Post updated on 15th August, 2022 at 06:34 am
সূচনা
“কুরআন তো পূর্ণাঙ্গ। ইসলামের যাবতীয় আদেশ-নিষেধ সব কিছু কুরআনে রয়েছে। কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ নিজে নিয়েছেন। অপর পক্ষে হাদীস সংকলিত হয়েছে নবীজির (সা) ইন্তেকালের ২০০-৩০০ বছর পরে। আসলেই কি হাদীসগুলো নবীজির (সা) কথা? এগুলো আসলেও হাদীস কিনা সেগুলো কিভাবে প্রমাণিত হবে? হাদীস সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ নেন নি। তাহলে হাদীসের অনুসরণ করা কি ঠিক হবে? যেহেতু এটা প্রমাণ করার সুযোগ নাই হাদীসগুলো আসলেই নবীজির (সা) কথা বা কাজ কিনা? আর নবীজির (সা) ইন্তেকালের ২০০ বছর পরে কিভাবে মুহাদ্দীসগণ বিচার করলেন কোনটি সত্যিই হাদীস আর কোনটি হাদীস নয়?”
সম্প্রতি আমার এক আত্মীয় বড় ভাইয়ের থেকে হাদীস বিষয়ক উপরের মত একটি প্রশ্ন পেলাম। তিনি জানার জন্য মূলত প্রশ্নটা করেছেন। এর আগে আরেকজন কাছের বড় ভাই একই টাইপের প্রশ্ন করেছিলেন। প্রশ্নগুলো তাদের মনে এমনি এমনি আসে নি। প্রশ্নের প্যাটার্ন শুনে একথা প্রায় নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, তথা-কথিত আহলে কুরআন গোষ্ঠী থেকে দাওয়াত (!) পেয়েছেন তারা। যারা ইনিয়ে-বিনিয়ে বা সরাসরি হাদীসকে অস্বীকার করে। আমরা যারা নামে মুসলিম, ইসলামের ইলম কালাম যাদের অন্তরে নাই বললেই চলে। আমাদের মত এমন মানুষদেরকেই বিশেষ ভাবে টার্গেট করে বিপথগামী এই ফিরকা।
তাদেরকে যদি বলা করা হয় কেবল কুরআনের নির্দেশনা মেনে ২ রাকাত নামাজ পড়ার জন্য! যেখানে হাদীসের নির্দেশনা ব্যতীত কেবল কুরআনকেই অনুসরণ করা হবে! এটা কি সম্ভব? কারণ কুরআনে তো নামাজ পড়ার বিস্তারিত নিয়ম ও বিবরত বিবৃত হয় নি। তখন তারা বলেন নামাজ পড়ার জ্ঞান নেয়া হবে “সিলসিলা” বা ধারাবাহিকতার উৎস থেকে। নবীজির (সা) মাধ্যমে সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্মের ধারাবাহিক আমলের মাধ্যমে তারা নামাজ পড়বেন। কী অদ্ভুত! তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম জাস্ট মানুষের মেমরির উপর নির্ভর করে নামাজ পড়তে পারেন। কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যেই হাদীস মুখস্থ ও লিখিত হয়ে আসছে সেগুলোর উপর নির্ভর করার কথা স্বীকার করতে পারেন না! আল্লাহর কাছে তাদের জন্য হিদায়াত কামনা করছি।
প্রেরণা
পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ভারত উপমহাদেশে হাদীস বিরোধী একটি গোষ্ঠীর জন্ম হয়। সাধারন মানুষের মনে হাদীস সম্পর্কে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে ইমান হারা করার এক অভিযান শুরু করে। তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের প্রতিরোধে প্রায় চার বছরের দীর্ঘ গবেষণার ফসল হিসাবে লিখিত হয় “হাদীস সংকলনের ইতিহাস”। কালজয়ী এই গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেন মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম। যা তৎতালীন বাংলা একাডেমি থেকে একাধিক বার প্রকাশিত হয়। বইয়ের ভূমিকা থেকে ধারনা করা যায় বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৫ সালে।
হাদীস বিরোধী গোষ্ঠীর থেকে নিজেদের হেফাজতের অন্যতম উদ্দেশ্যে পড়া শুরু করেছিলাম হাদীস সংকলনের ইতিহাস। ব্লগের পাঠকদের জন্য এর সার-সংক্ষেপ ও রিভিউ তুলে ধরছি। যেন সকলেই এরূপ চক্রান্ত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন। এই লেখার মাধ্যমে একজন ব্যক্তিও যদি সঠিক পথের উপর অটল থাকেন এবং বিপথগামী কোনো ভাই যদি সত্যের দিকে ফিরে আসার প্রেরণা লাভ করেন, তাহলেই লেখাটি স্বার্থক হবে।
হাদীস সংকলনের ইতিহাস – বই আলোচনা
৪৯২ পৃষ্ঠার গ্রন্থটি প্রায় ৪৫ টি অধ্যয়ে সন্নিবেশিত হয়েছে। প্রতিটি অধ্যায়ে রয়েছে এক বা একাধিক পরিচ্ছদ। বইটির বিষয়বস্তুকে আমরা কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে পারি।
- হাদীসের পরিচয়
- ওহীর পরিচয় ও হাদীসের উৎস
- ইসলামী জীবন-ব্যবস্থায় হাদীসের গুরুত্ব
- হাদীস সংরক্ষণ ও প্রচার
- গ্রন্থ আকারে হাদীসের সংকলন
- যুগে যুগে হাদীসের চর্চা
- সকল যুগের প্রখ্যাত হাদীসবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
- উল্লেখযোগ্য হাদীসগ্রন্থগুলোর পরিচয়
- হাদীস জালকরণ ও হাদীস সমালোচনার পদ্ধতি
- ভারত উপমহাদেশে হাদীস চর্চার ইতিহাস
উল্লেখিত পয়েন্টগুলোর কয়েকটি সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষেপে কিছু আলোকপাত করা হলো।
হাদীসের পরিচয়
নবীজির (সা) নিজস্ব বক্তব্য, তাঁর কাজ ও কোনো সাহাবী (রা) কর্তৃক কোনো কাজ হতে দেখে সেটাকে মৌন অনুমোদন দেয়ার যে বর্ণনা – তাকে হাদীস বলে। অর্থাৎ যার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি নবীজি (সা) কোনো কিছু বর্ণনা করেছেন। অথবা কোনো সাহাবী (রা) নবীজিকে (সা) কোনো কাজ করতে দেখেছেন। অথবা সাহাবীগণ (রা) কোনো কাজ করেছেন কিন্তু নবীজি (সা) সেটা দেখা বা জানার পর চুপ থেকে সমর্থন দিয়েছেন – এমন বর্ণনাগুলোই হাদীস হিসাবে পরিচিত। সাহাবীগণ (রা) নবীজিকে (সা) ছায়ার মত অনুসরণ করতেন। নবীজির (সা) হাঁটা, কথা বলা, খাবার খাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো সাহাবীগণ অবলোকন করতেন এবং হাদীস হিসাবে সংরক্ষণ করেছেন। নবীজির দিনলিপি নামক অপর একটি বই থেকে আমরা জানতে পারি নবীজির (সা) সারা দিন কিভাবে কাটতো?
এছাড়াও অনেক সময় সাহাবীগণের (রা) কিংবা তাবেয়ীগণের (রহ) কথা বা কাজকেও হাদীস হিসাবে উল্লেখ করা হয়। যেমন বলা হতে পারে এই কাজটি অমুক সাহাবীর (রা) সুন্নাহ। আমাদের নিকট সাহাবী (রা) ও তাবেয়ীগণের (রহ) কথা ও কাজগুলোও অনুসরণীয়। কেননা সাহাবীগণ (রা) সরাসরি নবীজির (সা) থেকে দ্বীন শিক্ষা করেছেন। এরপর তাবায়ীগণ (রহ) দ্বীন শিক্ষা করেছেন সাহাবীগণের (রা) থেকে।
আলোচ্য গ্রন্থে হাদীসের পরিচয়, শ্রেণীবিভাগ ইত্যাদি বিষয়ে প্রায় ৫০-৬০ পৃষ্ঠা ব্যাপী সুদীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। যা একজন সাধারণ পাঠককে হাদীস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিন্তু সামগ্রিক একটা ধারণা দিতে সক্ষম।
ওহীর পরিচয় ও হাদীসের উৎস
লেখক বইটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করেছেন যা হচ্ছে হাদীসের উৎস। এর আগে তিনি ওহী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। নবীজির (সা) কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সকল সংবাদ বা নির্দেশনা আসতো সেগুলোই ওহী। ওহী নাযিলের মাধ্যমে কুরআন মাজিদ নবীজির (সা) উপর অবতীর্ণ হয়। জিবরাঈল (আ) নবীজির (সা) নিকট ওহী নিয়ে আসতেন। ওহী বলতেই শুধু কুরআন নয়। বরং ইসলামের বিভিন্ন বিধি-বিধান সম্পর্কে নবীজিকে (সা) ওহীর মাধ্যমে অবহিত করা হত। এমন ওহীগুলোর প্রতিটি কুরআনের অন্তর্ভুক্ত নয়।
যেমনঃ নবীজি (সা) বলেছেনঃ “আমার নিকট জিবাঈল আসলেন এবং আমার সাহাবিগণকে উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর ও তাহলীল বলতে আদেশ করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিলেন“। এই যে তাকবীর ও তাহলীলের নির্দেশ নিয়ে জিবরাঈল (আ) আসলেন, এটি ওহীর অন্তর্ভুক্ত কিন্তু কুরআনের অন্তর্ভুক্ত নয়।
কুরআনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও প্রায়োগিক দিকগুলো ওহীর মাধ্যমে নবীজিকে (সা) জানানো হত। নবীজি (সা) সেগুলো সাহাবাগণকে (রা) বলতেন। সাহাবাগণ (রা) সেগুলো মনে রাখতেন, পালন করতেন এবং অপরের নিকট নির্দেশনাগুলো পৌঁছে দিতেন। দ্বীনের বিষয়গুলো আল্লাহ প্রদত্ত ওহীর মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে। তাই হাদীস তথা ওহীর উপর আমল করা আমাদের জন্য আবশ্যক।
ইসলামী জীবন-ব্যবস্থায় হাদীসের গুরুত্ব
ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় হাদীসের গুরুত্বের বিষয়টি বুঝানোর জন্য লেখক বেশ কিছু কুরআনের আয়াত উল্লেখ করেছেন। যেমনঃ সূরা নিসা আয়াত ৫৯, ৬৪-৬৫ ও ১০৫, সূরা আনফাল আয়াত ২০-২১, সূরা আলে ইমরান আয়াত ৩১-৩২, সূরা জুমআ আায়াত ২, সূরা নাহল আয়াত ৪৪, সূরা কিয়ামাহ ১৭-১৯, সূরা নূর ৬৩ প্রভৃতি। আগ্রহী পাঠকগণ এ আয়াতগুলোর তাফসীর সহ অধ্যয়ন করলে দেখতে পাবেন যে, আয়াতের মূল বক্তব্যই হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য করা এবং রাসূলের (সা) আনুগত্য করা। আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা এবং একই ভাবে রাসূলের (সা) নির্দেশও মেনে চলা।
আল্লাহর আদেশ নিষেধ আমরা কুরআনের মাধ্যমে সরাসরি মানতে পারি। কিন্তু রাসূলের (সা) নির্দেশ আমরা কিভাবে মানবো যদি হাদীসকে ছেড়ে দেই? (নাউযুবিল্লাহ) কুরআন মাজিদের আদেশ নিষেধ মেনে চলার মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার আদেশ কার্যকর করা সম্ভব। কিন্তু নবীজির (সা) হাদীসগুলোকে যদি আমরা অনুসরণ না করি তাহলে নবীজির (সা) আনুগত্য ও নবীজির (সা) আদেশ নিষেধ মানার যে হুকুম কুরআনে এসেছে, সেগুলো কিভাবে কার্যকর হবে?
বর্তমান সময়ের তথা-কথিত আহলে কুরআন গোষ্ঠী দাবী করে যে, ইসলামের বিধি-বিধান ও আমলের নিয়মকানুনগুলো এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের মাধ্যমে জানা যাবে। যেমন নামাজ পড়া, হজ্জ করা ইত্যাদির জন্য তারা নির্ভর করতে চায় আলেমদের উপর। যারা তাদের পূর্ববর্তী আলেমদের থেকে আমলগুলো শিখেছেন। এই বিষয়টি আমি এই বইতে পাই নি কিংবা আহলে কুরআনদের কোনো লেখায় পাই নি। এটি আমার সাথে শেয়ার করেছিলেন আমার সেই বড় ভাই। যিনি হাদীসের গুরুত্ব ও গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। আমি সেই ভাইকে আহলে কুরআন মনে করি না। বরং তিনি হয়ত অনুরূপ কোনো গোষ্ঠীর মাধ্যমে দাওয়াত পেয়েছেন।
তিনি এরকম উদাহরণ টেনে বলেছিলেন যে, “তুমি নামাজ পড়তে শিখেছ তোমার বাবার থেকে। তোমার বাবা শিখেছে তোমার দাদার থেকে। এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমলগুলো হয়ে আসছে।” এটা যদি আহলে কুরআনদের যুক্তি হয়ে থাকে তাহলে এর চেয়ে নির্বুদ্ধিতা আর কী হতে পারে? প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমলগুলো মেমোরাইজেশনের উপর তারা নির্ভর করতে পারেন। কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম হাদীস লিখিত আকারে যে এসেছে সেগুলোর উপর তারা নির্ভর করতে পারে না। শুধু নামাজের কথা নয় বুঝতে পারলাম। হজ্জের নিয়ম, যাকাতের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব, রিবা সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা এগুলো লিখিত আকারে না থাকলে কিভাবে আমল করা হবে? এটা কি সম্ভব যে একজন আলেম ব্যক্তি সকল বিধি বিধান তার পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে মুখস্থ এবং আত্মস্থ করবেন?
আল্লাহ আদেশ করেছেন তাঁর ও নবীজির (সা) আনুগত্য করতে। বিবাদ মীমাংসার জন্য নবীজির (সা) ফয়সালাকে মেনে নিতে। নবীজির (সা) অবর্তমানে আমরা বিবাদ ফয়সালা করব কিসের ভিত্তিতে? বিশুদ্ধ হাদীসের অনুসরণ করা ছাড়া রাসূলের (সা) আনুগত্য করার আর কী উপায় থাকতে পারে? এজন্য ইসলামী ফিকহের ইমামগণ সম্পূর্ণ একমত হয়ে ঘোষণা করেছেন যে, হাদীস অমান্যকারী হচ্ছে গুমরাহ, ইসলাম হতে বের হওয়া যাওয়া এবং কাফের।
হাদীস সংরক্ষণ ও প্রচার
ইসলামের প্রাথমিক সময়ে সাহাবীগণ (রা) কুরআনের পাশাপাশি নবীজির (সা) কথাগুলোকেও লিখে রাখতেন। অনেক ক্ষেত্রে হয়ত এমনও হত যে কুরআন ও হাদীস একই স্থানে লিখিত আকারে রয়েছে। সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে নবীজি (সা) সাহাবাগণকে (রা) হাদীস লিখে রাখতে সাময়িক ভাবে নিষেধ করেন। কিন্তু সে সময়ে হাদীস মুখস্থ রাখা এবং সেগুলো প্রচার করার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় নি।
তৎতাকালীন আরবদের স্মৃতিশক্তি ছিল খুবই প্রখর। বড় বড় কবিতা তারা একবার শুনেই মুখস্থ করে ফেলতে পারতেন। তাদের বংশ পরম্পরার পরিচয় এক নাগারে অনেক পুরুষ পর্যন্ত মুখস্থ বলতে পারতেন। এমন কি তাদের উট ও ঘোড়ার বংশ পরিচয় ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের ইতিহাস গড়গড় করে বলতে পারতেন। তাই হাদীস সংরক্ষণের প্রথম মাধ্যম ছিল মুখস্থ করা। সাহাবীগণ (রা) সব সময় নবীজিকে (সা) ঘিরে রাখতেন। নবীজির (সা) সকল কথা ও কাজ পর্যবেক্ষণ করতেন। অনেক সময় সাহাবীগণ পালা করে নবীজির (সা) মজলিশে আসতেন। যিনি এসেছেন তিনি পরবর্তীতে অনুপস্থিত সাহাবীগণের কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু সমূহ পৌঁছে দিতেন।
এক পর্যায়ে যখন কুরআন ও হাদীসের পার্থক্য সকলের কাছে স্পষ্ট হয়ে দেখা দিলো তখন সাহাবীগণ আবার হাদীস লিখে রাখা শুরু করলেন। যদিও লিখার চেয়ে তাদের কাছে মুখস্থ রাখাই বেশি সহজ ছিল। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) সহ অন্যান্য সাহাবীগণের বর্ণনা পাওয়া যায় যে তাঁরা নবীজির (সা) কথাগুলোকে মুখস্থ করে রাখতেন। এছাড়াও বিভিন্ন গোত্রের কাছে বা দূর দেশে পত্র মারফত নবীজির (সা) কথাগুলোকে পাঠানো হত। সেগুলোও হাদীসের অন্তর্ভুক্ত। হযরত আলী (রা) এর তলোয়ারের খাপের ভিতর একটি হাদীসের পান্ডুলিপি ছিল। সেটা তিনি সব সময় সঙ্গে রাখতেন।
এভাবে অনেক অনেক সাহাবীর কাছেই বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রচুর হাদীসের পান্ডুলিপি ছিল। যেমনঃ আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) রাসূলের (সা) কথাকে লিপিবদ্ধ করে যে সংকলন তৈরি করেছিলেন। নবীজি (সা) নিজেই তার নামকরণ করেছিলেন “সহিফায়ে সাদেকা”। এই সহিফায়ে সাদেকা থেকে পরবর্তীতে ফিকহের চারজন ইমামই দলিল পেশ করেছেন। মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ) গ্রন্থে উক্ত সহিফা সম্পূর্ণ যুক্ত হয়েছে।
সাহাবীদের (রা) পরবর্তী তাবেয়ীগণের (রহ) যুগেও হাদীস মুখস্থ করা এবং লিখে রাখার কাজ চলমান ছিল। এর পরের যুগেও হাদীস মুখস্থ ও লিখে রাখার মাধ্যমে চর্চা করা হত। হাফেজে হাদীসগণ মুখস্থ থাকা হাদীসগুলো বর্ণনা করার মাধ্যমে চর্চা করতেন। হাদীস সংরক্ষণের কাজ কোনো যুগেই কেবল মাত্র মুখস্থ করা বা শুধুমাত্র লিখার উপর একক ভাবে নির্ভরশীল ছিল না। খায়রুল কুরুনের সেই স্বর্ণ যুগে অনেক হাদীসে হাফেজ এমন ছিলেন যে, অনেক লোকই লিখিত হাদীসসমূহ হাফেজে হাদীসদের নিকট থেকে সংশোধন করে নিতেন। বলাই বাহুল্য সে সময়ে হাদীসগুলো লিখিত আকারে সংরক্ষণ করার কাজটি মোটেও সহজ ছিল না। পাথর, চামড়া, কাঠ, পশুর হাড় ইত্যাদিতে লিখা হত। এ সময় পর্যন্ত হাদীসগুলো কেবল ব্যক্তি উদ্যোগে বিচ্ছিন্ন ভাবে সংরক্ষিত করা হয়েছে। তখন পর্যন্ত গ্রন্থ আকারে হাদীস সংকলন শুরু হয় নি।
নবীজির (সা) ইন্তেকালের পর থেকে ২০০-৩০০ হিজরি পর্যন্ত প্রতিটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে কিভাবে হাদীসের সম্পদ সংরক্ষণ ও প্রচার হয়েছে। তা লেখক সবিস্তারে বইটিতে তুলে ধরেছেন।
গ্রন্থ আকারে হাদীসের সংকলন
কিছু কিছু করে গ্রন্থ আকারে হাদীস সংকলনের কাজ প্রথম হিজরি শতাব্দীতেই শুরু হয়েছিল। এক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন ইমাম মাকহুল, ইমাম শা’বী, ইমাম যুহরী, রুবাই ইবনে সুবাইহ, সাদ ইবনে আবু আরূবা প্রমুখ। হযরত উমর ইবনে আবদুল আযীয তাঁর খিলাফত কালে হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের ফরমান জারি করেছিলেন। খিলাফতের দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি ২ বছর ৫ মাস জীবিত ছিলেন। ১০১ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর জীবদ্দশায় খুব বেশি হাদীসের কিতাব সংকলিত না হলেও হাদীস সংকলনের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। যার ঢেউ পরবর্তী কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত জারি ছিল।
লেখক দ্বিতীয় হিজরি শতকের সংকলিত কয়েকটি গ্রন্থের উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো ইমাম আবু হানীফার (রহ) কিতাবুল আ’সার, ইমাম মালেকের (রহ) মুয়াত্তা, ইমাম সুফিয়ান সাওরির (রহ) আল জামে। এরপর তৃতীয় হিজরির হাদীস চর্চা ও সংকলনের উপর বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে। এ সময়ে ইসলামী সাম্রাজ্যের বিভিন্ন শহরে হাদীসের ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। হাফেজে হাদীসদের একেকটি দারসে হাজার হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত হতেন। ছাত্রগণ হাফেজে হাদীসগণের বর্ণিত হাদীসসমূহ লিখে নিতেন। এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হলেন ইমাম বুখারী (রহ), ইমাম মুসলিম (রহ), ইমাম নাসায়ী (রহ), ইমাম তিরমিজি (রহ) প্রমুখ।
সিহাহ সিত্তার কিতাবগুলো তৃতীয় হিজরি শতকে সংকলিত হয়। বইটিতে কিতাবগুলো সম্পর্কে তথ্যপূর্ণ বেশ কিছু পরিচ্ছদ বিদ্যমান। প্রতিটি কিতাবের হাদীসগুলো সংকলনের সময় যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় হিজরি শতকে ইলমে হাদীসের যে চর্চা ও উন্নয়ন সাধিত হয়। চতুর্থ হিজরি শতকে গিয়ে তা পূর্ণ পরিণতি লাভ করে। এ শতকের উল্লেখযোগ্য হাদীসবিদগণ হলেনঃ মুহাদ্দিস হাকেম নিশাপুরী (রহ), ইমাম দারে কুতনী (রহ), ইমাম ইবনে হাব্বান (রহ), ইমাম তাবারানী (রহ) প্রমুখ। চতুর্থ শতাব্দীর পরে গিয়ে সিহাহ সিত্তার বিভিন্ন কিতাব থেকে হাদীস সংকলন করার কাজ শুরু হয়। এছাড়াও পূর্ববর্তী সময়ে সংকলিত হাদীসের গ্রন্থ সমূহ থেকে সংকলিত হয় অনেক হাদীসের কিতাব।
হাদীস জালকরণ ও হাদীস সমালোচনার পদ্ধতি
ঐতিহাসিক ভাবে প্রমাণিত যে, হাদীস জালকরণের কাজটি শুরু করে খারেজী সম্প্রদায়। ৩৬ হিজরিতে সিফফীনের যুদ্ধে সন্ধিসূত্র নিয়ে হযরত আলী (রা) এর সমর্থকদের মাঝে তীব্র মতভেদ সৃষ্টি হয়। তারা যুদ্ধের সন্ধিকে মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং স্বতন্ত্র ধর্মীয় দলে রূপ নেয়। এই সম্প্রদায় তাদের সুবিধামত বিষয়ে ইচ্ছা মত নিজেদের কথাকে নবীজির (সা) হাদীস হিসাবে বর্ণনা করত। পরবর্তীতে বানোয়াট হাদীস তৈরি বা নিজেদের খেয়াল খুশি মত কথাবার্তাকে হাদীস বলে প্রচার করার নিকৃষ্ট কাজটি করে শীয়া সম্প্রদায়। তারা হযরত আলীর (রা) সম্মান বাড়ানোর জন্য ইচ্ছা মাফিক কথাকে হাদীস বলে প্রচার করত। পাশাপাশি হযরত মুয়াবিয়ার (রা) মর্যাদা লাঘবের জন্যও তারা নিজেদের রচিত কথাকে হাদীস বলে প্রচার করত।
অপর পক্ষে মুসলিমদের মধ্যে যারা দুর্বল ঈমানদার তারাও রাসূলের (সা) নামে অনেক হাদীস জাল করত। তারা হযরত আলীর (রা) সম্মান লাঘব এবং হযরত উমার (রা) ও হযরত আবু বকর (রা) এর অধিক মর্যাদা প্রমাণের জন্য হাদীসের নামে বহু জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিল।
হিজরি দ্বিতীয় শতকে হাদীস জালকরণের এক নতুন ফিতনা শুরু হয়েছিল। লোকেরা বিভিন্ন কিচ্ছা-কাহিনী ও মিথ্যা গল্প বা প্রচলিত কিংবদন্তীকে হাদীস হিসাবে বর্ণনা করত। এমন কি তারা এসব বানোয়াট কিচ্ছা কাহিনীর শুরুতে মিথ্যা সনদ (বর্ণনা সূত্রের পরম্পরা) জুড়ে দিত। তখন মূলত রাজনৈতিক মতের প্রতিষ্ঠা, হাদীস বেত্তা হিসাবে সমাজে মর্যাদা লাভ এবং ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এই নোংরা কাজগুলো কিছু নামধারী মুসলিম করে থাকতো। সমাজের বিভিন্ন প্রচলিত কথাকে হাদীস হিসাবে বর্ণনা করা হত এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার ব্যাপক প্রচার-প্রসারও হয়েছে। যেমনঃ “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ”, “হে মুহাম্মাদ (সা)! তোমাকে যদি সৃষ্টি করিতে না হত, তা হলে এই আকাশমন্ডল ও জগতই সৃষ্টি করতাম না”, “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করো”, “জ্ঞান অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশ পর্যন্ত যাও”, “বিদ্বানের কলমের কালি, শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র” ইত্যাদি প্রচলিত কথা আজও অবধি আমাদের সমাজে হাদীস হিসাবে বর্ণনা করা হয়। যদিও এর একটিও হাদীস বলে প্রমাণিত নয়।
এসব চক্রান্তের মাঝে আল্লাহর মেহেরবানীতে হাদীস সমালোচনার বিজ্ঞানের উৎপত্তি হয়। মুহাদ্দীসগণ হাদীস গ্রহন, সংকলন ও প্রচারের ক্ষেত্রে নানামুখী সতর্কতা ও শর্তারোপ করে হাদীসের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতেন। একদিকে যেমন মুসলিম সমাজের একাংশ হাদীসের নামে জালিয়াতিতে লিপ্ত। অপর দিকে প্রকৃত মুসলিমগণ তখন কোনো কথাকে হাদীস হিসাবে গ্রহনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতন হয়ে ওঠেন। কেবল মাত্র হাদীসের শুরুতে সনদ বা বর্ণনা সূত্র উল্লেখ করলেই তাকে হাদীস হিসাবে গ্রহন করা হত না। বরং তারা প্রত্যেক বর্ণনাকারীর ব্যক্তি চরিত্র, তাক্বওয়া, ইলম, স্মরণশক্তি এবং প্রতিটি বর্ণনাকারীর পারস্পরিক সাক্ষাতের সম্ভাবনা ইত্যাদি বিষয়ে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে খোঁজ খবর করতেন।
সে সময়ে হাদীস সমালোচনা ও এর বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের বিভিন্ন পদ্ধতির আবিষ্কার হয়। জাল হাদীস চিহ্নিত করার জন্য মুহাদ্দীসগণ বিভিন্ন লক্ষ্মণ উল্লেখ করেছেন। যেগুলো বিদ্যমান থাকলে অভিজ্ঞ মুহাদ্দীস সহজেই বুঝতে পারেন যে বর্ণিত কথাটি হাদীস নয়। বরং জাল ও বানোয়াট কথা। হাদীস সমালোচনার একটি বিশেষ দিক হচ্ছে হাদীসের সনদ পরীক্ষা। হাদীসের বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত জানার এ জ্ঞানের শাখাটি “ইলমে আসমাউর রিজাল” বা “রিজাল শাস্ত্র” নামে পরিচিত। ইলমের এই শাখায় হাদীস বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়।
রিজাল শাস্ত্রের প্রয়োজনীয়তার জন্য একটি মজার ঘটনা লেখক উল্লেখ করেছেন। ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে হাকেমকে এক ব্যক্তি একটি হাদীস শোনালো। ইমাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন সে কার থেকে হাদীসটি শুনেছে? সে উত্তরে বললো “আবদ ইবনে হুমাইদের থেকে অমুক সনে আমি উক্ত হাদীসটি শুনেছি”। তখন ইমাম আবদুল্লাহ তাঁর সামনে সমবেত ছাত্রদের উদ্দেশ্য করে বললেনঃ “দেখ! এই লোকটির মতে আবদ ইবনে হুমাইদ তাঁর মৃত্যুর সাত বছর পরে এই ব্যক্তির নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন”। ইমাম আবদুল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তিটি যে সনের উল্লেখ করেছিল তার ৭ বছর আগেই আবদ ইবনে হুমাইদ ইন্তেকাল করেছিলেন। এর মাধ্যমেই ইমাম নিশ্চিত হয়েছিলেন যে বর্ণনাকারী মিথ্যা কথাকে হাদীস হিসাবে বর্ণনা করেছে। এরকম বিভিন্ন উপায়ে অভিজ্ঞ মুহাদ্দীসগণ হাদীসের শুদ্ধতা যাচাই করতে সক্ষম।
তাই মুহাদ্দীসগণ যেসকল হাদীসকে বিশুদ্ধ বলেছেন সেগুলো মেনে নিতে কোনো মুসলিমের দ্বিধা থাকতে পারে না। বহু বছর আগে মীমাংসিত বিষয় নিয়ে পথভ্রষ্ট লোকেরা এখনো পড়ে আছে। আল্লাহ তাদেরকে হেদায়েত দান করুন। আমীন।
বই সম্পর্কে কিছু তথ্য
নামঃ হাদীস সংকলনের ইতিহাস
লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম
প্রকাশকঃ খায়রুন প্রকাশনী
প্রকাশকালঃ প্রথম প্রকাশ – ১৯৭০, ১৬তম মুদ্রণ – জুলাই ২০১৯। (বাংলা একাডেমি থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় সম্ভবত ১৯৬৫ সালে)
বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪৯২
বইয়ে মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৬০ টাকা
রেফারেন্স গ্রন্থসংখ্যাঃ ১৭৩টি
গবেষণাকালঃ ৪ বছর গভীর গবেষণার পর বইটি লিখা হয়
প্রাপ্তিস্থানঃ অনলাইন, অফলাইন সকল জায়গায়ই পাওয়া যায় বইটি। নিলক্ষেত, কাটাবন সহ যে কোনো ইসলামী বইয়ের দোকানে পাওয়া যেতে পারে।
মন্তব্য
বইটিকে মনে হয়েছে একটি বিরাটাকার থিসিস পেপার। অনার্স বা মাস্টার্সে যখন ছোটখাটো থিসিস পেপার পড়তাম তখনকার মত একটা ফ্রেভার পেয়েছি। এমন তথ্যবহুল একটি বই বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি সম্পদ। বইটি ইনশাআল্লাহ আগামীতে আরো পড়বো। একবার পড়ে এই বই থেকে খুব অল্প ইলমই হাসিল করতে পেরেছি। যারা মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত, তারা ইনশাআল্লাহ বইটি থেকে আরো বেশি উপকৃত হবেন। কেউ যদি খোলা মন নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হেদায়েত পাওয়ার উদ্দেশ্যে বইটি পড়েন। ইনশাআল্লাহ তিনি হেদায়েত পাবেন, তার মনের সংশয়গুলো ইনশাআল্লাহ কেটে যাবে।
বইটি ষাটের দশকে লিখা। স্বাভাবিক ভাবেই এটি সাধু ভাষা রীতি ব্যবহার করে লিখা হয়েছে। তাই অনেক পাঠকের জন্য এটি সুখপাঠ্য নাও হতে পারে। কিন্তু কষ্ট করে ৫০-৬০ পৃষ্ঠা পড়ে ফেললে আশা করা যায় বাকিটুকু শেষ করতে বেগ পেতে হবে না। বইটিতে প্রচুর তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে। তাই এর পৃষ্ঠা সংখ্যা হয়ে গেছে প্রায় ৫০০। পাশাপাশি টাইপিং মিসটেক রয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি কোনো সুযোগ্য আলেমে দ্বীনের হাতে বইটির আধুনিকায়ন ও সংক্ষেপনের দায়িত্ব দেন। তাহলে হয়ত বর্তমান সময়ের পাঠকগণ আরো বেশি উপকৃত হতে পারবেন। বর্তমানে প্রকাশিত হওয়া ইসলামী বইগুলোর ছাপা, কাগজ, প্রচ্ছদ ইত্যাদির তুলনায় বইটির বাহ্যিক চেহারা বেশ মলিন। যদি এদিকটাকেও আগামীতে খেয়াল রাখা যায় তাহলে আরো ভাল হবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ এই বইটির লেখক, প্রকাশক এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। এই বইয়ের উসিলায় আল্লাহ তাদেরকে নাজাত দিন। আমরা যারা বইটি পড়ে হাদীস সম্পর্কে জানলাম এবং হাদীসের প্রতি আরো দৃঢ় ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হলাম; আল্লাহ তাদেরকেও নাজাত দিন। আল্লাহ আমাদের সকলকে হক্বের উপর অবিচল রাখুন। যেই ভাইয়েরা বুঝে-না বুঝে বিপথগামী হয়েছেন, আল্লাহ তাদেরকে পুণরায় হেদায়েত দান করুন। আমীন।
লেখা কপি করা যায় না কেন? আর মুসলিম ডে অ্যাপের আপডেট কবে নাগাদ আসতে পারে (widget) ?
লেখা কপি করার অপশন নানা কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। কপি না করে তাই কাইন্ডলি ব্লগের লিংক শেয়ার করুন। যেন অন্যান্যরা মূল স্থান থেকেই এটি পড়তে পারেন।
উইজেট কবে আসবে বলা যাচ্ছে না। এখনো এটা আমাদের প্রায়োরিটি লিস্টে নাই।
জাজাকাল্লাহ!! আপনাদের এই উদ্দেশ্য কে আমি সম্মান জানাই। আপনার কপি না করার আইডিয়া টা কে-ও লাইক দিলাম। আসসালামু-আলাইকুম।।
How can I get the printed copy?
You can search at nearby Islamic Library (or Nilkhet, Katabon, Banglabazar or any online shop)