Post updated on 1st September, 2021 at 06:52 am
পরিপূর্ণ জীবন বিধান ইসলামের সৌন্দর্যগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে এর দালিলিক অবস্থান। অর্থাৎ ইসলামের সকল আমল, সকল বিধানই দলিল নির্ভর। ইসলামী শরীয়তের জ্ঞানের মূল উৎস হচ্ছে কুরআন। এরপর হাদীস। এরপর সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ীনদের আমল। এগুলোর মধ্যেও কোনো বিষয়ের সরাসরি সমাধান খুঁজে না পাওয়া গেলে ইসলাম বিষয়ে অভিজ্ঞ আলেমগণ কুরআন-হাদীস বা সাহাবী, তাবেয়ীনদের আমলের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ইজমা বা কিয়াস করেন।
সাহরি ইফতার কখন হবে সেটা ইসলামী শরীয়তে খুব স্পষ্ট করে বলা আছে। কিন্তু আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই ইসলামের বিষয়ে নূন্যতম জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন না। ফলে সাহরি-ইফতারের সময়ের মত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়েও যে যার মত করে ধারণা পোষণ করে থাকেন। আমাদের অনেকের ভুল ধারণা আছে যে “আজান শেষ হওয়া পর্যন্ত সাহরি খাওয়া যায়। আর, ইফতারের জন্য নিজের এলাকার মসজিদের আজান শুনলেই শুধু ইফতার করা যাবে”।
আসলে ব্যাপারগুলো এমন না। আমরা কিছু ভুল ধারণার উপর বসে আছি। এই দুটি বিষয়ের উপর এখানে আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ। আলোচনাগুলো অবশ্যই “আমার মত” নয়। হাদীস ও আলেমদের মতগুলোকেই আমি এখানে উল্লেখ করার চেষ্টা করব। আশা করি “কত নতুন নতুন ফতোয়া শুনতেছি! হুজুরদের যা করলে সুবিধা হয় সে অনুযায়ী নতুন হাদীস বের করে” এই ধরণের গর্হিত কমেন্ট এই লেখার নিচে আসবে না।
ফজরের আযানের সময় সাহরি খেতে থাকলে রোজা শুদ্ধ হবে না
সাহরির শেষ সময় হচ্ছে সুবহে সাদিক। অর্থাৎ পুব আকাশে হালকা সাদা আলোর আভা দেখা যাবার সাথে সাথেই সাহরির সময় শেষ হয়। আর এই সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত ফজরের নামাজের সময় থাকে।
যেমনঃ আজকের সাহরির শেষ সময় যদি ভোর 3:42 হয়। তার মানে হলো সুবহে সাদিক শুরু হচ্ছে ৩টা ৪২ মিনিট থেকে। অর্থাৎ ৩টা ৪২ থেকে ফজরের সময় আরম্ভ হচ্ছে। রোজার সময় সুবহে সাদিক শুরু হবার ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই ফজরের আজান হয়ে নামাজের জামাত দাঁড়ায়। কিন্তু অন্যান্য সময় ফজরের আজান ও জামাত হয় আরো পরে। ফজরের জামাত শেষ হয় সূর্য ওঠার ১০-১২ মিনিট আগে।
তাই বুঝাই যাচ্ছে যে ফজরের আজান (ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার) আগে বা পরে হতে পারে। আজান শুরু হবার আগেই সাহরির শেষ সময় পার হয়ে যায়। ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সাথে সাথে সাহরির সময় শেষ হয়ে যায়। অতএব এটা মনে করার কোন কারণই নাই যে আজান হবার পূর্ব পর্যন্ত বা আজান শেষ হওয়া পর্যন্ত খাওয়া যাবে।
আজানটা সাহরির শেষ সময় নির্দেশ করে না বরং সুবহে সাদিকই সাহরির শেষ সময় নির্দেশক।
আযান দেয়ার সময় পানাহার করলে ঐ দিনের রোজাটা নষ্ট হয়ে যাবে। পরে আবার তার কাজা আদায় করতে হবে
তাই আমাদের সকলেরই উচিত নিজ নিজ এলাকার সুবহে সাদিক বা সাহরির শেষ সময় অনুযায়ী সাহরি খাওয়া শেষ করা। মসজিদের সাইরেন বা রেডিও-টিভির ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করার থেকে নিজেই সতর্ক হওয়া উত্তম। ভাল হয় সতর্কতার জন্য শেষ সময়ের ২-৩ মিনিট আগেই খাওয়া-দাওয়া শেষ করা।
উল্লেখ্য যে, আবু দাঊদ শরীফের এক হাদীসের বর্ণনায় পাওয়া যায় নবী (সাঃ) বলেছেন “আযান চলাকালীন সময়ে কেউ খেতে থাকলে সে যেন আযানের কারণে খাওয়া বন্ধ না করে। বরং তার প্রয়োজন পুরো হওয়া পর্যন্ত খাদ্যগ্রহন করে।” অনেকেই এই হাদীসের উপর আমল হিসেবে আযানের সময়েও খাদ্যগ্রহনের পক্ষে মত দেন।
তবে এই আজান বলতে ঠিক আমাদের দেশের মত আযানের কথা বুঝানো হয় নি। দুটি আযান দেয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত ছিল।
১ম আযান সাহরি খাওয়ার জন্য এবং ২য় আযান সাহরি খাওয়া শেষ করার জন্য। এজন্য দুজন মুআজ্জিনও আলাদা করা ছিল।
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
বিলাল (রাঃ) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকেন। কাজেই তোমরা (সাহ্রী) পানাহার করতে থাক; যতক্ষণ না ইব্নু উম্মে মাকতূম (রাঃ) আযান দেন।
বিলাল (রা) আজান দিতেন তাহাজ্জুদ আদায়কারীরা যেন ফিরে এসে সাহরি করে নেয় এবং ঘুমন্ত লোক উঠে যেন সাহরি করতে পারে সেজন্য।
আবদুল্লাহ ইব্ন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন :
বিলাল রাতে তোমাদের ঘুমন্ত লোকদের জাগানোর জন্য এবং সালাতরত লোকদের ফিরিয়ে আনার জন্য আযান দেন। তিনি ইশারায় বোঝালেন যে, সুবহে কাযিবের প্রকাশে ফজর হয় না।
আহমদ ইবন ইউনুস (র) আবদুলাহ্ ইব্ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন: বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে সাহরী খাওয়া থেকে বিরত না রাখে । কেননা, সে রাত থাকতে আযান দেয়- যেন তোমাদের মধ্যে যারা তাহাজ্জুদের সালাতে রত তারা ফিরে যায় আর যারা ঘুমন্ত তাদের জাগিয়ে দেয় । তারপর তিনি আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বললেন: ফজর বা সুবহে সাদিক বলা যায় না, যখন এরূপ হয়- তিনি একবার আঙ্গুল উপরের দিকে উঠিয়ে নীচের দিকে নামিয়ে ইশারা করলেন, যতণ না এরূপ হয়ে যায় ।
বর্ণনাকারী যুহাইর (র) তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলদ্বয় একটি অপরটির উপর রাখার পর তাঁর ডানে ও বামে প্রসারিত করে দেখালেন । [ অর্থাৎ আলোর রেখা নীচ থেকে উপরের দিকে লম্বালম্বিভাবে যখন প্রসারিত হয়, তখন প্রকৃতপে ফজরের ওয়াক্ত হয় না । ইহাকে ‘সুবহে কাযিব’ বলা হয় । কাজেই এ রেখা দেখে ‘সুবহে সাদিক’ হয়ে গেছে বলে যেন কেউ মনে না করে । তবে যখন পূর্বাকাশে আলোর রেখা উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত হয়, তখনই প্রকৃতপক্ষে সুবহে সাদিক ।]
আযান শুরু আগ পর্যন্ত কি সাহরি খাওয়া যাবে?
অতএব বুঝা গেল রাসূলের (সা) সময়ে যেই আজান পর্যন্ত খাওয়ার অনুমতি ছিল সেটা আমাদের বর্তমানের আজান নয়। কারণ এখন দুইটা আজান দেয়া হয় না। একটা আজানই দেয়া হয় আর তা হচ্ছে সুবহে সাদিক প্রকাশিত হওয়ার পর। অর্থাৎ উম্মে মাকতুম (রা) খাওয়া থেকে বিরত করার জন্য যেই আজান দিতেন। আর বর্তমানের ক্যালেন্ডারগুলোতে স্পষ্ট করে লেখা থাকে সাহরির সময় কখন শেষ হবে, কখন সুবহে সাদিক বা ফজরের ওয়াক্ত শুরু হবে। আমরা ফজরের ওয়াক্ত শুরুর সময়ের আগ পর্যন্ত খেতে পারি। সাধারণত ক্যালেন্ডারে ফজরের সময় শুরু হওয়ার ৪-৫ মিনিট আগের সময়কে সাহরির শেষ সময় বলে উল্লেখ করে থাকে। এটা বাড়তি সতর্কতার জন্য। কিন্তু আপনি চাইলে ফজরের ওয়াক্ত শুরুর যে সময় দেয়া থাকে তার আগ পর্যন্তও খেতে পারবেন।
আমাদের দেশের আযান শুরু হয় সুবহে সাদিকের পর। আর সাহরির শেষ সময় হচ্ছে সুবহে সাদিক শুরুর আগ পর্যন্ত। তাই আযান পর্যন্ত সাহরি খেতে থাকলে তার রোযা হবে না। কারণ সুবহে সাদিক শুরু হবার ৪-৫ মিনিট পর আযান দেয়া হয়। এই ৪-৫ মিনিট সময়ের মধ্যেও সাহরি খাওয়া যাবে না। অনেককে আযান পর্যন্ত সময় পান খেতে দেখা যায়। পান মুখে দিয়ে আযান পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলে রোযা হবে না। -শামী:২/৪০৫, উসমানী:২/১৮৬
এরপরেও অনেকে তর্কের খাতিরে বলবেন আযান শেষ হওয়া পর্যন্ত সাহরি খাওয়া যায়। তাহলে আমার একটা প্রশ্ন আছে। আমার বাসার পাশের ৪-৫ টা মজিদের আজান আমি শুনতে পাই। কোন মুয়াজ্জিনের আজান দিতে ২ মিনিট লাগে। কারো ৩ মিনিট। কারো ৪ মিনিট। আমি কোন্ মসজিদের আযান শেষ হলে খাওয়া শেষ করব? উত্তরটা কি এমন হবে যে, সর্বশেষ আযান শেষ হবার আগ পর্যন্ত খেতেই থাকব? কোন মসজিদে সাহরি শেষ হবার ১০ মিনিট পর আযান দিলে তাহলে কি আমার টার্গেট এই মসজিদের আযানই হবে? নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন লজিকটা কতখানি দূর্বল!!!
ইফতারের সময় কখন? ইফতারের জন্য এলাকার মসজিদে মাগরিবের আজান শোনা কি জরুরি?
রোজার সময় সীমা বা সাহরির শেষ ও ইফতারের শুরু বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায় (অর্থাৎ সুবহে সাদিক উদিত হয়)। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত।
সূরা বাক্বারা, আয়াত ১৮৭
আল্লাহ তায়ালা এখানে বলেছেন রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করার জন্য। কিন্তু সেই রাতের ব্যাখ্যা এখানে দেন নাই। এই রাত বলতে কি রাতের শুরু, নাকি বেলা ডুবার ১ ঘন্টা পরের রাত নাকি মধ্য রাত নাকি পর দিনের শেষ রাত তা এই আয়াত থেকে জানা যায় না। কিন্তু আল্লাহর রাসূলের (সা) এর হাদীস দ্বারা, সাহাবীদের (রা) আমল দ্বারা এটা সুস্পষ্ট যে এখানে রাত পর্যন্ত রোজা রাখা বলতে সূর্যাস্তকে বুঝানো হয়েছে।
আমাদের দেশে শিয়া সম্প্রদায়ের অপতৎপরতা খুব ভয়াবহ। অসংখ্য মুসলিমদেরকে তারা ঈমানহারা করে তাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করে ছলে-বলে-কৌশলে। এই শিয়া ধর্মের লোকেরা নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবী করে। তারা উপরের কুরআনের আয়াতের ব্যাখ্যা হাদীসের থেকে নেন না। তারা সাহরি করেন ভোর পর্যন্ত আর ইফতার করেন সূর্য ডোবার পর চারদিক পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে গেলে তারপর। তারা দলীল দেন এই আয়াত দিয়ে যে এখানে রাত পর্যন্ত রোজা রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু রাসূল (সা) যে সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করতে বলেছেন সেটা তারা মানেন না। তাদের এই অপতৎপরতাগুলো মুসলিম সমাজের মাঝে প্রচলিত আছে। পাঠকরা যদি দেখেন কেউ এই আয়াতের দলিল দিয়ে আপনাকে সূর্যাস্তের অনেক পরে গিয়ে ইফতার করতে বলছেন তাহলে নিঃসন্দেহে জেনে রাখুন ঐ লোক শিয়া ধর্মের অনুসারী। যথেষ্ট ইসলামী জ্ঞান সম্পন্ন না হলে তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত ও ইমান হারা হওয়ার সমূহ আশংকা রয়েছে। আল্লাহ এই লোকদের হাত থেকে আমাদের ঈমান-আমল হেফাজত করুন।
ইফতার শুরু হয় সূর্যাস্তের মাধ্যমে। আর মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরুও হয় সূর্যাস্তের পরে। মাগরিবের নামাজের সময় যেহেতু সংক্ষিপ্ত (১ ঘন্টা থেকে সোয়া ১ ঘন্টার মত), আর মাগরিবের সালাত ওয়াক্তের শুরুতে আদায় করা উত্তম। তাই সাধারনত সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই আজান দেয়া হয়ে থাকে। অন্যান্য সময় ৪-৫ মিনিট দেরি হলেও রোজার সময় সূর্যাস্তের সাথে সাথেই আজান দেয়া হয়। কেননা আমরা আযান শুনেই ইফতার করতে অভ্যস্ত বা ইফতারের শুরুর সময় ও মাগরিবের শুরুর সময় একই।
অনেক জায়গায় দেখি নিজ এলাকার বাইরের কোন মসজিদের আজান শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ সূর্য ডুবে গেছে (বা ইফতারের সময় হয়ে গেছে) কিন্তু রোজাদাররা নিজ এলাকার মসজিদের আজান শোনার অপেক্ষায় ইফতার শুরু করছেন না। আসলে এর দরকার নাই। কেননা একই দেশের পাশাপাশি দুই মহল্লার মধ্যে সূর্যাস্তের সময় একই হয়ে থাকে। কোন মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেবের হয়ত কোন কারণে আজান দিতে দেরি হতে পারে।
আবার দেখা যায় ঢাকা জেলার জন্য রেডিও বা টিভিতে মাগরিবের আজান প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু রোজাদারেরা ইফতার করছে না। প্রায় সব টিভি বা রেডিওতেই ঢাকার স্থানীয় সময়ের উপর ভিত্তি করে আজান প্রচারিত হয়ে থাকে। তাই ঢাকার বাসিন্দারা রেডিও-টেলিভিশনের আযান শুনে ইফতার করলে কোন সমস্যা নাই। কারণ ঢাকা জেলার সূর্যাস্তের সময়ের সাথে ৩ মিনিট সতর্কতামূলক সময় যোগ করেই রেডি-টিভিতে আযান প্রচার করে থাকে। এর চেয়ে বেশি সতর্কতা অবলম্বন নিঃষ্প্রয়োজন। তবে খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে রেডিও-টিভিতে ভুলক্রমে ইফতারের আগেই আযান হওয়ার ব্যাপারে ইদানিং শোনা যাচ্ছে। তাই সঠিক সময়ে সে আযান হচ্ছে কিনা সেটাও পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
অনেকে মনে করতে পারেন যে রেডিও-টিভিতে আগে ভাগে আযান দেয়। মসজিদে দেরিতে দেয়। দেরি করে ইফতার করাটাই সেফ। কিন্তু ঘটনা অন্য রকম। মুয়াজ্জিন সাহেবরা অনেক সময়েই রেডিওর আজান শুনে আগে পানি পান করেন বা একটা খেজুর খেয়ে ইফতার করেন এবং এরপর আজান দিয়ে থাকেন। লক্ষ্য করে দেখুন, হুজুরই কিন্তু রেডিওর সময়টা ফলো করছেন। কারণ সেটা ভুল হবার আশংকা কম। টেলিভিশন-রেডিওর আজান আর মসজিদের আজানের মধ্যে কিছু সময়ের পার্থক্য হয়। তবে সেই পার্থক্যটা আধা মিনিটের বেশি না। আর পার্থক্যটা হয়ে থাকে মূলত মুয়াযজ্জিন সাহেবের পানি মুখে দেয়ার কারণেই।
বাড়তি সতর্কতার জন্য আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে ইফতার করতে পারি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ক্যালেন্ডারে সাধারণত সূর্যাস্তের ৩ মিনিট পরে ইফতারের সময় দেয়া থাকে। তবে আপনি যদি মনে করেন সতর্কতামূলক সময়ের আগেই সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করবেন তাহলে নিজ দায়িত্বে সেটা করতে পারেন। এই প্যারা লিখার উদ্দেশ্য হল আমরা যেন কোন ভুল ধারণা নিয়ে, দেরি করে ইফতার না করি। দেরিতে ইফতার করলে যেন সেটা হয় বাড়তি সতর্কতার জন্য ২-৩ মিনিট, বাড়াবাড়ি যেন না হয়। কারণ ইফতারের সময় হয়ে গিয়েছে মনে করে ইফতার করা হল কিন্তু আসলে ইফতারের সময় হয় নাই, তাহলেও রোজাটি নষ্ট হয়ে যাবে। যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে ইফতারের সময় হয়ে গেছে তাহলে উচিত ইফতার করে ফেলা। কারণ সময় হয়ে যাবার সাথে সাথেই ইফতার করা রাসূলের (সাঃ) সুন্নাহ।
সূর্যাস্তের সাথে ২-৩ মিনিট সতর্কতামূলক সময় যোগ করলে কি তা ইহুদী-খৃষ্টানদের অনুসরণ করা হবে?
অনেক ভাইয়েরাই ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ৩ মিনিট সতর্কতামূলক সময়ের তীব্র বিরোধিতা করে একে সু্ন্নতে খেলাফ, বিদআত, ইহুদী-নাসারাদের অনুসরণকারী বলে থাকেন। তাদের প্রতি অনুরোধ একটু বড় আকারে চিন্তা করার জন্য। অনুরোধ থাকবে ফিকহী ইখতিলাফী বিষয়ে অপর মতটিকে শ্রদ্ধা করার জন্য। আপনারা হানাফী ফিকহ অনুসরণ না-ই করতে পারেন। আপনারা আপনাদের ফিকহী মাজহাব অনুসরণ করেন, কিন্তু অন্য মাজহাবের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন কেন? সূর্যাস্তের approximate সময়ের সাথে ২-৩ মিনিট সময় যোগ করলেই তাকে ইহুদী-খৃষ্টানদের অনুসরণ বানিয়ে দেয়া কি সঠিক? ইহুদীরা কি ২-৩ মিনিট পর ইফতার করত? নাকি রাতের আকাশে তারকা উদিত হওয়ার পর ইফতার করত? আল্লাহ আমাদের সবাইকে নমনীয় হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।
আহলে হাদীসের অনেক ভাইয়েরাই আবহাওয়া অফিস থেকে প্রাপ্ত সূর্যাস্তের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করার ব্যাপারে জোর দেন। তাদের অনেকেই আবার, যারা সূর্যাস্তের সময়ের সাথে ৩ মিনিট সতর্কতার জন্য যোগ করে ইফতার করেন তাদেরকে ইহুদী-নাসারাদের অনুসরনকারী বলে থাকেন। নাউযুবিল্লাহ!
এজন্য তারা দলিল হিসাবে এই হাদীসটি উল্লেখ করে থাকেনঃ
সাহল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: লোকেরা যতদিন শীঘ্র ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে।
আহলে হাদীস অনুসারী ভাইদের প্রকাশনা সংস্থা তাওহীদ পাবলিকেশন্সের বুখারী শরীফের উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় এই কথাগুলো লিখা হয়েছেঃ
হাদীসে জলদি জলদি ইফতার করার জন্য খুব তাগিদ দেয়া হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতে হবে। চোখে সূর্যাস্ত দেখে ইফতার করা যায় । সূর্যাস্ত দেখতে না পাওয়া গেলে সূর্যাস্তের সময়সূচী বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস থেকে সংগ্রহ করা যায় । রেডিও ও টেলিভিশনে সূর্যাস্তের সময় ঘোষণা করা হয়, খবরের কাগজেও সূর্যাস্তের সময় লেখা হয় । আমাদের দেশে ইফতারের সময়সূচী প্রকাশ করা হয়-যেগুলিতে সূর্যাস্তের সময়ের সাথে ১ মিনিট বা ২ মিনিট বা ৫ মিনিট যোগ করে ইফতারের সময় বলে লেখা হয় । কিন্তু হাদীসে উল্লেখিত কল্যাণ লাভ করতে চাইলে সূর্যাস্তের সময় জেনে নিয়ে সাথে সাথেই ইফতার করতে হবে । সূর্যাস্ত হয়ে গেলেও ইফতার না করে বসে বসে অন্ধকার করা ইহুদী ও নাসারাদের কাজ । (আবূ দাউদ ২২৫৩, ইব্নু মাজাহ ১৬৯৮)
তাদের কথাতেই পাওয়া যাচ্ছে উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা যে, সূর্যাস্ত হয়ে গেলেও ইফতার না করে বসে বসে অন্ধকার করা ইহুদী ও নাসারাদের কাজ। ভাইয়েরা! আমরা যারা ২-৩ মিনিট পরে ইফতার করি তারা কি বসে বসে অন্ধকার পর্যন্ত অপেক্ষা করি? নাকি তখনও বাইরে পুরোপুরি দিনের আলো বিদ্যমান থাকে? নিঃসন্দেহে তখনও অন্ধকার হতে অনেক সময়ই বাকি থাকে।
আপনারা আবহাওয়া অফিস, রেডিও-টেলিভিশন বা পত্রিকায় প্রকাশিত সূর্যাস্তের সময়ের সাথে সাথে ইফতার করে থাকেন। এতে কারো কারো রোজার যেমন কোনো ক্ষতি হবে না, কিন্তু অনেকের রোজাই নষ্ট হতে পারে।
আমরা কী কারণে আবহাওয়া অফিস, রেডিও-টেলিভিশন, পত্রিকা কিংবা GPS এর তাকলীদ করি না? যেসকল কারণে আমাদের কাছে মনে হয়েছে GPS নির্ভর সূর্যাস্তের সময়ের সাথে সতর্কতামূলক সময় যোগ করা উচিত সে বিষয়গুলো নিচে তুলে ধরছি।
জেলা শহরের কেন্দ্র থেকে দূরত্ব
সাভার উপজেলা ঢাকার মধ্যে পড়ে। আবার ডেমরাও ঢাকার মধ্যে পড়ে। এই দুই জায়গার মধ্যে সড়কপথে ৩০-৪০ কিলোমিটারের পার্থক্য। কোনো একটা স্থান থেকে প্রতি কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমের সাথে সাথে সূর্যাস্তের সময় আড়াই সেকেন্ড এর মত পরিবর্তন হতে পারে। গুগলে সূর্যাস্তের সময় সার্চ করলে বা আবহাওয়া অফিস থেকে সাধারণত জেলা শহরের কেন্দ্রের সূর্যাস্তের সময় দেখানো হয়। সেই কেন্দ্র থেকে আপনার বাড়ি যত দূরে হবে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় তত পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাহলে কেন্দ্রের সময়ে অনেক দূরের স্থানের কেউ ইফতার করলে তার রোজা হবে কি? সতর্কতামূলক সময় যোগ করার ক্ষেত্রে এটা একটা কারণ।
অ্যাপ থেকে সূর্যাস্তের approximate বা rounded সময় পাওয়া
বর্তমানে অনেক অ্যাপ আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি কোনো একটা লোকেশনের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের approximate (আনুমানিক) সময় বের করতে পারবেন। যেমন আমাদের ডেভেলপ করা Muslims Day App এর মাধ্যমে GPS location ব্যবহার করে আপনার বাড়ির সাপেক্ষে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় দেখতে পারবেন।
সেক্ষেত্রেও যে কোনো অ্যাপে দেখানো বা গুগল সার্চে দেখানো সূর্যাস্তের সময়ের সাথে সাথে ইফতার না করে ২-১ মিনিট পর ইফতার করা সেফ। কারণ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়টা যদি অ্যাপ নির্ভর বা আবহাওয়া অফিস থেকে প্রাপ্ত হয় সেক্ষেত্রে যে সময়টা পাওয়া যায় সেটা approximate সময়। এটা রাউন্ডেড ভ্যালু। সূর্যাস্তের মত মহাজাগতিক একটা বিষয় সুইচ টিপে বাতি বন্ধ করার মত এক মুহূর্তের মধ্যেই ঘটে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে সময় হলো আর সূর্য টুপ করে ডুবে গেল। এই ঘটনাটি ঘটতে সময় লাগে। আস্তে আস্তে সূর্য অস্ত যায়। অনেকটা সময় নিয়ে।
ধরুন, অ্যাপে সূর্যাস্তের সময় ৬ টা বেজে ২৪ মিনিট দেখানো হলো; কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সূর্যাস্ত হতে পারে ৬টা ২৪ মিনিট ২৫ সেকেন্ড ৪৬৭ মিলিসেকেন্ডে। অ্যাপে বা আবহাওয়া অফিস থেকে ২৪ মিনিটের পরের এই ২৫ সেকেন্ড ৪৬৭ মিলিসেকেন্ড বাদ দেয়া হয়। কারণ এই ২৫ সেকেন্ড ignorable.
কিন্তু একজন রোজাদারের জন্য ২৫ সেকেন্ড কিন্তু ইগনোর করা যায় না। সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করার জন্য যদি ৬টা ২৪ মিনিটেই আপনি ইফতার করেন, যা মূল সূর্যাস্তের ২৫ সেকেন্ড আগে… তাহলে কিন্তু আপনার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমরা বলবো, জিপিএস এর মাধ্যমে সূর্যাস্তের সময়ের সাথে অন্তত ২-১ মিনিট যোগ করে ইফতার করুন।
টেকনিক্যাল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার পরেও যদি আপনি কোনো অ্যাপ বা গুগলের অন্ধ অনুসরণ করেন। আর আল্লাহ না করুন রোজাগুলো যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন কোনো অ্যাপ বা গুগলকে দোষারোপ করে কি বাঁচা যাবে? আমার জানা নাই। আপনি যদি হানাফী আলেমদের তাকলীদ করে জিপিএস নির্ভর পদ্ধতির সাথে ২-৩ মিনিট যোগ করে ইফতার করেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার রোজা নষ্ট হওয়ার আশংকা নাই। কিন্তু তা না করে যদি গুগল, আবহাওয়া অফিস বা কোনো অ্যাপের তাকলীদ করেন সেক্ষেত্রে আপনার ২-১ টা রোজা নষ্টও হতে পারে (আল্লাহ না করুন)। তাই সিদ্ধান্ত আপনার।
সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত হিসাব করা হয় সমতল ভূমির সাপেক্ষে
সূর্যাস্তের সময় নির্ধারন করা হয় সমতল ভূমির সাপেক্ষে। কিন্তু ধরুন আপনি ২০-২৫ তলা বিল্ডিংয়ের উপরে আছেন। তখন কিন্তু সূর্যাস্তের সময় আপনার জন্য একই থাকবে না। সমতলে দাঁড়িয়ে যখন কেউ দেখবে সূর্য অস্তমিত হয়েছে আপনি হয়ত আরেকটু বেশি সময় সূর্যকে দেখতে পারেবেন। এজন্য দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার ৮০ তলা থেকে ১৫০ তলার বাসিন্দারা অন্যদেরে চেয়ে ২ মিনিট পর ইফতার করেন। এর উপরে যারা আছেন তারা ৩-৪ মিনিট পর ইফতার করেন।
অপর দিকে, আপনি যদি খনিতে বা বিল্ডিংয়ের কয়েক তলা নিচে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা অবস্থায় ইফতার করতে পারেন। সেখানের সময়ও কি সমতলের সাথে একই সময়ে হবে?
সতর্কতামূলক সময় যোগ করার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হয়েছে। তাই আমাদের কাছে মনে হয়, হানাফী আলেমদের মত অনুযায়ী ইসলামিক ফাউন্ডেশন সতর্কতামূলক সময় হিসাবে যে ৩ মিনিট সময় যোগ করেন তা যথার্থ। সকলের ক্ষেত্রে এই ৩ মিনিট সতর্কতা জরুরি না হলেও, অবস্থান ভেদে অনেক মানুষের জন্যই তা জরুরি।
আহলে হাদীসের সম্মানিত ভাইয়েরা, চাইলে উপরের কারণগুলো বিবেচনা করে আপনারাও সতর্কতামূলক ২-১ মিনিট সময় যোগ করতে পারেন। সেটা না চাইলে অন্তত উম্মাহ এর মাঝে বিভ্রান্তি আর ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করবেন না। অনুগ্রহ করে নিজেদের নফসে আম্মারার অনুসরণ করে আমাদেরকে ইহুদী-খৃষ্টানদের অনুসারী বানাবেন না।
সবাই সব বিষয়ে একমত হবেন এটা জরুরি না। কিন্তু কারোর সাথে মতের পার্থক্য না হলেই তাকে অমুকের অনুসারী, তমুকের দালাল ইত্যাদি ট্যাগ দেয়া তো উচিত না। এটা উভয় দলের প্রতিই অনুরোধ। যারা আমরা মাজহাব অনুসরণ করি আর যারা করি না, উভয়ের জন্য।
আসুন উম্মাহকে ইমান কী সেটা বুঝাই। ইসলাম কী সেটা বুঝাই। হালাল-হারাম, ফরজ-ওয়াজিব, আক্বিদা এগুলোর দাওয়াত দেই। তা না করে নিজেদের মূল্যবান সময় যদি ফিকহী ইখতিলাফের বিষয়ে একে অন্যের ভুল ধরে আর বাহাস করে ব্যয় করি এতে কার কতটা লাভ? হানাফী-আহলে হাদীস উভয় মতের অনুসারীদের জন্য বিষয়গুলো যেন এমন না হয়, যেখানে মানুষের সতর ঢাকার মত প্রয়োজনীয় কাপড়ের অভাব রয়েছে। কিন্তু আমরা সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছি পাগড়ি পরার ফজিলতের ব্যাপারে।
আল্লাহ আমাদেরকে সকল ক্ষেত্রের প্রান্তিকতা থেকে দূরে রাখুন। আমীন।
রেফারেন্স
- সুবহে সাদিক ও ফজরের ওয়াক্ত কখন শুরু? – মাসিক আলকাউসার
- ফজরের আজানের সময় সাহরি খেলে রোযার হুকুম কী? – মুফতি লুৎফর রহমান ফরায়েজী
[এটা কোন মৌলিক লেখা নয়, আর আমিও ইসলামের কোন পন্ডিত ব্যক্তি নই। আমি বিভিন্ন রিসোর্স থেকে কিছু তথ্য একত্রে লিখেছি মাত্র। কোথাও কোন ভুল পরিলক্ষিত হলে অনুগ্রহ করে জানাবেন। আমি ঠিক করে দিব। দীর্ঘ লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে হয়ত তার কিছু কনসেপ্ট ক্লিয়ার হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যান দান করুন]
এখানে ইফতারের সময় নিয়ে যেটা বলা হয়েছে সেটা স্পষ্টত ভুল। সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করার জন্য রাসূল স. বারবার তাগিদ দিয়েছেন। আর সতর্কতামূলক ৪/৫ মিনিট দেরি করা ঠিক নয়, সেটা ইহুদি নাসারাদের কাজ। রাসূল স. সহিহ বুখারীতে বলেছেন, আমার উম্মতগণ ততদিন কল্যাণের উপর থাকবে যতদিন তারা তাড়াতাড়ি ইফতার করবে। তাই বিজ্ঞানের এই যুগে আজানের জন্য অপেক্ষা নয়, বরং সূর্যাস্তের সময় অনুযায়ী সাথে সাথে ইফতার করাই অধিক মঙ্গলকর। বিষয়টি ক্রস চেক করে নিবেন ইনশাল্লাহ।
সতর্কতামূলক ৪/৫ মিনিট দেরি করে ইফতার করার কথা বলা হয় নাই এখানে। বলা হয়েছে রমজান ছাড়া অন্য সময় হয়ত আজান দেয়ার ক্ষেত্রে ৪/৫ মিনিট দেরি হতে পারে মসজিদে। যেটা ফজরের আজানের ক্ষেত্রেও হয়। হাদীসে ইহুদী-নাসারাদের দেরী করে ইফতার করার কথা পাওয়া যায়। সেটা ৪/৫ মিনিট দেরি কিনা আমার জানা নাই। শিয়ারা আরো দেরি করে ইফতার করে। আকাশ পুরোপুরি কালো হয়ে যাবার পর। সতর্কতামূলক সময় হিসাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩ মিনিট সময়ের হ্রাস-বৃদ্ধি করে থাকে। সেটা যুক্ত করে দিয়েছি। আপনার এ বিষয়ে আপত্তি থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাথে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। ধন্যবাদ।
Suvan Allah
খুব সুন্দর হয়েছে আর উপকারিও
ধন্যবাদ
সেহরি খাওয়া ছাড়া কি রোজা হবে? অর্থাৎ কিছু না খেয়ে নিয়ত করে রোজা রাখলেই কি ফরজ রোজা পালন হয়ে যাবে? দয়া করে কেউ জানাবেন।
আর্টিকেলের শেষ প্যারায় এটা নিয়ে ছোট্ট করে বলা হয়েছে। রোজা রাখার জন্য সাহরি খাওয়া ফরজ বা ওয়াজিব নয়। সাহরি খাওয়া সুন্নাহ। রাসূল (সা) সাহরি খাওয়ার জন্য স্ট্রংলি রিকমেন্ড করেছেন। নফল রোজা রাসূল (সা) কিছু না খেয়েও রেখেছেন। নিয়তের ব্যাপারে আমার ব্লগের এই লেখাটি পড়তে পারেন।
গতরাতে টেরপাইনি,আযান দেয়া অবস্থায় ঘুম ভেঙেছে, দুটো খেজুর খেয়ে পানি খেয়েছি, রোযা কি হবে?
আমি ২-৩ টি প্যারার মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে আযানের সাথে সাহরি খাওয়ার সময়ের কোনো সম্পর্ক নাই। সাহরি খাওয়া যাবে সুবহে সাদিক হবার আগ পর্যন্ত। আর সুবহে সাদিকের সময় থেকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়। সুবহে সাদিক শুরু হবার সময় থেকে সূর্য ওঠা শুরু হবার (অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্ত শেষ হবার) আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়েই আজান হতে পারে। আমাদের দেশে সাহরির সময় শেষ হয়ে যাবার ৬-১০ মিনিট পর আজান দেয়া হয়। সে হিসাব মতে আপনি সে রাতে সাহরির সময় শেষ হবারও ৬-১০ মিনিট পর পানাহার করেছেন। তাই আপনার রোজাটি শুদ্ধ হবার কথা নয়। রমজানের পর এটার কাজা আদায় করে নিতে হবে।
ধন্যবাদ
গোড
ভালো লাগ্লো
ইফতারের সময় কুরআন ও হাদিস মতে বলবেন কি?
কুরআনে বলা হয়েছে “রাত পর্যন্ত রোজা রাখ”। হাদীসের বা সাহাবাদের আমল দ্বারা এর explanation পাওয়া যায়। তা হচ্ছে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে। তবে শিয়া ধর্মের অনুসারীরা হাদীস বা সাহাবাদের এই আমলের অনুসরণ করেন না। তারা চারিদিক পুরোপুরি অন্ধকার না হলে ইফতার করেন না। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন এখান থেকে।
আলহামদুলিল্লাহ….খুব সুন্দর আলোচনা
খুব সুন্দর ভাই
না জানার কারনে আমি আগে আজানের সময় পর্যন্ত সাহরি খেয়েছি। সেই রোজা গুলা কি কাজা আদায় করতে হবে?
আপু, এটা আমি নিশ্চিত নই। রোজার পরিমাণ কম হলে রমাদানের পর কাজা আদায় করে নেয়াটাই সম্ভবত সেফ সাইডে থাকা হবে। আর আগের বছরগুলোতেও এরকম হিসাব না থাকলে কী করতে হবে আমি ঠিক বলতে পারছি না। কোনো মুফতী সাহেবের কাছ থেকে এ ব্যাপারে ফতোয়া জেনে নিতে পারেন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আশা করি উত্তরটি পাব।
আমি সতর্কতা অনুযায়ী ফজর শুরু হবার ৮মিনিট আগেই সেহরি খাওয়া শেষ করে দিতাম,অন্য এপের ক্ষেত্রে যা করতাম। আমি কি তাহলে সিউর এই এপের ফযরের সময় শুরু হবার ১মিনিট আগ পর্যন্তও সেহরি খেতে পারবো নিশ্চিত? আমারটা GPS সেট করা আছে নিজের লোকেশন।
জ্বি ইনশাআল্লাহ আপনি সাহরির সময় শেষ হওয়ার ১ মিনিট আগ পর্যন্ত সাহরি খেতে পারেন। ব্যক্তিগত ভাবে আমিও জিপিএস সেট করে সেটিংস থেকে ১ মিনিট সতর্কতামূলক সময় যোগ করে রাখি। তবে খেয়াল রাখতে হবে সময় ঠিক দেখায় কিনা। কারণ ফোনের জিপিএস সিগনাল যদি একুরেট না হয় তাহলে সময় ভুল দেখাবে। বাসার ভিতরে থাকলে বা ফোনের জিপিএস দুর্বল হলে অনেক সময়ই এক্সাক্ট লোকেশন দেখাতে ব্যর্থ হতে পারে। তাই সাহরি-ইফতারের আগে কিছুটা সতর্ক থাকা ভাল।
আমি যেভাবে সতর্ক থাকিঃ ইফতারের ক্ষেত্রে গুগলে সার্চ করে দেখি সূর্যাস্তের সময় কখন। আর সাহরির ক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বা অন্য কোনো ক্যালেন্ডারে দেখি সাহরির শেষ কখন। অ্যাপের সময় যদি ক্যালেন্ডারের সাথে মিলে বা ২-৩ মিনিট এদিক-ওদিক হয় তাহলে ধরে নিই অ্যাপের সময় ঠিক আছে।
জাজাকাল্লাহ ভাই।আজকে আমি একটা কনফিউশানে পড়েছিলাম (আযান হলেও খাওয়া যাবে এ মর্মে হাদিসটা একজন আলেম পেশ করায়)।بارك الله في علمك
ধন্যবাদ
আমাদের মসজিদে মাইকের সমস্যা থাকার কারণে মুয়াজ্জিন সর্তকতা ৩ মিনিট মেনে ইফতারের ২০-৩০ সেকে. আগে আজান বা হুইসেল দেয়। এতে কি রোজার ত্রুটি হবে??
ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা হবে না। সতকর্তামূলক সময় মেনে তার ২০-৩০ সেকেন্ড আগে ইফতারের সময় হয়ে যায়। তখন ইফতার করলেও ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা নাই। তবে জেলা শহর থেকে বেশি দূরে অবস্থান করলে তখন ৩ মিনিট সতর্কতামূলক সময় পুরো করে ইফতার করলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়।
আপনি তো উল্লেখ করেছেন অ্যাপের মাধ্যমে সূর্যাস্তের একুরেট সময়টি জানা যায়। আমি যদি অ্যাপে দেওয়া সূর্যাস্তের সময়ে ইফতার করি কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমি আমার বাড়ির সাপেক্ষে সূর্যাস্তের সময়ে ইফতার করব যেহেতু অ্যাপ এর সেটিংস এ সূর্যাস্তের সময়ের সাথে ইফতারের সময় অ্যাড করার অপশন আছে। তাই আমি যদি দ্রুত অর্থাৎ ঠিক সূর্যাস্তের সময় মত ইফতার করি কোন প্রবলেম হবে না তো? আপনার মত কি জানতে চাই?
কিন্তু ভাই আমার মোবাইলের লোকেশন অনুযায়ী সময় এবং টিভি এর সমই এক হইনা কারণ আমি ঢাকা হতে অনেক দূরে থাকি তবে কি করবো
টিভিতে ঢাকার সময় অনুযায়ী আজান দেয়। অনেক দূরে থাকলে মিলবে না এটাই স্বাভাবিক। আমাদের অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনার জেলা সিলেক্ট করে রাখতে পারেন।
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম।
ভাইয়া একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম। আমাদের এলাকার মসজিদগুলোতে মাগরিবের আযান ইফতারের সময় হওয়ার আগে দিয়ে দেয়।
এই যেমন ধরুন- গতকাল চট্টগ্রামে ইফতারের শেষ সময় ছিল বিকাল ৬ঃ২০মি.
অথচ মসজিদগুলোতে আযান আনুমানিক ৩/৪ মিনিট আগে দিয়ে দিয়েছে। ব্যাপারটা আগে খেয়াল করেছিলাম কিন্তু গুরুত্ব দিইনি। কালকে ব্যপারটি লক্ষ্য করলাম।
এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি? জানলে উপকৃত হবো। ইনশাআল্লাহ।
@রেদোয়ান
অ্যাকুরেটলি জানা যায় তবে এখানে কথা আছে। ২০-৩০ সেকেন্ড বা কম-বেশি হতে পারে যে কোনো অ্যাপ থেকে পাওয়া সূর্যাস্তের সময়। সূর্যাস্তের যে সময় দেখানো হয় গুগলে বা কোনো অ্যাপে, সেগুলো রাউন্ডেড ফিগার। অর্থাৎ মিলি সেকেন্ড ও সেকেন্ডের হিসাব বাদ দেয়া হয়। তাই আমি অ্যাপে দেখানো সূর্যাস্তের সময়ের সাথে ২-১ মিনিট যোগ করে ইফতার করি। যা ইসলামিক ফাউন্ডেশন বা এলাকার মসজিদের চেয়ে আগে হয়।
@Ashique Ridwan
অনেক জেলাতেই নিজস্ব সাহরি ইফতারের ক্যালেন্ডার থাকে। হয়ত আপনার এলাকায় সেরকম কোনো ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়। আমরা আমাদের অ্যাপে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় ভাবে প্রকাশিত সময়সূচী অনুসরণ করি। আপনি একটা কাজ করে দেখতে পারেন। জিপিএস সিলেক্ট করে আর জেলা সিলেক্ট করে আপনার ওখানকার সাহরি-ইফতারের সময়ের পার্থক্য কী রকম হয় দেখতে পারেন। যদি ২-১ মিনিট পার্থক্য হয় তাহলে যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন (জিপিএস বা জেলা সিলেক্ট)। আর যদি দেখেন পার্থক্য অনেক বেশি হচ্ছে তাহলে জিপিএস পদ্ধতি সিলেক্ট করে ২-৩ মিনিট সতর্কতামূলক সময় সেট করতে পারেন। পাশাপাশি গুগল থেকেও মিলিয়ে নিবেন জিপিএস পদ্ধতি সিলেক্ট করার পর সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় মিলছে কিনা
ধন্যবাদ।
করতেন, যখন তাঁরা রাতের অন্ধকার দেখতে পেতেন। । অতঃপর তাঁরা ইফতার করতেন। আর এ কাজ তারা করতেন রমজান মাসে ।
[মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ৬২৪]
হাদীসের মানঃ যঈফ
কেননা, এর সনদে ইনক্বিতা’ (বিচ্ছিন্নতা) রয়েছে । ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সানাদটি মুনকাতি, কেননা হুমায়দ বিন আব্দুর রহমান, উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) {মৃঃ ২৩ হিঃ} এর যুগ পান নি ও উসমান বিন আফফান (রা) {মৃঃ ৩৫ হিঃ} থেকে ও শুনেন নি বা তার যুগ ও পাননি।
তাই এর সানাদটি দ্বঈফ বা দুর্বল।
—————————————
আবরারের পোস্টঃ
https://www.facebook.com/1042397619285860/posts/1685359698322979/
ফেসবুক থেকে সংগৃহিত
আপনার কমেন্টের প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। আবরার সাহেবের উল্লেখিত হাদীসগুলো দিয়ে আমি কোনো দলিল দিয়েছি বলে মনে পড়ে না।
আমি একটি প্রশ্ন করতে চাই। আপনি কি ভোর পর্যন্ত সাহরি করেন? আর রাতের বেলা ইফতার করেন?
আপনার উত্তর থেকে আমি যদি ভুল না বুঝে থাকি আপনি ফজরের ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পরেও সাহরি করাকে শুদ্ধ মনে করেন। যেটা আমার জানা মতে শিয়া ধর্মের অনুসারীরা করে থাকে। (যদিও আপনি বলেছেন আপনি শিয়া/সুন্নী/হানাফী/মালেকী… কোনো দলের অন্তর্ভুক্ত নন)।
যাই হোক, আমি ইসলাম বিষয়ে পন্ডিত কোনো ব্যক্তি নই। কুরআনের ভাষা, তাফসীর, হাদীসগ্রন্থ, সেগুলোর ব্যাখ্যা ইত্যাদি বিষয়ে আমার জ্ঞান শূন্য। এজন্য দ্বীন মানার ক্ষেত্রে সহযোগি হিসাবে ফিকহী মাসআলার জন্য আমি হানাফী মাজহাবের অনুসরনে হাদীসের উপর আমল করি। হানাফী মাজহাব সহ অন্যান্য প্রসিদ্ধ মাজহাবগুলোর সকল আলেমের মতই হচ্ছে “আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না রাতের কাল রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত হয়। (সূরা বাকারা ১৮৭)” এই আয়াত
দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে সুবহে সাদিক। আপনার বুঝ বা আপনার মতে এটার ভিন্ন ব্যাখ্যা হয়ে থাকলে সেটা নিতান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
আমার জানা নাই এই আয়াত দ্বারা সুবহে সাদিককেই কেন বুঝেছেন ইমামগণ। আমি তাদের এ বিষয়ক গবেষণাগ্রন্থগুলো পড়ি নি। তাদের দলিলগুলো দেখি নি। আমি তা করার যোগ্যতাও রাখি না। আমি তাদের মতামতের উপর রিলাই করি। আর বলে রাখা ভাল এই লিখাটি শিয়া বা অন্য মতের অনুসারিদের জন্য লিখা হয় নি। মোটা দাগে যারা হানাফী ফিকহ অনুসরণ করেন তাদের জন্য লিখা।
ধন্যবাদ।
আমরা জানি রমজান মাসে কেউ যদি একটা ফরজ আদায় করে তাহলে 70 টা ফরজ আদায় করার সওয়াব পাওয়া যাবে এক টাকা দান করলে 70 টাকা ধানের সওয়াব পাওয়া যাবে।
কিন্তু আমার জানার বিষয় হল কেউ যদি রমজান মাসে একটি গুনাহ করে তাহলে তার গুনাহ কি 70 টি হবে..? না একটি গুনাহ ই হবে..?
দলিল প্রমাণসহ জানানোর অনুরোধ রইলো।
আমার জানা নাই ভাই। কোনো আলেমের সাথে কথা বলতে পারেন।
আপনার কথার সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। পবিত্র কুরআনে সন্ধ্যা লালীমার (অর্থাৎ সন্ধ্যা মধ্যবর্তী লাল আভা) কথাও বলা আছে। যেখানে আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট করে রাতের কথা বলে দিয়েছেন সেখানে প্রচলিত হাদিস দিয়ে ব্যাপারটিকে মানানো কি ঠিক? অথচ আল্লাহ তা’আলা স্বয়ং কুরআনে সবকিছু বিশ্লেষণ করেছেন, এটি আমার কথা নয়! এটি কুরআন এর কথাই। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুক এবং বেশী বেশী করে কুরআন এর বাংলা অর্থ বুঝে জীবন অবলম্বন করার তৌফিক দান করুক।
ভাইজান সম্ভবত শিয়া কিংবা হাদীস অস্বীকারকারী তথা কথিত আহলে কুরআন নামধারীদের দ্বারা প্রভাবিত।
কুরআনের অ্যাপ্লিকেশন কী হবে কিভাবে মানতে হবে সেটা হাদীসে বলা হয়েছে। হাদীসের ব্যাপারে আপনার বিশেষণটি খুবই ন্যাক্কারজনক। আপনি উল্লেখ করেছেন “প্রচলিত হাদীস”। আমরা বিশুদ্ধ বা সহীহ হাদীসের উপর আমল করি। রাসূলের আনুগত্য করা কুরআন দ্বারা ফরজ করা হয়েছে। হাদীসের অনুসরণের মাধ্যমে কুরআনের ফরজ আমরা পালন করি। তাই আপনি যদি হাদীস অস্বীকারকারী হন তাহলে আপনার সাথে আমাদের কথার মিল হবে না। তাই বিতর্ক করে লাভ নাই। আপনার শেষ বাক্যে বলেছেন কুরআন এর বাংলা অর্থ বুঝে জীবন অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন। কথাটার সাথে আরেকটু যুক্ত করে বলতে চাই “আল্লাহ আমাদেরকে কুরআনের অর্থ রাসূলের (সা) শিক্ষা ও হাদীস দ্বারা বুঝার তাওফিক দান করুন”। নইলে কুরআনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ যে যেভাবে ইচ্ছা করবে। স্বেচ্ছাচারীতার দুয়ার উন্মোচিত হবে। ইসলামকে ধ্বংসের জন্য এর চেয়ে বড় আক্রমন আর কী হতে পারে?
হাদীস অস্বীকারকারীদের জবাব হতে পারে মাওলানা আবদুর রহীম রচিত হাদীস সংকলনের ইতিহাস বইটি। বইয়ের রিভিউ লিখেছিলাম ব্লগে। সেখানে হাদীসের সংকলন ও সংরক্ষণের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া আছে। হাদীস অস্বীকারকারী যে মুসলিম থাকে না সে ব্যাপারেও স্পষ্ট কথা বলা আছে।
আসসালামু আলাইকুম, জী ভাই, আমার কথাও সেটা, ইয়াহুদী, খৃষ্টান কেন বলবেন, আপনারা যখন ডা. জাকির নায়েককে ইহুদি খ্রিস্টান এর দালাল বলেন তখন আমাদেরও অনেক কষ্ট লাগে।
আপনি আমার কোন লেখায় ডাক্তার জাকির নায়েককে ইহুদি খৃষ্টানদের দালাল বলতে দেখেছেন? একজনের দোষ আরেকজনের ঘাড়ে দেয়া কি ঠিক? অপবাদ দেয়ার শাস্তি কী জানা আছে তো?