩৩% ইউজার ফেসবুকের লগিন ব্যবহার করে থাকেন। আরো হাংকি-পাংকি অনেক কিছু বলেছেন আজিজ সাহেব, কিন্তু ইংরাজি ভাষার দূর্বলতার কারণে কিছু জিনিস মিস করে গেছি… :’(
Engagement to Product
প্রোডাক্টে ইউজারের engagement বাড়ানোর মানে হচ্ছে একজন ইউজারকে come back করানো। দেখা গেল আমাদের এপ কয়েক লক্ষ ডাউনলোড হল কিন্তু ইউজাররা ইন্সটল করার পর আর ফিরে আসছে না তাহলে কিন্তু প্রোডাক্টটা সাক্সেসফুল হবে না। Mr. Sarim Aziz বলেন কোন একটা প্রোডাক্টে ইউজারকে engage করাটা আসলে খুব কঠিন একটা ব্যাপার। একটা প্রোডাক্টের সফলতা নির্ভর করে এর উপরে। ব্যবহারির সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু পয়েন্টের কথা উল্লেখ করেন তিনি। খুব কমন হচ্ছে পুশ নোটিফিকেশন। বা ই-মেইলে রিমাইন্ডার দেয়া। আরেকটা দারুণ পয়েন্টের কথা উল্লেখ করলেন সেটা হচ্ছে ইউজার যদি নতুন কোন ইউজারকে ইনভাইট করে এপে নিয়ে আসতে পারে তার জন্য রিওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা। যেমন AppBajar এ কেউ এখান থেকে একাউন্ট করলে ১০ পয়েন্ট (১০ টাকা) বোনাস পাবেন। এই পয়েন্টগুলো দিয়ে বাংলাদেশি এই প্ল্যাটফর্ম থেকে এন্ড্রয়েড এপ কেনা যায়। আবার Backpack এ একাউন্ট খুললেই যেমন ৫০০ টাকা বোনাস পাওয়া যায় (এই লিংকে গিয়ে একাউন্ট করলে আপনিও পাবেন 😛 )। যা দিয়ে Amazon থেকে প্রোডাক্ট কেনা যায় বাংলাদেশ থেকেই! এপের বিস্তারে অরগানিক শেয়ার পাওয়া যায় আরেকটা ফিচার এড করতে পারলে। সেটা হচ্ছে ইউজার যদি তার বন্ধুদেরকে এপ বা এপের কোন একটা কনটেন্ট সম্পর্কে suggest করতে পারে। যেমন SoundCloud এর কোন একটা মিউজিক বন্ধুদেরকে সাজেস্ট করা যায়।
Facebook Messenger Bot
ধরেন আপনার একটা ই-কমার্স সাইট আছে। সেটার এপ আছে। লোকজন হয়ত আপনাকে ফোন দিয়ে সকাল সন্ধ্যা জিজ্ঞেস করে “ভাই আপনাদের শো-রুম কই? খালি কি ঢাকার মইধ্যেই ডেলিভারি দ্যান? জিনিস ভাল তো? ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ…”। আপনি কল সেন্টারে কয়েকজনকে বসিয়ে রেখেছেন। আর ২ জন রেখেছেন সাইটে মেসেজ আসে কিনা, ফেসবুকের পেজে কেউ নক দেয় কিনা সেগুলোর রিপ্লাই দিতে। আপনার এই প্যারা কমিয়ে দিতে পারে Facebook Messenger Bot. ফেসবুকের বট ইঞ্জিন ব্যবহার করে আপনি কমন কিছু প্রশ্নের উত্তর সেট করে দিতে পারেন। যেমন আপনার দোকান কখন খোলা থাকে, কবে অফ ডে, ওমুক প্রোডাক্ট কি এভেইলেবল কিনা ইত্যাদি। ৮০% ক্ষেত্রে bot সফলতার সাথে কাস্টমারের সাথে চ্যাট করতে পারে। বটের এটি বেটা ভার্সন চলছে। বট ব্যবহারে আপনার অনেক বড় একটা টিমের কাজ খুব সহজেই করে ফেলা সম্ভব। খরচও বাঁচল, কাস্টমারও খুশি…
মুটামুটি এই ছিল ফেসবুক কর্মকর্তার সেশন। অনেক কিছু হয়ত বাদ পড়ে গেছে। কমেন্টে সেগুলো বললে আমি আপডেট করার চেষ্টা করব। 🙂
আশা ভরসার সেশন
এই সেশনের নাম কী ছিল মনে নাই। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে আমাদেরকে বিপুল আশার বাণী শোনানো হয়। হ্যাকাথনে অংশ নেয়া দলগুলোকে আহ্বান জানানো হয় তাদের প্রোজেক্ট প্রোপজালগুলো ICT Division Innovation Fund এবং a2i এর Innovation Fund এর জন্য জমা দিতে। এছাড়াও বক্তারা বলেন যে কেউ চাইলে তার বা তার টিমের প্রোজেক্ট আইডিয়া এখানে সাবমিট করতে পারে ফান্ডিং এর জন্য। যদি প্রোডাক্টটা আসলেই ইনোভেটিভ হয়, ভোক্তাদের সময়, শ্রম ও অর্থ বাঁচায় তাহলে সেটিকে সরকার এই অনুদান দিয়ে থাকে। স্টার্টআপগুলোর ব্যাপারে বলা হয় সেরা স্টার্টআপগুলোকে কাজ করার জায়গা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
সকলের মুক্ত মতামতের ভিত্তিতে কিছু টপিকের উপর ওয়ার্কশপ-সেমিনার করার আশ্বাস দেয়া হয় LICT এর পক্ষ থেকে। যেগুলোতে অংশ নিতে পারবে হ্যাকাথন বিজয়ী দল ও সেরা স্টার্টআপগুলো। টপিকগুলো হচ্ছেঃ
  • UI, UX and Design
  • Digital Marketing
  • Product branding
  • Copyright issues and ICT Laws
এছাড়াও দলগুলোর মেন্টরিং এর জন্য কিছু টেকনিক্যাল পার্সোনদের assign করার কথা বলা হয়েছে যারা ডেভেলপারদের চুল পড়া কমাতে সাহায্য করবে। 😛 অর্থাৎ বিপদ আপদে আমরা যাদের কাছে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গেলে তারা সাহায্য করবেন।
ক্যাম্পের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় ধোয়া ওঠা চিকেন খিচুড়ি দিয়ে। বাইরে তখন গুড়িগুড়ি বৃষ্টি… 🙂
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *